শিরোনাম :
ফুটবল বিশ্বকে মাতাতে অপেক্ষায় ‘লাইব’
ডিসিনিউজ ।। ডেক্স
গত এপ্রিলে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ড্রয়ের দিনেই পৃথিবীবাসীর সামনে উন্মুক্ত করা হয়েছিল লাইবকে।
চার বছরের প্রতীক্ষার পর আবারও ফিরে আসছে ফিফা বিশ্বকাপ। গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত প্রতিযোগিতাটি শুরু হতে আর মাস চারেক বাকি। তবে সবার গায়ে ইতোমধ্যে বিশ্বকাপের আঁচ লাগতে শুরু করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে বসবে বিশ্বকাপের পরবর্তী অর্থাৎ ২২তম আসর। ২০০২ সালের পর আবারও এশিয়া মহাদেশে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ নিয়ে কারোরই আগ্রহের কমতি নেই।
ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজন থেকে শুরু করে অংশগ্রহণকারী দল বিভিন্ন দল-খেলোয়াড়রাই থাকে ফুটবলপ্রেমীদের আকর্শণের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে ফুটবলের বিশ্বযজ্ঞে দর্শকদের আগ্রহ থাকে আরও একটি চরিত্রকে ঘিরে, সেটি হচ্ছে মাসকট। এখন পর্যন্ত ২১ বার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হলেও প্রথম ৭টি আসরে কোনো মাসকট ব্যবহৃত হয়নি। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডে আয়োজিত বিশ্বকাপে সর্বপ্রথম কোনো মাসকটের সঙ্গে ফুটবল বিশ্বের সাক্ষাৎ হয়।
মাসকট মূলত বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশের একটি প্রতিচ্ছবি। এটি হতে পারে কোনো প্রাণী, হতে পারে কোনো মানুষ, আবার এমনকি হতে পারে আয়োজক দেশের জন্য সৌভাগ্যের কোনো প্রতীকও। রংবেরঙের সাজ এবং বেশভূষায় আবির্ভূত মাসকট নিজের প্রাণোচ্ছলতার মাধ্যমে বাস্তব এবং কাল্পনিক জগতের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করে স্বাগতিক দেশের ঐতিহ্য, স্বকীয়তা থেকে শুরু করে অজানা অনেক কিছু বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে থাকে।
এ কারণে বর্তমান সময়ে যেকোনো খেলার বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক দেশের প্রতিনিধিস্বরূপ মাসকটের উপস্থিতি দেখা যায়। বিশ্বকাপ ফুটবলও তার ব্যতিক্রম না। ১৯৬৬ সালে প্রথমবার আবির্ভাবের পরই মাসকটের প্রচলন বেশ সাড়া জাগায়। এরপর থেকে প্রতিটি বিশ্বকাপেই ছিল মাসকটের সরব উপস্থিতি, যাদের দেখে দর্শক-সমর্থকরা নির্ভেজাল আনন্দ উপভোগ করে থাকে।
এখন পর্যন্ত ফিফা বিশ্বকাপে ১৪টি মাসকটের সঙ্গে ফুটবলপ্রেমীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। আসন্ন কাতার বিশ্বকাপেও তাদের সঙ্গী হবে আরেকটি চরিত্র, যার নাম লাইব। গত এপ্রিলে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ড্রয়ের দিনেই পৃথিবীবাসীর সামনে উন্মুক্ত করা হয়েছিল লাইবকে।
লাইবের আদ্যোপান্ত
সাদা রঙের কাতারি পোশাক পরিহিত এক কিশোরের আদলে লাইবকে তৈরি করা হয়েছে। লাইব মূলত একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ দারুণ দক্ষ খেলোয়াড়। আরব্য মানুষের মতো পোশাক পরিহিত লাইব নিজের সঙ্গে বল নিয়ে সবার সামনে উপস্থিত হয়। ফুটবল বিশ্বের কাছে লাইবের এমন আবির্ভাব ছিল একই সঙ্গে মজার এবং আদুরে। অনেকে তো লাইবের সঙ্গে বিখ্যাত কার্টুন চরিত্রের সঙ্গেও তুলনা করেছেন।
লাইবকে প্রাণচঞ্চল ও সাহসী এক চরিত্র হিসেবে অভিহিত করেছে ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা। কাতার বিশ্বকাপের এ চরিত্রটি এমন এক প্যারালাল জগত থেকে এসেছে, যেখানে অন্যান্য অনেক মাসকটেরও বসবাস রয়েছে। লাইব সবাইকে নিজেদের ওপর ভরসা এবং বিশ্বাস রাখতে শেখায়। সে সবার মাঝে ফুটবলের আনন্দ নিয়ে আসবে।
অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়, মজাদার এবং কৌতূহলী লাইব ইতোপূর্বে আয়োজিত সব বিশ্বকাপে যোগদান করে ফুটবল ইতিহাসের বিশেষ কিছু মুহুর্তেও অবদান রেখেছে। পাশাপাশি বেশ কিছু ঐতিহাসিক গোলেরও সাক্ষী এ চরিত্রটি।
কাতার বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা খালিদ আলি আল-মৌলবী লাইব সম্পর্কে বলেন, প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে ফিফা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ আয়োজনের মাসকট হিসেবে লাইবকে সবার সামনে উন্মুক্ত করে আমরা ভীষণ আনন্দিত। সে মাসকটভার্স থেকে এসেছে। মাসকটভার্স এমন একটি জায়গা যা বর্ণনাতীত। ওই কল্পনার জগতে নিয়ে ভাবতে এবং ঘুরে আমরা সবাইকে উৎসাহিত করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিশ্চিত, লাইবের মতো আনন্দদায়ক চরিত্রকে ফুটবলপ্রেমীরা মন থেকে ভালোবাসবে। মজাদার এ চরিত্রটি তরুণ থেকে বয়স্ক, সব বয়সের অনুরাগীদের জন্যে কাতার বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা অনন্য করে তুলবে।
ফিফা বিশ্বকাপের ২২তম আসরের এ মজাদার চরিত্রটি কাতারের সর্বত্র উপস্থিত থাকবে। সে যেখানে যাবে সেখানেই সবার মধ্যে আনন্দ এবং আত্মবিশ্বাসের সুবাতাস ছড়িয়ে দেবে। কাতারে ফুটবলের অমৃত সুধা পান করতে আসা সব পিপাসার্ত অনুরাগীদের আনন্দের সঙ্গে স্বাগত জানিয়ে বরণ করে নেবে।