শিরোনাম :
বর্তমান সময়ে সমবায় ভাবনা শীর্ষক মতবিনিময় সভা
ডিসিনিউজ, ঢাকা:
আজ বর্তমান সময়ে সমবায় ভাবনা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকার সিবিসিবি সেন্টারে। দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস্ (কাককো) লি: আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ৪১টি সমবায় সমিতির ১২৫ জন সমবায়ী নেতা অংশ নিয়েছেন।
সভার শুরুতে কাককোর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও বলেন, ‘কীভাবে সমবায়ের চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করা যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অনেক সমবায় সমিতি অনুৎপাদনশীল খাতে ঋণ দিচ্ছে, তারা আসবাবপত্র কেনার জন্য ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু তারা যদি কলা চাষের জন্য ঋণ দিতো, যা উৎপাদনশীল খাত, তাহলে সমবায় সমিতিগুলোতে এখন এত বেশি পরিমাণে ঋণখেলাপি হতো না। তাই সমবায় সমিতিগুলোকে আয় বর্ধনমূলক ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে জোর হবে।
তিনি আরো বলেন, সমবায়ের মাধ্যমে আমরা অনেক ভালো কাজ করি, কিন্তু জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পাই না। জাতীয় কর্মসূচিতে আমাদের অংশ নিতে হবে। তাহলে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পাওয়া যাবে। শুধু চেয়ারের জন্য সমিতির নেতৃত্বে না এসে, দায়বদ্ধতার ও সেবা করার মনোভাব নিয়ে নেতৃত্বে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা বলেন, সমবায়ী নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা থাকবে, প্রতি হিংসা নয়। তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষায়, চিকিৎসায় খ্রিষ্টানদের অবদান অনেক। আমরা ঢাকার ফার্মগেটে একটি ভালো স্কুল করার উদ্যোগ নিতে পারি। এখানে ছেলেদের জন্য কোনো ভালো স্কুল নাই। তিনি মনে করেন, স্থানীয়ভাবে যেসব বিষয়গুলোর চাহিদা আছে সেই অনুসারে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া যায়।
ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি হেমন্ত কোড়াইয়া তার বক্তব্যে বলেন, সমবায় সমিতিগুলোর নতুন নতুন প্রডাক্ট চালু করার ক্ষেত্রে অন্য সমিতিকে অনুকরণ না করে, স্থানীয়ভাবে সমিতির সদস্যদের যেসব প্রডাক্ট প্রয়োজন, সেসব প্রডাক্ট তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, ঢাকা ক্রেডিট ১০টি এটিএম বুথের মাধ্যমে এটিএম সেবা চালু করেছে। অন্যান্য সমিতি চাইলে ঢাকা ক্রেডিটের এই সেবা নিতে পারে।
দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস্ (কাককো) লি: এর চ্যাপলেইন ড. ফাদার লিটন হিউবার্ট গমেজ, সিএসসি বলেন, সমিতির দরিদ্র সদস্যরা কীভাবে উপকৃত হবে সেই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সমিতির কর্মকর্তারা সদস্যদের শিক্ষা দিবেন কীভাবে তারা ব্যয় ব্যবস্থাপনা করতে পারে। ঋণ নিয়ে সদস্যরা যেন সঠিকভাবে খরচ করতে পারে এই বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে।
দুপুরের আহারের পর অনুষ্ঠিত হয় কাককোর ৯ম বার্ষিক সাধারণ সভা। এখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগষ্টিন পিউরীফিকেশন। তিনি বলেন, ‘কাককো যে লক্ষে সৃষ্টি হয়েছিলো আমি মনে করি সেই উদ্দেশ্য নিয়েই তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করছে। আমি এর সমর্থন করি। কাককোর সাধারণ বার্ষিক সভা সফলতা কামনা করি।;
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা সমবায়ের যুগ্ম-নিবন্ধক মিজানুর রহমান, ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস, ট্রেজারর পিটার রতন কোড়াইয়া আনন্দ ফিলিপ পালমা, হাউজিং সোসাইটির সেক্রেটারি ইম্মানুয়েল বাপ্পি মন্ডল, কাককোর ভাই-চেয়ারম্যান অনিল লিও কস্তা ১২৫ জন।
২০০৭ সনে ঋণ খেলাপী প্রতিরোধে এবং সুষ্ঠু ঋণ ব্যবস্থাপনার আকাংখা থেকে খ্রিষ্টান সমবায় সমিতিসমূহের সমন্বয় পরিষদ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সনের ১৯ জুলাই সমবায় অধিদপ্তরে নিবন্ধনকালে সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস্ (কাককো) লি: রাখা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কাককো এর কর্মএলাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিভাগ পর্যন্ত। পর্যায়ক্রমে এর কর্মএলাকা বৃদ্ধি করে সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী করার বিষয়টি এখন পক্রিয়াধীন রয়েছে।
বর্তমান সময়ে সমবায় ভাবনা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, তাদের সমবায় সমিতিগুলোর জন্য ঋণখেলাপি বড় একটি সমস্যা। তারা চান কাককো কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদান করুক। অংশগ্রহণকারীরা আরো বলেন, বর্তমানে যারা সমবায়ে নেতৃত্বে আসছেন, তাদেরও আগে প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা করে তারপর নেতৃত্বে আসা দরকার।