শিরোনাম :
বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির দরদী সাধক ফাদার গারেল্লো আর নেই!
চলে গেলেন বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির একজন দরদী সাধক না ফেরার দেশে। ফাদার সিলভানো গারেল্লো এসএক্স বিদেশী মিশনারী হয়েও মনে-প্রাণে একজন বাঙালি হয়েছিলেন বাংলার মাটিতে।
আজ (১৮ জানুয়ারি) আনুমানিক ২টার (মধ্য রাতের পর) সময় ফাদার সিলভানো গারেল্লো এসএক্স ঢাকার মোহাম্মদপুর জেভেরিয়ান হাউজে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর।
ফাদার গারেল্লো একজন বিদেশী জেভেরিয়ান সম্প্রদায়ে মিশনারী যাজক। মিশনারী কাজে তিনি বাংলাদেশে এসে বাংলার মাটির সাথে মিশে গিয়েছিলেন। তিনি বাংলার মাটিতে দীর্ঘদিন ধরে সেবা কাজের বীজ বুনে গেছেন।
ফাদার গারেল্লো একজন সুপরিচিত লেখক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। একজন বিদেশী মিশনারী হয়েও তিনি বাংলায় হয়ে উঠেছেন সরস প্রাণ একজন লেখক। বাংলা ভাষায় অসংখ্য বই তিনি লিখেছেন, সম্পাদনা এবং অনুবাদও করেছেন সমান তালে।
ফাদার গারেল্লো সম্পর্কে তেজগাঁও চার্চের ফাদার কমল কোড়াইয়া (সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর সাবেক সম্পাদক) বলেন, ফাদার গারেল্লোর বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতির উপর একটা আলাদা দরদ ছিল। তিনি বাংলায় অসংখ্য বই রচনা, সম্পাদন এবং অনুবাদ করেছেন। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতির উপর তাঁর দরদ ছিল অসীম। তিনি বিদেশী হয়েও অনেক সুন্দর বাংলা লিখতেন এবং বলতেন।
ফাদার কমল জানান, ফাদার গারেল্লোর একটা ভালো দিক ছিল, ‘তিনি সবাইকে বই পড়তে এবং কিনতে বলতেন ও উৎসাহিত করতেন।’ এছাড়াও তিনি খ্রিস্টান সমাজসহ এর বাইরেও অনেক কাজ করেছেন। তিনি সবসময় আন্তঃধর্মীয় সংলাপের জন্য জোর দিয়ে গেছেন।
ফাদার গারেল্লো শিশুদের জন্যও ছিলেন একজন প্রেরণার উৎস বলে মন্তব্য করেন ফাদার কমল। তিনি বলেন, ‘ফাদার গারেল্লো শিশুদের নিয়ে কাজ করেছেন মন-প্রাণ উজার করে। তিনি যখন ময়মানসিংহের নলুয়াছড়িতে ছিলেন, তখন তিনি শিশুদের নিয়ে বিভিন্নভাবে নৈতিক, সাংস্কৃতিক শিক্ষা বিস্তারে চেষ্টা করে গেছেন এবং সফলও হয়েছেন।’
জ্ঞান সাধক ফাদার গারেল্লোকে সমাহিত করা হবে খুলনার বয়রা জেভেরিয়ান হাউজে। তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করা হবে আগামীকাল ১৯ জানুয়ারি খুলনার সোনাডাঙ্গা কাথিড্রাল চার্চে। খুলনার বিশপ জেমস্ রমেন বৈরাগী মহতপ্রাণ ফাদার গারেল্লো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করবেন বিকাল ৪টায়। এরপর তাঁকে নিজ যাজক সম্প্রদায়ের সমাধিস্থানে সমাধিস্থ করা হবে।
ফাদার গারেল্লো ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৩৮ সালে ইতালীতে জন্মগ্রহণ করেন। ২৫ অক্টোবর, ১৯৬৪ সালে তিনি খ্রিস্টাবাণী প্রচারের জন্য যাজকাভিষেক গ্রহণ করেন। এরপর তিনি বাণী প্রচারের জন্য নিজ দেশ এবং পরিবারের মায়া ত্যাগ করে বেরিয়ে পড়েন ভিনদেশে। ১৯৭০ সালে যুদ্ধপূর্বকালীন সময়ে তিনি বাংলাদেশে মিশনারী হিসেবে আসেন এবং সেবা জীবনের প্রায় পুরো সময়টাই এদেশে কাটিয়ে দে।
আরবি/আরপি/১৮ জানুয়ারি, ২০১৭
পরবর্তী আয়োজনে থাকছে ফাদার সিলভানো গারেল্লোর তথ্যবহুল পরিক্রমা। চোখ রাখুন ডিসিনিউজবিডি ডটকমে