এই ধরনের গেইম বাংলাদেশেও খেলা হচ্ছে বলে তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে তা থেকে সন্তানদের বিরত রাখতে অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়ানোর উপরও জোর দিয়েছে দেশের ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
‘ব্লু হোয়েল’ গেইমে বাংলাদেশেও আত্মহত্যার খবর গণমাধ্যমে আসার পর সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন বিটিআরসিকে।
মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিটিআরসি অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর আসক্তিমূলক, জীবনহানিকর গেইম সংক্রান্ত লিংক বা ওয়েব ঠিকানা এবং অ্যাপ-এর তথ্য অফিস সময়ে ২৮৭২ নম্বরে ফোন করে জানাতে বলে।
এতে বলা হয়, “বিভিন্ন মাধ্যমে থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং কমিশনের কারিগরি বিষয়াবলী বিশ্লেষণ করে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ওয়েব লিংক/এড্রেস/গ্রুপ এবং অ্যাপস এর মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন ক্ষতিকর আসক্তিমূলক, জীবন হানিকর গেইম পরিচালিত হচ্ছে।”
এ থেকে শিক্ষার্থী, কিশোর-কিশোরী এবং তরুন-তরুণীরা রক্ষায় ‘নিরাপদ ইন্টারনেট’ ব্যবহারে জনসাধারণের সচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন বলে মত জানায় বিটিআরসি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একদিন আগে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে ‘ব্লু হোয়েল গেইম’ লিংক বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এর উপর সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।
ব্লু হোয়েল গেইম তৈরিকারীদের লক্ষ্য বিষাদগ্রস্ত তরুণ-তরুণীরা
ভারতে এই গেইমটি খেলে কয়েকজনের আত্মহত্যার খবর আসার পর দেশটির সরকার ‘ব্লু হোয়েল’র মতো বিপজ্জনক অনলাইন গেইমের লিঙ্ক বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল।
‘ব্লু হোয়েল’ বা ‘ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ’ একটি অনলাইন গেইম, যা অংশগ্রহণকারীকে মৃত্যুর পথে নিয়ে যায়।
এই গেইমে খেলোয়াড়দের সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিভিন্ন কাজ করতে দেওয়া হয়, শুরুতে হালকা কিছু কাজ দেওয়া হলেও ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর সব কাজ দেওয়া হয়। সব শেষে চূড়ান্ত কাজ হিসেবে খেলোয়াড়কে আত্মহত্যা করতে বলা হয়।
২০১৩ সালে রাশিয়ায় ‘এফ৫৭’ নামে যাত্রা শুরু করে গেইমটি। নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ফিলিপ বুদেইকিন নামের এক সাবেক মনোবিদ্যা শিক্ষার্থী এই গেইম তৈরি করেন।
তার দাবি, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজে যাদের কোনো মূল্য নেই বলে তিনি বিবেচনা করেন তাদেরকে আত্মহত্যার দিকে প্ররোচিত করার মাধ্যমে সমাজকে ‘পরিষ্কার’ করা।
এই গেইম খেলে ১৬ কিশোরীর আত্মহত্যার পর বুদেইকিনকে রাশিয়ায় আটক করা হয়।