শিরোনাম :
ভোগান্তির অপর নাম চিকুনগুনিয়া
বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাম্প্রতিক একটি জরিপে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে এবার যেরকম হারে চিকনগুনিয়া রোগ ছড়িয়েছে, তা সাম্প্রতিককালে আর দেখা যায়নি।
এই রোগটি বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকে সনাক্ত হলেও, এবছরই সবচেয়ে বেশি প্রকোপ দেখা যাচ্ছে।
এই রোগে প্রচণ্ড জ্বর থেকে ওঠার পরেও শরীরে ব্যথা থেকে যায় দীর্ঘদিন। সাধারণ মানুষের মধ্যে কতটা ভোগান্তির কারণ হয়েছে চিকুনগুনিয়া?
চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নানা ভোগান্তিতে পড়েছেন সমাজের নানা শ্রেনী পেশার মানুষ।
ঢাকার সদরঘাটের শমুয়েল বৈরাগী জানান “১৫ দিন ঠিকমত খেতেই পারিনি, এরপর একটু চলাফেরা করতে পারলেও অফিস শুরু করতে পেরেছি আরও ১৫ দিন পরে। ”
সেবিকা ময়না মন্ডল বলেন ”আামরা স্বামী-স্ত্রী এক সাথেই এই জ্বরে অসুস্থ হই, পরিবারে রান্নায় অনেক সমস্যা হচ্ছিলো, আমরা দুজনই এক সপ্তাহ অফিস করতে পারিনি। এরপর গ্রাম থেকে বেড়াতে আসা ভাইয়ের এক মেয়েও আমার বাসায় এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এই রোগের শিকার হওয়ার পর অনেকদিন নিজের পড়াশুনা করতে পারেননি নর্দান বিশ্ববিদ্যালেয়ের ছাত্র হিলারি সরকার, দুটো পরীক্ষাতেও অংশগ্রহন করতে পারেননি এ সময়। তিনি আরও বলেন “হাতে পায়ে এখনও ব্যাথা আছে, ডাক্তার বলেছে এ ব্যাতা এখনও এক মাস থাকতে পারে।
একদিন সকালে হঠাৎ করেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিকোলাস সরকার বুঝতে পারেন, তিনি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। পনেরো দিন অসুস্থ থাকার পর, এখনো তিনি পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি।
তিনি বলছেন, ”একদিন সকালে উঠে বুঝতে পারি, আমার প্রচণ্ড জ্বর এসেছে, শরীরে ব্যথা। এরপর ১৫দিন বিছানায় পড়ে থাকতে হয়েছে। পরে মুখে র্যা শ উঠেছে। এখনো শরীরে অনেক ব্যথা, হাটুতে ব্যথা হয়।”
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু রোগের বাহন এডিস মশাই চিকুনগুনিয়া রোগেরও কারণ। এখনো এই রোগের পুরোপুরি প্রতিকার আবিষ্কৃত হয়নি।
চিকিৎসকদের ধারণা, বৃষ্টি যতদিন থাকবে, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই রোগের প্রকোপ থাকতে পারে। ততদিন মশা থেকে সতর্কতাই, যেমন মশারি বা ওষুধ ব্যবহার করাই হবে এ থেকে রক্ষার সবচেয়ে ভালো উপায়।
বৃষ্টির পর যাতে পানি জমে থাকতে না পারে, যেখানে মশা ডিম পাড়তে পারে, সেদিকেও নজর দিতে তারা পরামর্শ দিয়েছেন।
আরবি/আরপি/১৩ জুলাই, ২০১৭