শিরোনাম :
মন্ডলীর সেবাতে খ্রিষ্টান ক্রেডিট ইউনিয়নগুলোর অংশগ্রহণ
|| পংকজ গিলবার্ট কস্তা ||
সমবায় বা ক্রেডিট ইউনিয়ন হচ্ছে সদস্যদের জন্য, সদস্যদের দ্বারা এবং সদস্যদের কল্যাণে পরিচালিত আর্থসামাজিক সংগঠন। সমবায় মূলত কাজ করে জনগণ তথা এর সদস্যদেরকে নিয়ে। সদস্যরাই হচ্ছে সমবায়ের প্রধানতম নিয়ামক।
সমবায় একটি আন্দোলন। এটি বিশ্বস্বীকৃত একটি জনবান্ধব অর্থনৈতিক কাঠামো। এটি একটি জনমুখী চেতনা ও আদর্শ। এটি এমন একটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান যা দুর্বলকে সবল হতে সাহায্য করে। সমবায় আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়ে দেশের লক্ষ-কোটি মানুষের অর্থনৈতিক চাকা সচল রয়েছে। সমবায় আন্দোলন দারিদ্র বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশের বিপর্যয় প্রতিরোধ, উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে জোরালোভাবে কাজ করছে। এই আন্দোলন জন্ম থেকে মৃত্যু সব সময়ই বন্ধুর মতো পাশে থাকছে মানুষের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন, এই পরিপেক্ষিতে গণমুখী সমবায় আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে; কেননা সমবায়ের পথ সমাজতন্ত্রের পথ, গণতন্ত্রের পথ।’
সমবায়ের ইতিহাস
১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে হারম্রান স্লুইচ ডেলিটাজ্জ সর্ব প্রথম জার্মানীতে ক্রেডিট ইউনিয়ন আন্দোলন শুরু করেন। তাঁর সাথে যোগ দেন ফ্রেডরিক রাফাইসেন। মি. রাফাইসেন ছিলেন খুবই বুদ্ধিমান, বিচক্ষণ, দূরদর্শী ও জন-দরদী মানুষ। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব নয়। ক্রেডিট ইউনিয়নের মাধ্যমে তাঁরা জার্মানীতে দরিদ্র মানুষের আশার আলো হতে পেরেছিলেন।
পঞ্চাশ দশকে তৎকালীন ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স লিও গ্রেনার সমবায়ের শক্তি উপলব্ধি করেন। তিনি আমেরিকান মিশনারি ফাদার চালর্স যোসেফ ইয়াং, সিএসসি’কে কানাডার কোডি ইনষ্টিটিউটে পাঠান ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে। ফাদার ইয়াং সমবায়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন সময় কাবুলীওয়ালেদের নিকট জিম্মি ছিল খ্রিষ্টান সমাজের অনেক মানুষ। সেই বিপদ থেকে ত্রাতা রূপে হাজির হয়েছিলো ঢাকা ক্রেডিট। মাত্র ২৫ টাকা মূলধন ও ৫০ জন সদস্য নিয়ে শুরু করা ঢাকা ক্রেডিটের মাধ্যমে উক্ত সমিতির সদস্যদের জীবন মান পরিবর্তন হতে থাকে। বর্তমানে এই সমিতির সদস্য প্রায় ৪৩ হাজার এবং সম্পদ-পরিসম্পদের পরিমাণ আট শত কোটি টাকার বেশি। ঢাকা ক্রেডিট প্রতিষ্ঠার পরে ক্রমে ঢাকা মহাধর্ম প্রদেশের প্রায় সব ধর্মপল্লী, একই সাথে দেশের সকল ধর্মপ্রদেশের সকল ধর্মপল্লীতে সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে সমিতিগুলো সুনামের সাথে কার্যক্রম চালছে। এই সমবায় মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা ছাড়াও দুর্যোগ মোকাবেলায়, নেতৃত্ব বিকাশে ও মাণ্ডলীক কাজে অবদান রেখে যাচ্ছে।
মণ্ডলীর সেবাতে খ্রিষ্টান ক্রেডিট ইউনিয়নগুলোর ভূমিকা: এক সময় খ্রিষ্টান ধর্মগুরু ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স লিও গ্রেনারের পৃষ্ঠপোষকতায় সমবায় আন্দোলন সূচনা করেছিলেন ফাদার চালর্স যোসেফ ইয়াং। ফাদার ইয়াং খ্রিষ্টভক্তদের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যেই এই আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তবে এই আন্দোলনের সুফল পাচ্ছে এখন খ্রিষ্টমন্ডলী ও তাঁর ভক্তজনগণ। এখানে মণ্ডলী বলতে সাধারণ খ্রিষ্টভক্ত ও বিশপ, যাজক, পালক, ব্রতধারী, ব্রতধারিণীদের বুঝানো হচ্ছে। নিম্নে ক্রেডিট ইউনিয়নগুলো কীভাবে মণ্ডলীর সেবা কাজে অংশগ্রহণ করছে তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো।
অর্থনৈতিক: মণ্ডলীর খ্রিষ্টভক্তদের অর্থনৈতিক ভিত গড়ে দিচ্ছে সমবায় সমিতি। সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে খ্রিষ্টভক্তরা ব্যবসায় ও কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। পেশায় যারা ব্যবসায়ী, তাঁদের বেশির ভাগই সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে পরিবারের ভরণ পোষণ করছেন। প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন সমাজে ও রাষ্ট্রে। এছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে কৃষকরা সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে শষ্য উৎপাদন করছেন। এখন সমবায় সমিতিগুলোতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। হাজার হাজার খ্রিষ্টান পরিবার চলছে সমবায় সমিতিতে চাকরি করার মধ্যমে। খ্রিষ্টভক্তদের যেকোনো প্রয়োজনে সমবায় সমিতির মাধ্যমে অর্থসংস্থান যেন নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সামাজিক: মণ্ডলীর যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের সেবা কাজে সমবায় সমিতিগুলো গুরুত্ব দিয়ে অংশ নিয়ে থাকে। যেমন বিশপ, ফাদার, সিস্টার, ব্রাদারের অভিষেক, ব্রত গ্রহণ বা জুবিলী অনুষ্ঠানের জন্য অনুদান প্রদান করে সমবায় সমিতি। এ ছাড়া মণ্ডলীর সদস্যদের সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ে, বৌভাত, জুবিলীর অনুষ্ঠানের জন্য সঞ্চিত বা ঋণ করে অর্থসংস্থান করা হয় সমবায় থেকে। পাশাপাশি এখন সমবায়ে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন, সামাজিকভাবে তাঁদের ক্ষমতায়ন হওয়াতে, তাঁরা বিভিন্ন রাষ্ট্রিয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
ধর্মীয়: সমবায় মণ্ডলী আর্থিক থেকে শুরু করে আত্মিক উন্নয়নেও অংশ গ্রহণ করছে। বেশ কিছু সমবায় সমিতির নিজস্ব গানের দল রয়েছে, তারা উপাসনায় গান পরিচালনায় অংশ নিয়ে থাকে। এছাড়া সমবায় সমিতিগুলোতে রয়েছেন বিশপ, পালক ও পুরোহিত। তাঁরা আধ্যাত্মিক উপদেষ্টা হিসেবে সেবা দিয়ে থাকেন। ধর্মপল্লীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে যেমন গির্জা নির্মাণ বা মেরাতম, কনভেন্ট, সেমিনারী বা ফরমেশন হাউজ নির্মাণ, কবরস্থান নির্মাণ বা মেরাতম, গির্জার রাস্তা নির্মাণ বা মেরামতের জন্য অনুদান দিয়ে থাকে সমবায় সমিতি।
পরামর্শ প্রদান: আজকাল সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ মেন্টর হিসেবে পরামর্শও দিয়ে থাকেন। তার মধ্যে রয়েছে পরিবারে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত। সামাজিক সমস্যা, বিবাহের বিচ্ছেদ বা দাম্পত্য সমস্যা নিরসনে কিছুটা ভূমিকা পালন করে সমবায় সমিতি। কাউন্সিলিং করার মাধ্যমে দম্পত্তিদের বুঝানো হয় বিবাহ বিচ্ছেদের নেতিবাচক প্রভাব। এছাড়া স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য জীবনে সমস্যা থাকলে তাদের সমিতি থেকে ঋণ পেতে সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। এইসব সমস্যার সমাধান পেতে অনেক সমস্যাগ্রস্ত দম্পতি পুনঃরায় এক সাথে সংসার শুরু করে। ভেঙ্গে যাওয়া সংসার জোড়া লাগে।
শিক্ষা: বলা যায়, সব সমবায় সমিতি সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে না। তবে খ্রিষ্টভক্তদের শিক্ষার জন্য প্রয়োজন অর্থের। সমবায় সমিতিগুলো থেকে উচ্চ শিক্ষা, বিদেশে শিক্ষা ও পেশাগত শিক্ষা নিতে প্রয়োজন হয় অর্থের। সেই অর্থের যোগন দিয়ে থাকে সমবায় সমিতি। যুবারা ঋণ নিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন, কেউ করছেন ব্যবসা। সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে যুবারা বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করছেন। বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন তাঁদের অনেকে। সহায়তা করছেন তাঁদের পরিবারকে। সমবায় সমিতি থেকে পেশাগত শিক্ষা নিয়ে, দক্ষতা অর্জন করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। নার্সিং ট্রেনিং, এমবিএ, ফটোগ্রাফি, ক্যাটারিংসহ বিভিন্ন কোর্সের জন্য ঋণ পাওয়া যায় সমবায় সমিতিগুলো থেকে এমন কি উচ্চতর ডিগ্রি পি.এইচ.ডি করার জন্য অনেকে ঋণ নিচ্ছেন। এ ছাড়াও সমবায় সমিতিগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ডোনেশন করাসহ স্কুল-কলেজ সংস্কারের জন্য অর্থ দিয়ে অনেক সময় সহায়তা করে থাকে। আবার কোন সমবায় সমিতি স্কুল পরিচালনা করে শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক কোর্স চালু করেও সমবায় সমিতিগুলো শিক্ষায় অবদান রাখছে।
বাসস্থান: এক সময় বেশির ভাগ খ্রিষ্টভক্তদের বাড়ি ছিল টিনের। এখন তা হয়েছে ইটের। অনেকে বহুতল ভবনও করছেন। তবে এই নির্মাণ কাজ বেশির ভাগ মানুষই নিজের জমা করা টাকা দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব হয় না। বাড়ি নির্মাণ করেন সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে। শুধু বাড়ি নির্মাণ নয়, শহরের বসবাসকারীরা সাধ্যের মধ্যে কিস্তিতে ফ্ল্যাটও কিনছেন উল্লেখ যোগ্য মানুষ। সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে সেই অর্থের সংস্থান করছেন সদস্যরা।
জরুরি অবস্থা মোকাবেলা: জরুরি অবস্থা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে কয়ে আসে না। করোনাভাইরাস এর কথা এক বছর আগেও আমরা জানতাম না। এই ভাইরাসের ফলে গোটা বিশ্ব এখন সম্মুখীন স্বাস্থ্য যুদ্ধে। করোনার কারণে হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়েছেন। কারো কমে গেছে আয়। দুঃসময়ে দেশের সমবায় সমিতিগুলো সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়েছে। চাল, ডাল, তেলসহ কোন কোন সমিতি নগদ অর্থ দিয়ে নিজেরা বা অন্য কোন সংগঠনের মাধ্যমে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে। এছাড়া গত বছর যখন প্রথম করোনা মহামারি শুরু হয়, তখন ঢাকার তৎকালীন আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও করোনা তহবিল গঠন করেছেন, সেই তহবিলের জন্য সমবায় সমিতি অর্থ অনুদান দিয়ে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে এসেছে। এখন ঢাকা ক্রেডিটসহ বেশ কয়েকটি ক্রেডিট ইউনিয়নে রয়েছে স্বাস্থ্যনিরাপত্তা স্কীম বা স্বাস্থ্য বীমা। এই বীমার মাধ্যমে সমিতির সদস্যরা অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য সেবা পাচ্ছেন। অর্থ-কষ্টে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে হচ্ছে না।
উন্নত দেশে অভিবাসনে সহায়তা: দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ উন্নত দেশগুলোতে বসবাস করেন। অনেকে অস্থায়ীভাবে চাকরির জন্য, অনেকে স্থায়ীভাবে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, মিডিল ইস্টসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের সেসব দেশে যাওয়ার টাকার সংস্থানও হয়ে থাকে ক্রেডিট ইউনিয়ন থেকে। একজন প্রথমে বিদেশে গিয়ে তাঁর অন্য আত্মীয়-স্বজনদেরও সে দেশে নিয়ে যেতে যাহায্য করছে। এভাবে একটি প্রজন্ম উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
চিকিৎসা: সুখ, দুঃখ, হাসি-কান্না নিয়েই জীবন। ষড় ঋতুর মতো মানুষের জীবনে পরিবর্তন আসে। হতে হয় অসুস্থ। মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সমবায় প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল নির্মাণ করছে। দিচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। অসুস্থ হলে বড় অপারেশন বা অন্যান্য চিকিৎসার খরচের জন্য প্রয়োজন পড়ে অনেক টাকার। সেই ক্ষেত্রে সমিতির সদস্যরা এই অর্থের সংকট কাটাতে দারস্থ হন সমবায় সমিতির নিকট। স্বাস্থ্য নিরাপত্তা স্কীম থেকে চিকিৎসা দাবী পূরণের টাকা উত্তোলন করে মেটাতে পারেন চিকিৎসা খরচ। আবার সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে নিজের চিকিৎসা খরচ বা স্বজনের চিকিৎসা খরচ মেটান।
নারী ক্ষমতায়ন: খ্রিষ্টান নারীরা সমবায় সমিতিগুলো থেকে অর্থসংস্থান করে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। চাকরি দিচ্ছেন অন্যদের। পাশাপাশি সমবায় সমিতিগুলোতে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে এসেছেন বেশ কিছু সাহসী নারী। তারা বৃহৎ ফোরামে তাদের কথা বলতে পারছেন। এতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও মণ্ডলীতে পাশাপাশি এগিয়ে যেতে পারছেন এই সমবায়ের মাধ্যমে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি: পোপ ফ্রান্সিসের ‘লাইদাতো সি’ (প্রকৃতি বর্ষ) এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত মুজিববর্ষে বৃক্ষরোপণ অভিযানের অংশ নিয়েছে সমবায় সমিতিগুলো। সমিতিগুলো সদস্যদের মধ্যে বিনামূল্যে বৃক্ষ বিতরণ করে মণ্ডলীর ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে।
মন্ডলীর কার্যক্রম প্রচার: বিভিন্ন সমবায় সমিতি মন্ডলীর কার্যক্রমসহ সমাজ উন্নয়নমূলক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রচারে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ কার্যক্রমের জন্য কোন কোন সমবায় সমিতির রয়েছে নিজস্ব পত্রিকা। আবার রয়েছে অনলাইন টেলিভিশনও।
পরিশেষে বলা যায়, দেশে খ্রিষ্টানদের দ্বারা পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমবায় সমিতিগুলো পরিচালনা করা বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে সমিতিগুলোতে মূলধন ক্রমে বাড়ছে। এখানে অযোগ্য, অসৎ ব্যক্তিরা নেতৃত্ব কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে। এই অর্থ রক্ষা করা সমবায়ীদের দায়িত্ব। তাই সমিতির সদস্যদের উচিত, সমবায়ে যাঁরা নেতৃত্ব দিবেন, যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের যেন তাঁরা নির্বাচিত করেন। নয়ত ভবিষ্যতে সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ছাড়া একসময় যাঁরা সমবায়ে নেতৃত্ব দিবেন, তাঁদের উচিত ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এবং সমবায়ের ওপর পড়াশোনা করে এই সেবা কাজে অংশ নেওয়া।
লেখক: প্রেসিডেন্ট, দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা
(লেখাটি সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর ইস্টার সংখ্যা ২০২১-এ পূর্বে প্রকাশিত)