শিরোনাম :
মাউসাইদ গির্জায় ডাকাতি, মালামাল লুট এবং ফাদারকে নির্যাতন
মাউসাইদ কাথলিক গির্জায় আজ ভোরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টায় ঢাকার উত্তরখান থানার মাউসাইদ কাথলিক চার্চে একদন ডাকাত ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।
মাউসাইদের পাল-পুরোহিত চঞ্চল হিউবার্ট পেরেরাকে ডাকাত দল নির্যাতন করে এবং তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এ সময় ডাকাতরা ৩৫ হাজার টাকা, ল্যাপটপ এবং গির্জায় রাখা তিনটি দান বাক্স ভেঙ্গে টাকা নিয়ে যায়।
এ ছাড়াও পবিত্র সাক্রামেন্তের সিন্দুক ভেঙ্গে ফেলে রেখে যায়। সাক্রেস্টি কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর করে ধর্মীয় দ্রব্যাদি তছনছ করে।
ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখা যায় ডাকাতি সংগঠিতকালে ভাঙচুরের জিনিসপত্র এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
ফাদার চঞ্চল ডিসিনিউজকে জানান, ‘ডাকাত দল তালা ভেঙ্গে দু’তলায় ওঠে। এ সময় ডাকাতরা জানালা খুলে বন্দুক দেখিয়ে বলে, দরজা খোল নয়ত গুলি চালিয়ে দিবো। আমি প্রাণ রক্ষায় দরজা খুলি। তারপর তারা আমাকে বেঁধে ফেলে। আমার মুখ বাঁধার সময় শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমি বলি শ্বাস নিতে পারছি না মুখ বাঁধবেন না। তখন আমাকে জোরে চড় মারে, চিৎকার করলে বা চালাকি করলে মেরে ফেলার ভয় দেখায় দুর্বৃত্তরা।’
পাঁচজনের ডকাতের দলে তিনজনের মুধ বাঁধা ছিলো। ফাদার কাউকেই তিনতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন।
অপর দিকে গির্জার দুইজন কর্মচারী মালি পল রোজারিও এবং বাবুর্চি বিজয় কস্তা ডাকাতি চলাকালে কিছু টের পাননি বলে জানান।
তারা জানান, ‘ঘটনার সময় ডাকাতরা লাইটগুলো নিভিয়ে দিয়ে কর্মচারীদের ঘর বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। ফাদারের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমাদের দরজা বাইরে থেকে লাগানো। কোনোভাবে বের হয়ে দুই তলায় গিয়ে দেখি ফাদারের হাত-পা বাঁঁধা।’
সকালে উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। এর সাথে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি।’ এ ছাড়া ডিবি পুলিশও সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
খবর পেয়ে উত্তরখান থানার বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন শাখার সহ-সভাপতি ডমিনিক রঞ্জন পিউরীফিকেশন, সেক্রেটারি চন্দন কস্তা এবং প্যারিশ কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ ঘটনা স্থলে যান। তারা এ সময় ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও ও সেক্রেটারি হেমন্ত আই. কোড়াইয়া ডাকাতির ঘটনাকে দুঃখজনক বলে তীব্র নিন্দা জানান। তারা বলেন, ‘এই ঘৃণ্যতম ডাকাতি যারা করেছে, তাদের আমরা দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আশা করি প্রশাসন দ্রুততর সময়ের মধ্যে এর ব্যবস্থা করবে।’
উল্লেখ্য মাউসাইদ গির্জায় এ পর্যন্ত কোনো নৈশ্য প্রহরী ছিল না। এর আগেও ১৯৭২ সালে এই গির্জায় আরো একবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ১৮৯৩ সালে মাউসাইদ গির্জাটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরবি/আরপি/৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮