শিরোনাম :
মাদক বিরোধী প্রচারনা মাস জানুয়ারি- ২০১৭ এবং ক্লিন বার্থডে অনুষ্ঠিত
২৭ জানুয়ারি, ২০১৭ শুক্রবার বারাকার ( বাংলাদেশ মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পূনর্বাসন কেন্দ্র ) কমলাপুর, সাভার, ঢাকায় অবস্থিত চিকিৎসা ও পূনর্বাসন কেন্দ্রে সরকার ঘোষিত মাদক বিরোধী প্রচারণা মাস জানুয়ারি ২০১৭ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও বারাকার চিকিৎসাপ্রাপ্ত রিকভারী যারা বিগত ২৮ বছরে জানুয়ারি মাসে চিকিৎসা সমাপ্ত (গ্র্যাজুয়েশন) করেন এমন ২৯ জন রিকভারীর ক্লিন বার্থ – ডে পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পরিমল কুমার দেব। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক, চিকিৎসা ও পূণর্বাসন, মফিদুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন বারাকার সাইকোলজিস্ট মিসেস রাখী গাঙ্গুলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাদার রবি টি. পিউরিফীকেসন সিএসসি; পরিচালক, বারাকা ও সভাপতি নারকব ফাউন্ডেশন।
বারাকা ম্যানেজার প্যাট্রিক এ. রড্রিকস্ স্বাগত বক্তব্য রাখেন । রাখী গাঙ্গুলী তার বক্তব্যে বলেন, মানুষের জীবন চলার পথ খুব মসৃন নয়। এ পথে অনেক চড়াই উৎরাই আছে। অনেক সময় হোচট খেতে হয় – আবার উঠে চলতে হয়। আমাদের প্রতিদিন ২/১ ঘন্টা সময় একান্ত নিজেদের প্রাত্যহিক কার্যাবলী মূল্যায়নের জন্য ব্যয় করা উচিত। কষ্টের বিষয়গুলো কারও সাথে শেয়ার করলে খারাপ লাগা কমবে। আমাদের নিজেদের শক্ত থাকতে হবে – মাদক যেন আমাদের জীবনের নিয়ন্ত্রক না হয়।
একজন অভিভাবক তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেও সন্তানের মাদকাসক্তির কারনে তিনি যখন নিজেকে একজন ব্যর্থ পিতা হিসেবে মনে করছিলেন তখনই একজন শুভাকা্খংীর কাছ থেকে বারাকা সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি বলেন বারাকার কাছে তিনি চির ঋণী কারন বারাকা তার সন্তানকে অন্ধকারের চোরাগলি থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে এনেছে। বারাকার কল্যাণে তিনি আজ একজন গর্বিত পিতা।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পরিমল কুমার দেব বলেন, তার অধিদপ্তরের কর্মীগন নানা সীমাবদ্ধতার মাঝে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা মাদক সম্পর্কে দেশের জনগনের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী কমিটি গঠন করে যাচ্ছেন। তবে মূল কাজ হ’ল মা বাবার। তাদের সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে এসব বিষয়ে খোঁজ খবর রাখতে হবে। অধিদপ্তর মাদকের অনুপ্রবেশ রোধে আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরবরাহ হ্রাস সম্পর্কে তিনি বলেন চাহিদা হ্রাস করতে পারলে সরবরাহ আপনা থেকেই কমে যাবে। তিনি তার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পূনর্বাসন কেন্দ্রগুলোকে সব ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
পরিচালক চিকিৎসা ও পূনর্বাসন মফিদুল ইসলাম সকল পূনর্বাসন কেন্দ্রকে মানসম্মত চিকিৎসা প্রদানের এবং সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী সংগঠনকে মাদক নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বারাকার চিকিৎসা মান ও পরিবেশের প্রশংসা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে সভার সভাপতি, বারাকার পরিচালক ও নারকবের সভাপতি ব্রাদার রবি পিউরিফীকেসন সিএসসি বলেন, সরকারের নীতিমালার যে বিষয়গুলো পূনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর চিকিৎসার অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সেগুলোর সংশোধনের জন্য নারকবের পক্ষ থেকে অধিদপ্তরে লিখিত সুপারিশ করা হয়েছে। অধিদপ্তরের সাথে এব্যাপারে মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি প্রদত্ত সুপারিশমালার ভিত্তিতে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নীতিমালা সংশোধন করে চিকিৎসা ও পূনর্বাসন কেন্দ্র বান্ধব নীতিমালা প্রনয়নের আহ্বান জানান। সভায় উপস্থিত সকল অতিথি, রিকভারী, অভিভাবক, মিডিয়াকর্মী ও বারাকার সকল কর্মীদের অনুষ্ঠান সাফল্যমন্ডিত করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
আরবি/ আরপি/ ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭