শিরোনাম :
মানবতার হোক জয়: করোনা নিয়ে নয় কোনো ভয়!
|| রবীন ভাবুক, ঢাকা||
বর্তমান সময়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে একটিই সংকট। নোভেল করোনার (কোভিড-১৯) এই সংকটময় মুহূর্ত নিয়ে গোটা বিশ্বই একটি ক্রান্তিলগ্ন পার করছে। এর শেষ কোথায় কেউই বলতে পারছে না। বিভিন্ন দেশই কোভিড-১৯ ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কোনো কোনো দেশ এই বিষয়ে আশার আলোও দেখাচ্ছে। কিন্তু তারচেয়েও বেশি যে বিষয়টা মানুষকে ঝেকে বসেছে, তা হলো বিশ্বের অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকবে। ঝুঁকির শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। আপামর জনগণ একটি দুর্বিক্ষের অশনী সংকেত নিয়ে দিনানিপাত করছে। যেমন নিরাশা ভর করছে, তেমনি কিছুটা আশা খোঁজারও চেষ্টা করছি।
প্রাকৃতিক অবস্থা:
মানুষ বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পৃথিবীর উপর অধিপত্য করতে চেয়েছে, তারই ফলস্বরূপ এই করোনা ভাইরাস। বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীরাই এই মতামত দিচ্ছে। যদিও চীন দায়ি করছে যুক্তরাষ্ট্রকে, আবার যুক্তরাষ্ট্র দায়ি করছে চীনকে। আর এই দায়িকে সমর্থন দিচ্ছে অনেক দেশ। সে যা-ই হোক, মানুষ যে তার কর্মের ফল ভোগ করছে, তা সবার স্বীকার করতেই হবে। যেভাবে দিনের পর দিন বাস্তুসংস্থান ধ্বংস করে প্রাণীকূলকে মানুষ বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে, তার জন্য মানুষকে অনেককিছুই মূল্য দিতে হবে। বন ধ্বংস করে বিভিন্ন প্রাণী লোকালয়মুখী করা এবং অজানা বিভিন্ন ভাইরাস সেই প্রাণীর সাথে লোকালয়ে চলে আসছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে অনেক জটিলতারও। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন দেশ বন্যপ্রাণীসহ বিভিন্ন কীট পতঙ্গও খেয়ে যাচ্ছে নির্বিশেষে, ফলে জীব চক্রেও এর প্রভাব পড়ছে।
বিভিন্ন জার্নাল ও আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলোতে কয়েকদিন ধরে একটি ভাল সংবাদও ঘুরছে। তা হলো, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমানে পৃথিবীর ঝাঁকুনি কমে গেছে, হ্রাস পেয়েছে ভূমিকম্প। জাপান ও ফ্রান্সে নিয়মিত হওয়ার কম্পনের মাত্রাও নেমে গেছে অনেক নিচে। যার জন্য করোনার সংকটে আক্রান্ত দেশগুলো লকডাউন ঘোষণা করেছে, তার ফলে ভারি যান চলাচল নেই, বন্ধ হয়েছে কল-কারখানা, বনায়ন উজার করে গাছ কাটার প্রবণতাও কমেছে। ফলে এই স্বপ্ন সময়েই পৃথিবী কিছুটা হলেও তার গতি পথে আসতে পেরেছে। কিছুটা হলেও ভারসাম্য আসছে সবুজ এই পৃথিবীর বুকে।
আমাদেরও কিছুটা দায়বদ্ধতার বিষয়ে সচেতন হওয়ার সময় এই কারোনা সংকটময় মুহূর্তে। একদিন ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে, করোনা তখন সামান্য সর্দি-কাশিই হয়ে সেরে যাবে। সেদিন হয়তো বেশি দূরে নয়। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, এটাই শেষ নয়, মাত্র শুরু। সুতরাং বুদ্ধি-দীপ্তির দাম্ভিকতায় আমরা যেন সবকিছুর উপর নিয়ন্ত্রণ না করি। আমরা যেন খেয়াল রাখি এই সবুজ পৃথিবীর প্রতি। কারণ, পৃথিবী বাঁচলেই মানুষ টিকে থাকবে। আর পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে মানুষকে হতে হবে সংযমী ও দায়িত্বশীল অন্যান্য প্রাণীকূলের প্রতি। উন্নতদেশগুলোকে আরো বেশি সংযমী হয়ে তাদের শিল্প-কারখানাগুলোকে চলমান রাখতে হবে, সেই সাথে নিশ্চিত করতে হবে পরিবেশের ভারসাম্য। যখন এই ধরণীর অধিকারী সকল প্রাণীকূল একটি সুষম বাস্তুসংস্থানের মধ্যে থাকবে, তখনই নিশ্চিত হবে নিরাপদ চারণভূমির। সুতরাং করোনা ভয় নয়, হতে হবে সচেতন। তখনই জয় হবে মানবতার।