ঢাকা ,
বার : রবিবার
তারিখ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাথলিক মন্ডলী, খ্রীষ্টভক্তের ঐক্যমত প্রকাশ

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাথলিক মন্ডলী, খ্রীষ্টভক্তের ঐক্যমত প্রকাশ

0
80

ডিসিনিউজবিডি।। ঢাকা

বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার, পরিবেশ সচেতনতাবৃদ্ধি সর্বোপরি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাথলিক মন্ডলী ও খ্রীষ্টভক্তগণ ঐক্যমত প্রকাশ করেছে।

৯ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ কাথলিক বিশপস সম্মিলনীর (সিবিসিবি) হল রুমে ন্যায় ও শান্তি কমিশনের আয়োজনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে চার্চ পরিচালিত ও খ্রীষ্টভক্তদের দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যমত প্রকাশ করেছে।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্য, অংশগ্রহণ ও প্রেরণকর্মের মাধ্যমে সিনোডাল মন্ডলী গঠন প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাথলিক বিশপ সম্মীলনীর ন্যায় ও শান্তি কমিশনের চেয়ারম্যান রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও, সেক্রেটারী ফাদার লিটন হিউবার্ট গমেজ সিএসসি, দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস (কাককো) লি:, এর চেয়ারম্যান পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্টিয়ান রেমা, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিওসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

“শুধু যুদ্ধ বিগ্রহ নয় সমাজের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংগতি রয়েছে যা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই সমস্ত সমস্যা নিয়ে নিজে সচেতন হওয়া এবং অন্যকে সচেতন করে তোলার মধ্যে দিয়ে সমাজের মধ্যে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান করো সম্ভব।” বলেন ফাদার লিটন গমেজ

খ্রীষ্ট মন্ডলী শুধু নিজেদের জন্য নয়, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন বিশপ জের্ভাস রোজারিও।

“আমাদের মন্ডলীর সাথে সাথে ক্রেডিট ইউনিয়নগুলো ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই ছোট এই খ্রীষ্টান সমাজ দেশের মধ্যে লবন ও আলোর মত উদাহরণ তৈরি করবে এবং অন্যান্যরা সেটা অনুসরণ করবে।” বলেন বিশপ রোজারিও

আলোচনা সভায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সিস্টার, ব্রাদার, ফাদার, এনজিও কর্মী, মানবাধিকারকর্মীগণ উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় আর্থিক সংকটের বিষয়টি উঠে আসে। একই সাথে যুব সম্প্রদায়কে মানবাধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান না দেয়া, ঐক্যবন্ধ হয়ে কাজ না করা, চার দেয়ালের মধ্যে মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করা, নিজেদের গন্ডির বাইরে বের হতে না দেয়া বা বের হওয়াকে ঝুকিপূর্ণ মনে করাসহ অন্যাণ্য সমস্যাসমূহ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় হিসেবে উঠে আসে।

এই সময়ে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট হেমন্ত কোড়াইয়া বলেন, আমরা আর্থিক সংকট নিরসনে একটা ফান্ড গঠন করতে পারি যা দিয়ে দেশের যেকোনো স্থানে আমাদের মানুষ আক্রান্ত হলে এই ফান্ড থেকে তাদের সহায়তা দেয়া হবে।

“আমরা একটা আইনজীবি প্যানেল রাখতে পারি যারা আমাদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করবে। কেউ যেন আর্থিক সংকটে মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত নায় হয়। এই প্রচেস্টা বাস্তবায়নে ঢাকা ক্রেডিটসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান সর্বদা ন্যায় ও শান্তি কমিশনের সাথে আছে।” বলেন কোড়াইয়া

স্বেচ্ছাচারিতা থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সূচনা হয় উল্লেখ করে সেবাস্টিয়ান রেমা বলেন, “আমরা যতদিন গন্ডির বাইরে গিয়ে, সাহস করে মানবাধিকার নিয়ে কথা না বলবো ততদিন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা মানবাধিকার নিয়ে যথেষ্ট কাজ করতে পারবো যদি আমরা একত্রে কাজ করি।

আলোচনায় ঢাকাসহ অন্যান্য জায়গায় খ্রীষ্টান অভিবাসীকর্মীদের সমস্যা, পাষ্টরাল সেবার অভাব, আদিবাসীদের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষায় মন্ডলীর ভুমিকাসহ নানা বিষয়ে উঠে আসে।

পংকজ গিলবার্ট কস্তা বলেন, আমাদের মিশনারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমাদের সন্তানেরাই অনেক সময় সুযোগ পায় না পড়াশোনা করার জন্য। এই দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সমাজের ও দেশে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের অবদান কোনো অংশেই কম নয় কিন্তু সেই তুলনায় আমরা সরকারের কোনো স্বীকৃতি এবং সহযোগীতা পাই না।

“কাককো খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের যুবদের দিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করছে এবং এতে ২০,০০০ শিক্ষার্থীকে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগীতার মাধ্যমে ভালো প্রফেশনাল, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক, ডাক্তারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে এক্সপার্ট তৈরির কাজটি করবে।”

আলোনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা নিজের ঘর, প্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করার বিষটি উঠে আসে। আলোচকগণ বলেন, নিজেদের ঘর এবং প্রতিষ্ঠানে মানবাধিকার চর্চা শুরু করেলে জাতীয় পর্যায়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

কোনো দেশে কতটুকু মানবাধিকার আছে সেটা বুঝা যায় সেই দেশে সংখ্যালঘুরা কতটুকু ভালো আছে উল্লেখ করে নির্মল রোজারিও বলেন, আমাদের চার্চের পক্ষ থেকে একঝাঁক ফাদার, সিস্টার দরকার যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করবে।

“এই দেশে আমাদের মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে লড়াই করেই বেঁচে থাকতে হবে। কাজেই আমাদের সমন্বিত একটা প্লাটফর্ম থেকে ঐক্যবন্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আর সেই প্লাটফর্ম হতে পারে ন্যায় ও শান্তি কমিশন।” বলেন নির্মল রোজারিও