মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার বীর উত্তম জেনারেল সি আর দত্ত মারা গেছেন!

ডিসিনিউজ ।। ঢাকা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বীর উত্তম চিত্ত রঞ্জন দত্ত মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

তিনি সি আর দত্ত নামে বেশি পরিচিত ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য বীর উত্তম খেতাব লাভ করেছিলেন। সি আর দত্ত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপঙ্কর ঘোষ। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, সেক্রেটারি জেনারেল হেমন্ত আই. কোড়াইয়া।

তাঁরা এক শোক বার্তায় মহান এই মানুষটির মৃত্যুতে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে সি আর দত্ত অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশে স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মানব কল্যাণে ব্রতী হয়েছিলেন। সৃষ্টিকর্তা তাঁর আত্মার শান্তি দান করুন।

এর আগে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল যে গত ২০শে অগাস্ট ফ্লোরিডার বাসভবনের বাথরুমে হঠাৎ পড়ে যান সি আর দত্ত। এই সময় তার পা ভেঙ্গে যায়। এরপর জেনারেল দত্তকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে।

ভারতের শিলংয়ে জন্ম হলেও সি আর দত্তের পৈতৃক বাড়ি ছিল হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়।

১৯৫১ সালে তিনি তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সিলেট অঞ্চল নিয়ে যে ৪ নম্বর সেক্টর গঠন করা হয়, সেই সেক্টরের কমান্ডার হিসাবে নিযুক্ত হন সি আর দত্ত। যুদ্ধে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি বীর উত্তম খেতাব পান।

স্বাধীনতার পরে তিনি প্রথমে সেনাবাহিনীর রংপুরে ব্রিগেড কমান্ডার হিসাবে নিযুক্ত হন। পরে তাকে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়। বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) গঠনের পর তিনি ছিলেন বাহিনীর প্রথম মহাপরিচালক।

১৯৮৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করার পর থেকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।