ঢাকা ,
বার : রবিবার
তারিখ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা প্রবন্ধ শত বাধা, সংগ্রাম ও প্রতিকূলতার মাঝেও নারীর পথচলা থামাতে পারেনি

শত বাধা, সংগ্রাম ও প্রতিকূলতার মাঝেও নারীর পথচলা থামাতে পারেনি

0
668

‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, মহান চিরকল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী আর অর্ধেক তার নর’-
কবি কাজী নজরুল ইসলাম

সৃষ্টির শুরু থেকে পৃথিবীর উন্নয়নে নারী-পুরুষ সমান ভূমিকা পালন করে আসছে। তারপরেও নারীদের প্রতি সমাজের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি যুগযুগ ধরে চলমান। শত বাধা, সংগ্রাম ও প্রতিকূলতার মাঝেও নারীর পথচলা থামাতে পারেনি। নারীরা এগিয়ে চলছে। নিজের অধিকার আদায়ে সক্ষম হচ্ছে। নারীর প্রতি সমাজের ভ্রান্ত ধারণা, দৃষ্টি-ভঙ্গি, প্রচলিত প্রথা ও মিথ্যাচার ধীর গতিতে হলেও অনেকাংশে পরিবর্তন হয়েছে। তারা প্রমাণ করেছে তারা পুরুষের চেয়ে কম নয়। তাদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষের ন্যায় সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগের।

আজ নারীরা যে পরিমাণ স্বাধীনতা, পড়াশোনা ও চাকুরির সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে তার পিছনে অবদান রয়েছে অসংখ্য মহিষী নারী ও মহান পুরুষের। যারা নারী জাগরণের পক্ষে সংগ্রাম করেছে; সমাজকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করেছে ও নারীদের বাঁচার মতো বাঁচতে শিখিয়েছে, পুরুষের পায়ের নিচে নয়-পুরুষের সমতুল্য স্থানে তাদের স্থান জীবন দৃষ্টান্তের মাধ্যমে দেখিয়ে গেছেন। সময়ের পালাবদলে সমাজও তার ভুল বুঝতে পারছে ও নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করছে। ছোটবেলা থেকেই মেয়েরা একটি ছেলের সমপরিমাণ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে, খেলাধুলা ইচ্ছা পূরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে। পড়াশোনা খেলাধুলা, চাকুরি ও রাজনীতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। যা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। বিশে^র বেশ কয়েকটি দেশে নেতৃত্ব দিচ্ছে নারীরা। তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ।

নারী জাগরণ ও নারী ক্ষমতায়নে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা অনস্বীকার্য। সমালোচনা ও কটুক্তির শিকার হওয়া সত্বেও তিনি বাংলার নারীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করছেন। এ দেশের নারীরা জননেত্রীকে হতাশ করেনি। নারীরা তার আস্থার প্রতিদান দিচ্ছে। বাংলার নারীরা আজ শুধু রাঁধেই না অফিসের পাশাপাশি সংসারও সামলাচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ কিছ ুকিছু ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়েও বেশি, ক্রিড়াঙ্গানে পুরুষ জাতীয় দলগুলোর চেয়ে নারী জাতীয় দলগুলোর অর্জন বেশি, নারী উদ্যোগক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুতগতিতে। এছাড়াও বাংলার নারীদের অসংখ্য অর্জন রয়েছে যা সত্যিই প্রশসংনীয়।

নারীরদের এ উত্তরণ সমাজের অনেকের মাথা ব্যথার কারণ। নারীদের নিয়ে খুব সহজে কটুক্তি করে বসে। তাদেরকে পরাধীনতার শিকলে বেঁধে রাখতে চায়। এ সুযোগ কিছু নারীরাই করে দিচ্ছেন। তারা স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ কখনোই বুঝার চেষ্টা করেন না। স্বাধীনতা মানে তাদের কাছে যা ইচ্ছে তাই করা। রাতারাতি জনপ্রিয় হওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীলভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা, রাত করে বাড়ি ফেরা, পিতা-মাতাকে অগ্রাহ্য করা, মিথ্যা ধর্ষণের মায়লা দায়ের, মন না চাইলে ছোট খাটো বিষয়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো কিংবা প্রতিবাদের নামে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা কারও কারও কাছে স্বাধীনতা। এ শ্রেণির নারীরা নিজেদের অজান্তে অন্য নারীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও নারী নির্যাতনের মতো নিকৃষ্ট কর্মকান্ডের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে বহুদূর। তবে সবাই এক সঙ্গে এগিয়ে যেতে না পারলে নারী স্বাধীনতার প্রকৃত ফল পাওয়া সম্ভব হবে না। যখন প্রতিটি নারী স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারবে ও দায়িত্বশীলতার সাথে ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ব্যবহার করবে তখনই নারী স্বাধীনতার পূর্ণতা পাবে ও সর্বোপরি কল্যাণ নিশ্চিত হবে। নারী স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা পাবে প্রতিটি স্তরে এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হবে ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমার একান্ত কামনা। সকল মা-বোনকে জানাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

‘নারীর প্রতি সহিংসতা আর হবে না মানা
বাংলার মাটিতে প্রতিটি নারী পাবে তার যোগ্য মর্যদা’

লেখক
উদয় গ্রেগরী
ফার্মগেট, ঢাকা।