শিরোনাম :
শিশু-কিশোরদের প্রতিভা বিকাশে ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমি
ডিসিনিউজ:
তেজগাঁও কাথলিক প্রাইমারী বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতেই কানে এলো তবলা বাজানোর শব্দ। আরেকটি ক্লাস রুমে চলছিলো দলীয় নৃত্যের ক্লাস। শিক্ষক বিশিষ্ট নৃত্য শিক্ষক ঝোটন সিলভেষ্টার ছেড়াও। পাশের রুমে দেখা গেল সংগীত ও গীটারের ক্লাস। শিশু-কিশোররা শিখছে। তাদের অভিভাবকেরা ক্লাসের বাইরে অপেক্ষা করছেন।
হলি ক্রসের ছাত্রী ক্লারিসা মারিয়া রোজারিও (৭) দুই বছর ধরে গান ও নাচ শিখছে । সে গত বড়দিনে বিটিভিতে বাণীদীপ্তির মাধ্যমে একটি নাচে অংশ নেয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সুনাম অর্জন করেছে। ‘ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমির শিক্ষকেরা খুব আন্তরিক। তারা খুব আন্তরিকতার সাথে আমাকে নাচ ও গান শিখাচ্ছেন’ বলে ক্লারিসা। তার মা গৃহিনী ঝিনা গমেজ ডিসিনিউজকে বলেন, ‘আমার মেয়ে দুই বছর হলো নাচ ও গান শিখছে। আমি ওর নাচ ও গান দেখে মুগ্ধ হই। ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমি আমার মেয়ের প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতা করছে। আমি ঢাকা ক্রেডিটের নিকট কৃতজ্ঞ।’
ক্লারিসার মতো লরিয়েল ভার্জিনিয়া রোজারিও (৯) নাচ শিখে। সেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে। তার মা লিজা রোজারিও বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিট শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত করছে, এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এখানে শুধু খ্রিষ্টান নয়, অন্য ধর্মের যে কেউ নাচ, গান, তবলা, গীটার ও চিত্রাংকন শিখতে পারে।’
ক্লারিসা, লরিয়েলের মতো ২১৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমিতে। একামেডির রয়েছে দুইটি শাখা- তেজগাঁও ও নদ্দা শাখা। ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমির প্রিন্সিপাল অণিমা মুক্তি গমেজ ডিসিনিউজকে বলেন, ‘আমাদের সমাজে যে ছেলেমেয়েরা আছে, তারা যেন জাতীয় পর্যায়ে সংস্কৃতিক অঙ্গনে সুযোগ করে নিতে পারে। সুপ্ত প্রতিভা যেন বিকশিত করতে পারে, সেই লক্ষ্যেই ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি জানান, প্রতি বছর জানুয়ারির শুরুতে ৫০০ টাকা দিয়ে ভর্তি হতে পারে সর্বনি¤œ তিন বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী যে কেউ যেকোনো ধর্মের শিক্ষার্থী। শুরুতে শুধু মাত্র শিশু-কিশোরদের ও খ্রিষ্টান শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ থাকলেও বর্তমানে সব ধর্মের মানুষ ভর্তি হতে পারেন এই একাডেমিতে। মোট ১১ জন শিক্ষক যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংস্কৃতিক অঙ্গনে সুনামের সাথে নিজেদের প্রতিভা বিকাশ করেন তারাই এই কাডামেডিতে শিক্ষকতা করেন।
বিশিষ্ট লোকসংগীত শিল্পী অণিমা মুক্তি গমেজ আরো বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা যেন নেশাগ্রস্ত না হয়, বিপথগামী না হয়, এই কারণে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তাদের যুক্ত করতে হবে। আমরা চাই ওরা যেন সংস্কৃতিমনা হয়। আমি এক সময় থাকবো না, আমি যা ধারণ করেছি, আমি চাই এটা কাউকে দিয়ে যেতে।’
ইতিমধ্যে এই একাডেমির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নাচ ও গানের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সুনাম অর্জন করেছেন। নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছেন শিল্পী হিসেবে।
অণিমা মুক্তি গমেজ মনে করেন, ছেলেমেয়েরা সংস্কৃতিমনা হলে সামাজিক সমস্যা যেমন আত্মহত্যা ও মাদকাসক্তির হার কমবে। বর্তমানে শিশু-কিশোরদের হাতে থাকে মোবাইল ফোন। তাই তাদের বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু তারা যদি নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়, বই পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাহলে তারা তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে থাকে।
২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া এই একাডেমি শত শত শিক্ষার্থীকে তালিম দিয়ে যোগ্য করে তুলেছে।
ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমির সাথে যোগাযোগ:
+৮৮০১৭০৯৯৯৩০৮৫, ০৯৬৭৮৭৭১২৭০
[wp1s id=”10699″]