ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা সম্পাদকীয় উপ-সম্পাদকীয় শেখ হাসিনা : একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক

শেখ হাসিনা : একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক

0
1057

উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং || কেন্দ্রিয় সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ||

বিশ্বে মরনঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমন ব্যাপকভাবে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এর তান্ডবে পৃথিবী আজ টালমাটাল অবস্থা। এ পর্যন্ত ২১০টির মতো দেশে এবং অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। এর তান্ডবে বিশ্বব্যাপী নেতৃবর্গ দিশেহারা, অসহায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এতোদিনের সকল সাফল্যকে ম্লান করে এর মরণথাবা বসিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসে ভয়াল আক্রমণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যোগ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলে। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের দিনরাত পরিশ্রমও থামাতে পারছে না এ মৃত্যুর সংখ্যাকে। বিজ্ঞানীরা শত চেষ্টা করেও এর কোনো প্রকার প্রতিষেধক আবিষ্কারে সক্ষম হচ্ছেন না। খোদ যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও থামাতে পারছে না মৃত্যুর আধিক্যকে। ইউরোপের দেশগুলোতো রীতিমতো লন্ডভন্ড অবস্থা।
সারা বিশ্বে এই ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে হাজার হাজার মানূষ মারা যাচ্ছে প্রতিদিন, মানুষের আহাজারিতে ভারি হচ্ছে আকাশ-বাতাস। অন্যদিকে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে দেশে দেশে লকডাউন আরোপ করার কারণে শিল্পকারখানা, আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা – সবকিছু বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অনেক মানুষ দেশে কী বিদেশে চাকরি হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন; ফলে উন্নত-অনুন্নত সব দেশের অর্থনীতির চাকাই আজ স্থবির। তাই করোনাভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার সাথে সাথে অর্থনীতির চাকা সচল করতে গিয়ে সব দেশই হিমশিম খাচ্ছে।
বাংলাদেশও এই বৈশ্বিক পরিস্থিতির বাইরে নয়। তবে ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ভিন্নতর এবং অনেক কঠিন । এরূপ এক কঠিন সময় মোকাবেলা করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার শুরু থেকেই ছিল সতর্ক।
২০১৯-এর ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার অব্যবহিত পরেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ‘কন্ট্রোল রুম’ খুলে রোগটি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করা হয়। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও খোলা হয় ‘কন্ট্রোল রুম’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৪ জেলায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও ত্রাণ বিতরণসহ সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে সরকারের ৬৪ জন সিনিয়র সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ২০২০-এর জানুয়ারি থেকেই দেশের সকল বিমান, সমুদ্র ও স্থলবন্দরে বিদেশ প্রত্যাগতদের থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে স্ক্রিনিং করার ব্যবস্থা করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় কমিটি গঠিত হয়েছে। এমনকি বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও কমিটি গঠিত হয়েছে।
গণমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে সর্বসাধারণকে সতর্ক করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পণ্য পরিবহন ব্যতীত সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি হটলাইনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ তথ্য এবং চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা সেবার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) সংগ্রহ করা হয়েছে । আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পরীক্ষার লক্ষ্যে আনা হয়েছে টেস্টিং কিটস। আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিতকল্পে জরুরিভিত্তিতে ২ হাজার চিকিৎসক এবং ৫ হাজার ৫৪ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দশ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয়, নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে অর্থ বিতরণ, বিভিন্ন ভাতার আওতা যেমন- বয়স্ক ভাতা, বিধবা/স্বামী পরিত্যাক্তা ভাতা, সর্বাধিক দরিদ্রপ্রবণ এলাকাগুলোতে শতভাগে উন্নীতকরণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত উদ্যোগ হিসেবে গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণসহ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসুচির এই কার্যক্রমগুলি অগ্রাধিকারভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায় , ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত (১৮/০৫/২০২০খ্রিঃ) খাদ্য সহায়তার লক্ষ্যে মোট চাল বরাদ্দ হয়েছে ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৫৬৭ মেট্রিক টন, নগদ অর্থ বরাদ্দ ৭৬ কোটি ৬ লক্ষ ৭২ হাজার ২৬৪ টাকা যা ১ কোটি ৮২ লক্ষ ৯০ হাজার ৬৬৫টি পরিবারের মোট ৮ কোটি ৪ লক্ষ ৮০ হাজার ২৭৯ জন নিম্ন আয় ও কর্মহীন মানুষ পাবে এবং এ পর্যন্ত শিশুখাদ্য বিতরণে টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে ২০ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা এবং ১০ লক্ষ ১৩ হাজার ১৪৪ জন শিশু এই সুবিধা পাবে ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা নিশ্চয়ই অবগত হয়েছি যে, গত ১৪ মে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করার লক্ষ্যে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন এবং এরই মধ্যে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষ এবং বিদেশ-ফেরতরা যাতে স্বল্পসুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন, সেই পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এজন্য কর্মসংস্থান ব্যাংকে ২ হাজার কোটি এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে ৫০০ কোটি টাকা আমানত হিসেবে দেবে সরকার। একই সঙ্গে অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ২ লক্ষ ৯ হাজার ৬৭৪ শিক্ষার্থীর মাঝে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে উপবৃত্তি বাবদ ১০২ কোটি ৭৪ লক্ষ ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং টিউশন ফি বাবদ ৮ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

এরও অনেক আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যারা সম্মুখ সারিতে করোনাযোদ্ধা হিসেবে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে চলেছেন। প্রত্যক্ষভাবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে কাজ করা কর্মীদের জন্য বিশেষ পুরস্কার ও প্রণোদনা ঘোষণা করে তিনি ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।
এ ছাড়া তিনি মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন। দায়িত্ব পালনকালে আক্রান্তদের সম্পূর্ণ সরকারি খরচে চিকিৎসা ছাড়াও পদমর্যাদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকার এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ পাঁচ গুণ এককালীন নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জন্য ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট সংকটের কারণে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন খাতে মোট প্রায় ১ লক্ষ ১ হাজার ১১৭ কোটি টাকার ১৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।
এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে মোট ১১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারে ১৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হলো, যা দেশের মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
এই ১৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ছাড়াও এর আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের সংস্থাগুলোর জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এর পর তিনি ক্ষুদ্র শিল্প (কুটির শিল্পসহ) এবং মাঝারি শিল্পের চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনাা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রফতানিমুখী শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল, প্রবর্তিত রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সুবিধাগুলো বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, প্রাক-শিপমেন্ট ক্রেডিট পুনরায় অর্থ প্রকল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা, চিকিৎসক-নার্স এবং স্বাস্থকর্মীর জন্য বিশেষ সম্মানী ভাতা হিসেবে প্রদানের জন্য ১০০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য বীমা এবং জীবন বীমার জন্য ৭৫০ কোটি টাকা এবং খাদ্য সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ২ হাজার ৫০৩ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে কৃষিতে ভর্তুকি ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, কৃষি পুনঃতফসিল প্রকল্পে ৫ হাজার কোটি টাকা, স্বল্প আয়ের কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পুনরায় ফিনান্সিং স্কিমে ৩ হাজার কোটি টাকা, ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রি বাবদ ২৫১ কোটি টাকা, নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে নগদ বিতরণের জন্য ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা ঘোষণা দিয়েছেন। ভাতা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধির জন্য ৮১১ কোটি টাকা, গৃহহীন মানুষের ঘর তৈরি জন্য ২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা পণোদনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত ২ লাখ টন বোরো ধান/চাল ক্রয়ের জন্য ৮৬০ কোটি টাকা এবং কৃষিতে যান্ত্রিকীকণের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি সাংগঠনিক শক্তিকেও কাজে লাগিয়েছেন। তিনি গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁদের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে।
আগাম বন্যার বিষয়টি মাথায় রেখে তিনি কৃষি উপকরণ (কম্বাইন্ড হারভেস্টার) সরবরাহের পাশাপাশি কৃষকদের সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে মাঠে নামা নির্দেশ দিয়েছেন । ফলে কৃষকদের পক্ষে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে। তাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ কর্মহীন-নিরন্ন মানুষদের পাশে দাঁড়াবার জন্য বিত্তবান ব্যক্তিরা যেমন এগিয়ে এসেছেন, তেমনি প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে এসেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এরূপ নানান আত্মবিশ্বাসী, সময়োপযোগী এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে করোনাভাইরাসের ব্যাপকভিত্তিক প্রসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি লকডাউনের ফলে সংকটাপন্ন ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের দুর্ভোগের মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে মানুষের আতংকের মধ্যেই দেশ আরেকটি বিপদের মুখোমুখি হতে চলেছে। উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে নতুন এক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এই নিবন্ধ যখন লেখাকালীন সময় মংলা ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অভিজ্ঞতা থাকলেও আমফান এমন এক সময়ে আসছে, যখন দেশ লড়ে যাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় সর্বোচ্চ সতর্কতার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপকূলীয় অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে নানা সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূুর্ণঝড়ের বিষয়টি মাথায় রেখে ক্ষতিগ্রস্থ ১৯টি জেলা ধরে নিয়ে ত্রাণের জন্য আগাম চাল বরাদ্দ করা হয়েছে ৩ হাজার ১০০ মেট্রিক টন, নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫০ পঞ্চাশ লক্ষ টাকা, শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ৩১ লক্ষ টাকা, গো খাদ্য ক্রয় বাবদ ২৮ আটাশ লক্ষ টাকা, শুকনা ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দে রাখা হয়েছে ৪২ হাজার প্যাকেট এবং ১৯টি জেলায় মোট ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।।
জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামে ভরপুর রাজনৈতিক জীবনের প্রধান অবলম্বনই হলো মানুষের প্রতি তার তীব্র দায়বদ্ধতা বোধ ও গভীর দেশ প্রেম। তিনি সংগ্রামে, আন্দোলনে কিংবা সরকারি দায়িত্ব পালনে তিনি সব সময় নির্ভীক থেকেছেন । তাঁর নির্ভীকতা ও দৃঢ়তার কারণেই এই করোনাকালীন দুঃসময়ে তাঁর পক্ষে এতগুলো সঠিক, সময়োপযোগী, কার্যকর আর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে। তাঁর গৃহীত সিদ্ধন্ত ও পদক্ষেপসমূহ তিনি বাস্তবায়ন করে চলেছেন দৃঢ়তার সাথেই। তাঁর সাহসিকতাপূর্ণ এই পদক্ষেপসমূহ করোনা বিরোধী যুদ্ধের প্রথম সারির যোদ্ধাদের যেমন অনুপ্রাণিত করছে, তেমনি দেশের অপরাপর সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকেও সাহসী করে তুলেছে। সন্দেহাতীতভাবে দলপ্রধান হিসাবে তিনি যেমন সফল, তেমনি সফল সরকার প্রধান হিসাবেও। তিনি আজ সফল রাষ্ট্রনায়ক, তিনি অদ্বিতীয় । তাঁর দেশপ্রেম, নিরলস কার্যক্রম ও সাহসিকতার কারণেই তিনি দেশবাসীর কাছে সর্বজনীনভাবে আস্থাভাজন।