শিরোনাম :
সদস্যদের সমৃদ্ধি আনছে ঢাকা ক্রেডিটের পেশা প্রশিক্ষণ ঋণ
|| সুমন কোড়াইয়া ||
রনেল রেমা একজন পুরুষ নার্স। তাঁর গ্রামে বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার দাড়পাড়া ধর্মপল্লীর চালিয়াকান্দা গ্রামে। ২০০৯ সনে তিনি জয়রামকুড়া খ্রিষ্টান হাসপাতাল থেকে নার্সিং-এ চার বছরের ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেন। তাঁর মনে আরো পড়াশোনা করার ইচ্ছা জাগে। তিনি নার্সিং-এ বিএসসি করেন। তখন তাঁর টাকার প্রয়োজন হয়। তিনি ঢাকা ক্রেডিটের দারস্থ হন। সেখান থেকে তিনি ৩৬ হাজার টাকা পেশা প্রশিক্ষণ ঋণ নেন।
তিনি ধোবাউড়া সরকারি হাসপাতালে চাকরি পান। তিনি আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন। তিনি ডিসিনিউজকে বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিটের পেশা প্রশিক্ষণ ঋণটি খুবই সময়োপযোগী একটি ঋণ। যারা পেশা জীবনে উন্নতি করতে চান, তারা উচ্চতর পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণের জন্য এই ঋণ নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন।’
ঢাকা ক্রেডিটের পেশা প্রশিক্ষণ ঋণ বেকারদের দেখাচ্ছে নতুন স্বপ্ন। বেকার যুবক-যুবতীরা পেশা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন। তাদেরই একজন আদিবাসী সদস্য প্লাবন লাকরা পল। তাঁর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশের মারিয়ামপুর ধর্মাল্লীতে। তিনি এইচএসসি পরীক্ষার পর বেকার ছিলেন বেশ কিছু দিন। এরপর নিজের কর্মসংস্থানের কথা ভেবে ঢাকা ক্রেডিট-নিটোল টাটা আয়োজিত দ্বিতীয় ব্যাচে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষণ নেন। তিনি ডিসিনিউজকে বলেন, ‘আমি ২০ হাজার টাকা পেশা প্রশিক্ষণ ঋণ নিয়ে ডাইভিং শিখেছি। এর পর চাকরি পেয়েছি। আমার বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করায় আমি ঢাকা ক্রেডিটের নিকট কৃতজ্ঞ।’ প্রসঙ্গত, ঢাকা ক্রেডিট-নিটোল টাটা আয়োজিত ড্রাইভিং প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জন এবং তারা নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
সৈকত পান্ডের গ্রামের বাড়ি হালুয়াঘাটের বিড়ইডাকুনী ধর্মপল্লীতে। তিনি মার্চেন্টাইজিং শেখার জন্য ঢাকা ক্রেডিট থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। কাজ শিখে তিনি এখন৩৮ ভালো চাকরি করছেন। উপার্জনও ভালো করছেন।
নওগাঁর আদিবাসী সদস্য দানিয়েল লাকরা বুয়েট থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনিও পড়াশোনা করার জন্য ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ইতিমধ্যে শোধ করেছেন। বর্তমানে চাকরি করছেন মিরপুরের ডিওএইচএইচ-এ।
গারো আদিবাসী নারী নার্স অনামিকা রেমা চাকরি করেন মহাখালীর সরকারি প্রতিষ্ঠান বক্ষব্যধি হাসপাতালে। তিনি নার্সিং-এ বিএসসি করার জন্য ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। তিনি বলেন, ঢাকা ক্রেডিট থেকে পেশা প্রশিক্ষণ ঋণ নিয়ে তাঁর অনেক উপকার হয়েছে। তাঁর মতো যারা নিজেকে স্বাবলম্বী, দক্ষ ও বেশি উপার্জন করতে চান, তারা ঢাকা ক্রেডিটের পেশা প্রশিক্ষণ ঋণ নিয়ে নিজেদের এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
অনামিকা, দানিয়েল, সৈকত, রনেল ও প্লাবনের মতো ঢাকা ক্রেডিট থেকে এ পর্যন্ত ৯৬ জন পেশা প্রশিক্ষণ ঋণ নিয়েছেন। তারা সকলেই এখন স্বাবলম্বী ও জীবনে প্রতিষ্ঠিত। তাঁদের জীবনে এসেছে সমৃদ্ধি ও স্বচ্ছলতা।
পেশা প্রশিক্ষণ ঋণের উদ্দেশ্য: ঢাকা ক্রেডিটের পেশা প্রশিক্ষণ ঋণের মাধ্যমে সমিতির সদস্যগণ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন।
বৈশিষ্ট্য: আবেদনকারীর শেয়ারের পরিমাণ নূন্যতম ৩,০০০ টাকা থাকতে হবে।
আবেদনকারী বর্তমানে ২০ গুণ পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন, তবে তা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
কোর্স সমাপ্ত হওয়ার ছয় মাস পর থেকে তিন বছর বা ৩৬ সম-কিস্তিতে ১২% হারে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
শর্তসমূহ
– ঋণ আবেদনকারীকে ঢাকা ক্রেডিট-এর নিয়মিত সদস্য হতে হবে।
– ঋণের আবেদনকারীকে কমপক্ষে এসএসসি পাশ হতে হবে। তবে বায়িং ও ফটোগ্রাফি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কমপক্ষে স্নাতক শ্রেণি পাশ করতে হবে। জুনিয়র নার্সিং, ডাইভিং ও ক্যাটারিং প্রশিক্ষণের জন্য কমপক্ষে ৮ম শ্রেণি পাশ হতে হবে।
এই ঋণের জন্য যোগাযোগ করতে হবে ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান কার্যালয় বা এর এলাকাভিত্তিক সেবাকেন্দ্রগুলোতে।