ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা Uncategorized সমবায়ীদের জন্য প্রণোদনা এখন জরুরি

সমবায়ীদের জন্য প্রণোদনা এখন জরুরি

0
428

স্বপন রোজারিও
মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) -এর ফলে বাংলাদেশসহ বিশে^র অর্থনীতি চরমভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। পৃথিবীর সুপার পাওয়ার হিসেবে পরিচিত খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের অর্থনীতি এই করোনার ফলে একেবারে ভেঙে পড়েছে, চাকরি থেকে ছাঁটাই হয়েছে লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ।

বাংলাদেশের অবস্থাও কোনো অংশে ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমবায় খাতও। এই মহামারিতে অনেক সমবায়ী চাকরি হতে ছাঁটাই হয়েছেন। অনেকের ব্যবসায় মন্দাভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। টাকার অভাবে অনেক সমবায়ী আবার ঋণগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেক সমবায়ী তাদের শেষ সম্বল ভিটে-মাটি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামে পাড়ি জমাচ্ছেন। হাতে টাকা না থাকার কারণে অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করে কোনোভাবে বেঁচে থাকার জন্য সমবায়ীরা তাদের জমানো টাকা তুলে নিচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে সমিতিতে প্রাতিষ্ঠানিক মূলধন বিপুলহারে কমেছে। আবার কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিক বিনিয়োগের সুযোগ না থাকার কারণে তারল্য সংকট বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার দীর্ঘ লকডাউনের ফলে সদস্যদের আয় শূন্যের কোঠায় গিয়ে পৌঁছেছে। ফলশ্রুতিতে সমিতির ঋণপ্রবাহ একেবারে কমে গেছে; অর্থাৎ সদস্যরা ঋণ নিতে উৎসাহিত হচ্ছেন না বা আয় না থাকার কারণে ঋণ নেয়ার জন্য কোয়ালিফাই করছেন না।

অন্যদিকে সদস্যদের কাজ না থাকার ফলে আয়-রোজগারহীনভাবে থাকার কারণে সদস্যরা ঋণের কিস্তি ও সুদ স্বাভাবিকভাবেই ফেরৎ দিতে পারছেন না। সমিতি সদস্যদের নিকট থেকে এফডিআর হিসেবে যে টাকা এনেছে বা ক্রয় করেছে তার সুদ কিন্তু সমিতি কোনো সদস্যকে কম দিতে পারবে না। অন্যভাবে বলতে গেলে, কোনো সদস্যই তার এফডিআর-এর বিপরীতে কম সুদ বা মুনাফা গ্রহণ করবেন না। অথচ সমিতির যে প্রধান ও একমাত্র আয় ঋণের বিপরীতে মুনাফা বা সুদ তা সমিতির সদস্যরা ঠিকমত সমিতিতে ফেরৎ দিতে পারছেন না। ফলে খেলাপির হার ব্যাপক হার বাড়ছেই। এভাবে খেলাপির হার বেশি বৃদ্ধি পেলে সমিতি একসময় আর চলবে না।

এ ছাড়াও সমবায় সমিতি অন্যকোনো কল-কারখানার মতো এতো সহজেই কর্মী ছাঁটাই করে না। ফলে এ খারাপ পরিস্থিতিতেও সমিতিতে অপারেটিং কষ্ট কমানোর কোনো সুযোগই আসলে নেই। দেশের অনেক সমিতি সদস্যদের স্বাস্থ্যনিরাপত্তা প্রদান করে আসছে। এই পরিস্থিতিকে স্বাস্থ্যনিরাপত্তা খাতেও সমিতি ব্যয় বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই করোনা মহামারিতে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বেড়েছে অনেকগুণ। এই রোগের প্রাদুর্ভাবে অনেক সদস্য মৃত্যুবরণও করেছেন।

করোনা পরিস্থিতিতে যদি সমিতির সদস্যই না থাকে; তাহলে সমিতি চলবে কী করে? মহামারির এই পরিস্থিতিতে নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন ১ কোটির বেশি সমবায়ী এবং ৯ লাখের অধিক সমবায় কর্মকর্তা ও কর্মী।

বাংলাদেশের সংবিধানে সমবায় খাতকে উন্নয়নের দ্বিতীয় খাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সমবায়ীদের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে তাদের জন্যও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হোক এবং সমিতির উপর আরোপিত ১৫% আয়কর প্রত্যাহার করা হোক। একইসাথে সময় এসেছে সিডিএফ (কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট ফান্ড) থেকে সমবায়ীদের অনুদান প্রদান করারও।

সমবায় কর্মী, ঢাকা