ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ঢাকা ক্রেডিট সর্বসাধারণের জন্য ‘পাপা মোবিল’ উন্মুক্ত হলো

সর্বসাধারণের জন্য ‘পাপা মোবিল’ উন্মুক্ত হলো

0
733

কার্ডিনাল প্যাট্রিক বলেন, ‘পোপ বলেছিলেন, দামি দামি গাড়িতে আমি চড়বো না। তিনি সফরের সময় সব ধরণের সাধণ জিনিসের আয়োজন করতে বলেছিলেন। পোপ জন পলের আগমনের সময় বাংলাদেশে ভাতিকান থেকে গাড়ি নিয়ে আসা হয়েছিল এবং তখন অনেক ব্যয় হয়েছিল। তখন তা ছিল বুলেটপ্রুফ। কিন্তু পোপ ফ্রান্সিস বুলেটপ্রুফ গাড়ি চাননি।’

তিনি বলেন, ‘এবারের গাড়িটি ভাতিকানে পাঠিয়ে দিতে হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো কথা জানায়নি। পরে জানতে পারি, গাড়িটি যারা দিয়েছে তারা ফেরৎ চায় এবং তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে রাখবে। তা শুনে আমি খুশি হয়েছিলাম। প্রথমে আমরাই এটা সংরক্ষণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যেহেতু ঢাকা ক্রেডিট এটা করবে, তাই আমরা খুশি হয়েছি এরকম একটি ইতিহাসকে সংরক্ষণ করার জন্য। এ জন্য ঢাকা ক্রেডিটকে ধন্যবাদ। গাড়ির মাধ্যমে পোপ মহোদয় আমাদের কাছে এসেছেন, এখন এই গাড়িই তাকে সব সময় আমাদের কাছে রাখবেন। এই গাড়ি যতদিন থাকবে, পোপ মহোদয়ের উদ্দেশ্যও ঠিক থাকবে, মানুষের কাছে থাকার উদ্দেশ্য। ঢাকা ক্রেডিটের এই মহান কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।

ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ বলেন, ‘আজ আমরা এখানে যারা উপস্থিত, তারা সবাই একটি ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী। আজ পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস কর্তৃক ব্যবহৃত ‘পাপা মোবিল’টি সকলের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।’

তিনি জানান, ‘মূলত এই গাড়িটি ঢাকা ক্রেডিটের সার্পোট স্টাপ এবং সমবায় বাজারের জন্য ব্যবহার করা হতো। সেই গাড়িটিই আজ পোপের পদধুলিতে পুণ্য হয়ে উঠেছে। ভাতিকানে বিভিন্ন মডেলের গাড়ি পোপ ফ্রান্সিসকে ব্যবহারের জন্য দেখানো হয়েছি, কিন্তু কোনো গাড়িই তিনি পছন্দ করেননি। শেষে মন্ডলী আমাদের এই ব্যবহৃত লেগুনা গাড়িটি দেখানোর পর, পোপ ফ্রান্সিস এটাই ব্যবহার করবেন বলে সম্মতি জানান। আমরা আজ তাঁর ব্যবহৃত গাড়িটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে যাচ্ছি।’

‘মন্ডলী চাইলে আমরা রক্সাটাও সংরক্ষণ করতে চাই। শুধু তাই নয়, পোপের উপর যে সংগ্রহশালা করা হবে, সেক্ষেত্রেও আমরা সহযোগিতা দিব।’ বলেন প্রেসিডেন্ট গমেজ।

আর্চবিশপ কোচেরী বলেন, ‘আমি মনে করি ঢাকা ক্রেডিট একটি সততার জায়গা। আমি ঢাকা ক্রেডিটের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। ঢাকা ক্রেডিট পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফরে ব্যবহারের জন্য এই গাড়িটি দিয়েছিল। আজ ঢাকা ক্রেডিট নিজস্ব স্থানে তা প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছে, এই মহতী উদ্যোগের জন্য ঢাকা ক্রেডিটকে ধন্যবাদ জানাই। পোপের সফরের তার ব্যবহারের জন্য গাড়ির প্রয়োজনের জন্য চেষ্টা করেও কিছু করা যায়নি, তখন আমি ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজকে ফোন দেই এবং সহযোগিতা চাই। কারণ আমার জানা ছিলো, সে ভিন্ন ধরণের ধারণা দিয়ে সহযোগিতা করবেন। তখন সে আমাদের এই গাড়িটির কথা বলেন এবং আশ্চার্যজনকভাবে এটাই ভাতিকান পোপীয় দপ্তর পছন্দ করে। পোপের সফরে ঢাকা ক্রেডিট উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা দিয়েছে। পোপের সফরের ট্রান্সপোর্ট থেকে শুরু করে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঢাকা ক্রেডিট সহযোগিতা করেছে।

বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও বলেন, ‘এটা একটি সত্যিকারের ঐতিহাসিক মুহুর্ত। আমাদের বিশ্বাস মতে, পোপের ব্যবহৃত গাড়িটি একটি পবিত্র জিনিস। ঢাকা ক্রেডিটের রিসোর্ট এন্ড ট্রেনিং সেন্টারে এর প্রতিস্থাপনের জন্য এটিও একটি পবিত্র স্থান হয়ে উঠবে। এর মাধ্যমে পোপ ফ্রান্সিস যুগ যুগ ধরে এখানে বেঁচে থাকবেন।’

২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বেলা ৪টায় মঠবাড়ির কুচিলাবাড়ীতে ঢাকা ক্রেডিট রির্সোটে পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস কর্তৃক ব্যবহৃত ‘পাপা মোবিল’ সর্বসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজরিও সিএসসি, গেস্ট অব অনার ছিলেন বাংলাদেশস্থ ভাতিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরী, সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা।

আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, সেক্রেটারি জেনারেল হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, ঢাকা ক্রেডিটের ভাই-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেস্টার গমেজ, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তণ প্রেসিডেন্ট হিউবার্ট গমেজ, ঢাকা ক্রেডিটের পরিচালনা পর্ষদসহ হাজারো খ্রিষ্টভক্ত।

এ সময় অন্যান্যরা বলেন, ‘মঠবাড়িতে ঢাকা ক্রেডিট রিসোর্ট এন্ড ট্রেনিং সেন্টারে সব সময়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ট্রেনিং হয়ে থাকে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোপের ব্যবহৃত গাড়িটি রাখার জন্য ঢাকা ক্রেডিটকে ধন্যবাদ জানাই। এটা একটি খুবই ভাল উদ্যোগ। এই জায়গাটি একটি পবিত্র জায়গা হয়ে উঠছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পোপের ভালবাসা এবং প্রেমের বহিপ্রর্কাশ হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, সভাপতি, গেস্ট অব অনার সর্বসাধারণকে সাথে নিয়ে ‘পাপা মোবিল’টি সকললের জন্য উন্মুক্ত করেন।

 

আরবি/আরপি/৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮