শিরোনাম :
হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জলের কুয়ো
দিন দিন কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নলকূপ বা কুয়ো। আশির দশকেও বাড়ির আঙ্গিনায় তৈরি কুয়োগুলো ছিল বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানির একমাত্র উৎস। জনজীবনের আধুনিকায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে পানীয় ও ব্যবহার্য পানির উৎস বা ব্যবস্থা পরিবর্তন হয়ে গেছে।
বর্তমানকালের সাপ্লাই পানি বা টিওবয়েলের পানি আর্সেনিক বা বিভিন্ন জীবাণুর ঝুঁকি থাকলেও পুরানো দিনের কুয়োর পানিতে এরকম ঝুঁকি ছিল না বললেই চলে।
সম্প্রতি আগের মত আর এসব কুয়োর পানি ব্যবহার হয় না, তবে কিছু কিছু স্থানে এখনো এসব ঐতিহ্যবাহী কুয়োর দেখা মেলে। তাছাড়া এই উৎসের পানি ব্যববহারও করছে কয়েক জায়গায়।
তবে কালের আর্বতে গ্রামঅঞ্চলসহ বিভিন্ন শহর, বিশেষ করে পুরান ঢাকার এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কুয়োগুলো ব্যবহার না করার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে। নিয়মিত যত্ন ও পরিচ্ছন্নতার অভাবে সেসব কুয়োগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। হয়তো এগুলোও এক সময় ব্যবহার না করার কারণে বিলীন হয়ে যাবে।
ভিন্নচিত্র চোখে পড়লো মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলোতে। মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেল এখনো সেখানকার মানুষ পুরানো দিনের কুয়োরে পানি নিজেদের প্রয়োজনে ও পান করার কাজে ব্যবহার করছে।
বিশেষ করে মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলোতে কাজের সময় এই কুয়োর পানিই পান করে শ্রমিকরা। তবে এখানে ঝুঁকি থেকেই যায়। কুয়োগুলো সরেজমিনে দেখে তা কতটুকু বিশুদ্ধ ও নিরাপদ তা ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিস্কার করা হয়না কুয়োগুলো, খোলা-মেলাভাবে রেখে দেয়ার ফলে ধূলো-বালির আস্তারণে পরিনত হয়েছে, লত-পাতা কুয়োতেই পড়ে পঁচে যায়। এই পানির কারনেই প্রতিনিয়ত চা শ্রমিকের নানা ধরনের পানি বাহিত রোগ হয়ে থাকে।
তবে মৌলভীবাজারের খাসিয়া পঞ্জিতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নভাবেই কুয়োর পানি ব্যবহার করে যাচ্ছে। এখানে এখনো খাসিয়াদের যত্নে টিকে রয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বিশুদ্ধ জলের একমাত্র উৎস নলকূপ বা কুয়ো।
আরবি.আরপি.১৮ এপ্রিল, ২০১৮