শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিটের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন স্বর্গীয় ফাদার ইয়াং ও প্রাক্তন কর্মকর্তারা
ঢাকা ক্রেডিটের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তেজগাঁও গির্জায় প্রয়াত ফাদার চার্লস জে. ইয়াং সিএসসি এবং প্রয়াত কর্মকর্তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ঢাকা ক্রেডিটের কর্মকর্তা, উপদেষ্টা, কর্মী এবং সদস্যরা।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ৩ জুলাই মঙ্গলবার সকাল ৭টায় তেজগাঁও গির্জায় বিশেষ খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করা হয়। খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন ফাদার রিপন আন্তনী রোজারিও।
খ্রিষ্টযাগে প্রারম্ভিক প্রার্থনায় শ্রদ্ধাভরে ফাদার চার্লস জে. ইয়াং এবং প্রয়াত সকল কর্মকতাদের অবদানের কথা স্মরণ করা হয়।
ফাদার রোজারিও তার বাণী সহভাগিতায় বলেন, ‘ফাদার চার্লস ইয়াং যে স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা ক্রেডিটের যাত্রা শুরু করেছিলেন, বর্তমান কর্মকর্তরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এটা গৌরবের বিষয়। তিনি আরো বলেন সাধু পল যেমন নিজের এলাকার বাহিরে বাণী প্রচার করেছিলেন, তেমনি ফাদার চার্লস সুদূর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসে ক্রেডিট ইউনিয়নের বাণী প্রচার করেছিলেন।’
যে স্বপ্ন, আদর্শ, সত্য ও চেতনা নিয়ে ফাদার চার্লস সমবায়ের যাত্রা শুরু করেছিলেন, বর্তমান কর্মকর্তাদের সেই আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাবার অনুরোধ ও আহবান জানান ফাদার রিপন।
খ্রিষ্টযাগের পর সমিতির প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজের নেতৃত্বে ফাদার ইয়াংয়ের কবরের সামনে সমবেত হন সকল কর্মকর্তা, উপদেষ্টা, কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা। কবরে প্রার্থনা করেন সমিতির প্রাক্তন সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল হেমন্ত আই. কোড়াইয়া। এরপর প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মকর্তা, উপদেষ্টা, শুভানুধ্যায়ী, কর্মী ও সদস্যরা ফাদার ইয়াংয়ের কবরসহ সমিতির অন্যান্য প্রয়াত কর্মকর্তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
প্রার্থনা সঞ্চালনা করেন সমিতির সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কাককোর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও বলেন, ‘আজ আমাদের অনেক কৃতজ্ঞতা, আনন্দ এবং গর্বের দিন। কারণ, ৬৩ বছর পূর্বে ফাদার চার্লস জে. ইয়াং এই ক্রেডিট ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বর্তমানে এই সমিতি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রেডিট ইউনিয়নে পরিণত হয়েছে।’
‘ঢাকা ক্রেডিট শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে একদিন পরিচিত হবে এবং মানুষের আর্থিক উন্নয়নে সহায়তা করবে,’ মন্তব্য করেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ। তিনি প্রয়াত সকল কর্মকর্তাদের আত্মার চিরশান্তি কামনা করে
প্রার্থনা করেন। এরপর তিনি বিকাল ৫টায় খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে সকল সদস্যকে আমন্ত্রণ জানান ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণিল আয়োজনে।
খ্রিষ্টযাগের পর তেজগাঁও কবরস্থানে যে সকল প্রাক্তন কর্মকর্তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় তারা হলেন: প্রতিষ্ঠাতা স্বর্গীয় ফাদার চার্লস জে. ইয়াংসহ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় ডানিয়েল কোড়াইয়া, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় টি ডি রোজারিও, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় অরুণ বার্ণাড ডি’ কস্তা, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় অধ্যাপক গাব্রিয়েল মানিক গমেজ, প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় আরনল্ড অরুণ গমেজ, প্রাক্তন সেক্রেটারি স্বর্গীয় খ্রীষ্টফার গমেজ, প্রাক্তন সেক্রেটারি স্বর্গীয় এন্ড্রু ডি’কস্তা, প্রাক্তন ম্যানেজার স্বর্গীয় জন পি. কস্তা, প্রাক্তন ট্রেজারার স্বর্গীয় আইজাক গমেজ, প্রাক্তন ট্রেজারার স্বর্গীয় স্ট্যানলী টেনু গমেজ, প্রাক্তন ডিরেক্টর স্বর্গীয় আলেকজান্ডার রোজারিও।
এ ছাড়াও ওয়ারি কবরস্থানে যাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় তারা হলেন: প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় জোনাস রোজারিও, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় পিটার পল গমেজ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় পিটার এম. কস্তা, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় অ্যাড. লাফন্ড গমেজ, প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট স্বর্গীয় যোসেফ এইচ কস্তা, প্রাক্তন সেক্রেটারি স্বর্গীয় আন্দ্রেজ গমেজ, প্রাক্তন সেক্রেটারি স্বর্গীয় জাখারিয়াস কস্তা, প্রাক্তন সেক্রেটারি স্বর্গীয় স্কলাষ্টিকা সুনীলা কস্তা, প্রাক্তন সেক্রেটারি স্বর্গীয় রাফায়েল জে. কোড়াইয়া, প্রাক্তন ম্যানেজার স্বর্গীয় সিরিল রোজারিও, ক্রেডিট কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্বর্গীয় ইগ্নাসিয়াস এ গমেজ (মনু)।
এ দিন খ্রিষ্টযাগে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ, সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ডিরেক্টর আনন্দ ফিলিপ পালমা, রতন পিটার কোড়াইয়া, সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য ষ্টেলা হাজরা, সদস্য পাপড়ি আরেং, খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সংগ্রামী মহাসচিব হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, প্রাক্তন কর্মকর্তা, উপদেষ্টা এবং সদস্যবৃন্দ।
এদিন সকালে ওয়ারি কবরস্থানে সমিতির সিও সুদান গাইন ও জোনাস গমেজ-এর নেতৃত্বে ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীরা প্রয়াত কর্মকর্তাদের কবরে পূষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫ সালে পুরান ঢাকার লক্ষীবাজার চার্চে ২৫ টাকা মূলধন নিয়ে ৫০ জন সদস্য এই প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। সমিতির অফিস ও অন্যান্য প্রকল্প পরিচালনার জন্য রয়েছে ৭টি নিজস্ব বহুতল ভবন, সঞ্চয় ও ঋণ এবং প্রকল্পসেবাসহ মোট ৭৪টি প্রডাক্টস ও প্রায় ৫০০ কর্মী।
আরপি.আরবি.৩ জুলাই ২০১৮