শিরোনাম :
সমবায় আন্দোলনের বর্ষীয়ান নেতা হিউবার্ট গমেজের ৮৬তম জন্মবাষির্কী পালন
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা:
সমবায় আন্দোলনের বর্ষীয়ান নেতা ও ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিউবার্ট গমেজের ৮৬তম জন্মদিন পালন করলো ঢাকা ক্রেডিট পরিবার।
২০ নভেম্বর, রাত ৮টায় ঢাকা ক্রেডিটের বিকে গুড কনফারেন্স হলে শ্রদ্বেয় হিউবার্ট গমেজের উপস্থিতিতে কেক কেটে আনন্দঘন পরিবেশে এই জন্মদিন উৎসবের আয়োজন করা হয়।
জন্মদিনের এই আনন্দ অনুষ্ঠানে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ, সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, প্রাক্তন সেক্রেটারি হেমন্ত আই কোড়াইয়া, ঢাকা ক্রেডিটের পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্বেয় হিউবার্ট গমেজ ৮৬তম জন্মদিন পালন করতে পারছেন এবং তিনি এই বয়সে এখনো সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে সবকিছু করতে পারছেন বলে অতিথিরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানান এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
তিনি ঢাকা ক্রেডিটের যেকোনো কার্যক্রম ও সমবায় আন্দোলনের সাথে এখনো সমানতালে সমর্থন দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও অতিথিরা হিউবার্ট গমেজকে কৃতজ্ঞতা জানান।
[wp1s id=”10491″]
এ সময় হিউবার্ট গমেজ ঢাকা ক্রেডিটকে কৃতজ্ঞতা জানান জন্মদিনের আয়োজন করার জন্য। যে কয়দিন বেঁচে থাকবেন, সেই দিনগুলোতে যেন ঢাকা ক্রেডিটের মহতী উদ্যোগের সাথে থাকতে পারেন, সমাজের কল্যাণ করতে পারেন এবং পরিবার পরিজন নিয়ে যেন ভাল থাকেন সকলের কাছে তিনি সেই প্রার্থনা করার আহ্বান জানান।
১৯ নভেম্বর ১৯৩৪ সালে নবাবগঞ্জের গোল্লা ধর্মপল্লীর যোসেফ গমেজ ও ডমিন্ডা গমেজের কোল জুড়ে জন্ম নেন হিউবার্ট গমেজ। স্ত্রী সুজনা কিরণ গমেজ প্রয়াত হয়েছেন। এক ছেলে, এক মেয়ে ও নাতি-নাতনি নিয়ে তার পরিবার।
গোল্লার সেন্ট লরেন্স প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। বান্দুরা হলিক্রস হাইস্কুল অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে পুরান ঢাকার সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল থেকে ১৯৫৪ সালে এসএসসি, লক্ষ্মীবাজারের কাইদে আযম কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে এইচএসসি ও একই কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বি.কম পাস করেন।
আতাখান এন কোম্পানিতে সি.এ.ফার্মে পড়াশোনা শুরু করেন এবং ওই ফার্মের মাধ্যমে তিনি হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের অডিট এবং চিফ একাউনটেন্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে ১১ বছর কাটান। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চাকরি চলাকালীন সময়ে একটি ছোট বেকারী ব্যবসা ছিল, তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিজের বেকারী ব্যবসা প্রসারের কাজ করেন।
তিনি আমেরিকান এ্যাম্বাসিতে একাউনটেন্ট এবং অডিটর, ফ্রেন্ডস এন্ড বাংলাদেশ’ এনজিওর পরিচালক, খ্রিস্টান ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস-এ কনসালটেন্ট হিসেবেও কাজ করেন। তার নিজের রিক্রুটিং এজেন্সির ব্যবসায়ও করেন।
১৯৭২ সাল থেকে তেজগাঁও বটমলী হোমস গার্লস স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, তেজগাঁও ধর্মপল্লীর পালকীয় পরিষদে ভাইস-প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি এবং সদস্য হিসেবে, ১৯৮০-৮৩ সাল পর্যন্ত হলিক্রস গালর্স হাইস্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ছিলেন।
ঢাকা ক্রেডিটে তিনি ১৯৬২-৬৩, ১৯৬৩-৬৪, ১৯৬৪-৬৫, ১৯৮৮-৯০ সাল পর্যন্ত এই চার মেয়াদে ডিরেক্টর, ১৯৯০-৯৩ সাল ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং ১৯৯৩-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সেবা দেন। সমবায়ে অবদান রাখার জন্য ১৯৯২ সালে জাতীয় সমবায় পুরস্কার হিসেবে স্বর্ণপদক পান। ১৯৯৭-২০০০ সালে তিনি দি মেট্রাপলিটন হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান এবং ২০০০-২০০৬ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে গোল্লা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৯৭৭ সালে দি খ্রীষ্টান কো- অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য ডানিয়েল কোড়াইয়া তাঁর কাছে আসেন পরামর্শ করার জন্য। তিনি কোড়াইয়ার সুন্দর প্রস্তাবে রাজি হন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। তিনি তৎকালীন তেজগাঁও চার্চ কমিউনিটি সেন্টারের ভবন নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
হিউবার্ট গমেজ ১০ বছর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদস্য প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি এর অন্যতম সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস- প্রেসিডেন্ট, ট্রেজারার হিসেবে কাজ করেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল ঢাকা ক্রেডিটের নেতৃবৃন্দ হিউবার্ট গমেজের বাসায় তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
ছবি: হিমেল রোজারিও
































































