ঢাকা ,
বার : বৃহস্পতিবার
তারিখ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ১১ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ ধরেন্ডা ক্রেডিটের ৩১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ধরেন্ডা ক্রেডিটের ৩১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

0
410

ডিসিনিউজ:
ধরেন্ডা খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি: এর ৩১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ সাভারে ধরেন্ডার গির্জা প্রাঙ্গণে।
সমিতির প্রেসিডেন্ট মাইকেল জন গমেজের সভাপতিত্বে বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধরেন্ডা কাথলিক ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার আলবাট টমাস রোজারিও। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডিন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ, সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ধরেন্ডা সমিতির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও ও মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া, ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার বিপুল লরেন্স গমেজ, ডিরেক্টর পিটার রতন কোড়াইয়া, আলবার্ট আশিস বিশ^াস ও ধরেন্ডা সমিতির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা ক্রেডিটের ডিরেক্টর আগষ্টিন প্রতাপ গমেজ, ধরেন্ডা সমিতির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিলাস বি গমেজ, সমিতির উপদেষ্টা ও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট লরেন্স রোজারিও, ধরেন্ডা সমিতির উপদেষ্টা ও সাভার ওয়াইএমসিএ’র প্রেসিডেন্ট তপন টমাস রোজারিও, সেন্ট যোসেফ স্কুল এন্ড কলেজ, ধরেন্ডা, সাভার এর প্রিন্সিপাল সিস্টার মেরি নমিতা, এসএমআরএ, ধরেন্ডা খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি: এর উপদেষ্টাবৃন্দ, বর্তমান প্রাক্তন কর্মকর্তাবৃন্দ। এ ছাড়া সমিতির প্রায় সাড়ে চার হাজার ক্রেডিট ও সঞ্চয়ী হিসাবধারী উপস্থিত ছিলেন।

[wp1s id=”10656″]
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফাদার আলবাট টমাস রোজারিও বলেন, ‘ধরেন্ডা সমিতি ফাদারদের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক রেখে কাজ করে তাই তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
মাইকেল জন গমেজ তাঁর বক্তব্যে বলেন, আপনারা অবগত আছেন সমবায়ের আভিধানিক অর্থ শুধুমাত্র অর্থের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। এর অর্থ ব্যাপক ও কল্যাণকর। শুধুমাত্র নিজে ভাল থাকলে, নিজের উন্নয়ন ঘটালে, উন্নয়নের স্বার্থকতা পায় না। তাই বর্তমানে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রেডিট ইউনিয়নের মাধ্যমে সকল সদস্যদের সামাজিক, শিক্ষা-সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নয়ন ঘটানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ তিনি তার বক্তব্যে সমিতির কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরেন।
বাবু মার্কুজ গমেজ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে আমদের সন্তানদের জন্য। কারণ তাদের ভবিষ্যৎ যদি গড়ে দিতে না পারি তাহলে আমাদের অর্জন বৃথা যাবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা ক্রেডিট পূর্ব পুরুষদের কীর্তিতে গর্বিত। তাই ঢাকা ক্রেডিট সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাভারে একটি বিল্ডিং এর নাম সাভারের সন্তান ও ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেডিডেন্ট ‘নির্মল রোজারিও’র নামে করবে।
সমবায় সমিতিগুলোতে ঋণ খেলাপি বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন নির্মল রোজারিও। তিনি বলেন, ‘বিশ্লেষণ না করে আমরা ঋণ গ্রহণ করি। ঋণ নিলে যে রেহাই পাওয়া যায় না। তাই ঋণ নেওয়ার আগে দশ বার ভাববেন। যে ঋণ নিবেন তা ফেরত দিতে পারবেন কিনা সেটা বিবেচনা করে ঋণ নিবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘পিতা-মাতা ঋণ খেলাপি হলে সেই পরিবারের সন্তানদের জন্য বড় অন্তরায় হয়। সন্তানরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।’
নির্মল রোজারিও বলেন, সাভারে টিকে থাকতে হলে শিক্ষা গ্রহণ করার পাশাপাশি ব্যবসার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
পংকজ গিলবার্ট কস্তা বলেন, ধরেন্ডা ছোট একটি ধর্মপল্লী। ধরেন্ডা ক্রেডিটের বৃদ্ধি খুব ভালো। তবে আমরা বিভিন্ন কারণে ঋণগ্রস্ত হচ্ছি। আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব না করার কারণে আমরা ঋণগ্রস্ত হচ্ছি। এই অবস্থা ক্রমাগতভাবে চলতে থাকলে সমবায় সমিতিগুলো হুমকির সম্মুখিন হচ্ছি। অলাভজনক খাতে ঋণ বেশি দেওয়ার কারণে ঋণগ্রস্ত হচ্ছি। এই সমবায়কে শুধু মাত্র ঋণ আদায়ের বাইরে গিয়ে কার্যক্রম করতে হবে।
সিস্টার মেরি নমিতা, এসএমআরএ তাদের কলেজে ধরেন্ডা ক্রেডিটের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই সমিতিটি আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন, তাই তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই।
লরেন্স রোজারিও বলেন, ঋণ দেওয়ার আগে ভালভাবে যাচাই বাছাই করে ঋণ দেওয়া উচিত যেন ভবিষ্যতে ঋণ লেখাপির সংখ্যা আর বৃদ্ধি না পায়।
‘সন্তানদের শিক্ষার জন্য বেশি করে বিনিয়োগ করা উচিত,’ বলেন হেমন্ত আই কোড়াইয়া। তিনি ধরেন্ডা সমিতিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই সমিতি শুধু ঋণ দেওয়া নেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছে, তাই নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের অভিনন্দন জানাই।
ঋণ খেলাপি রোধে একযোগে কাজ করার কথা বলেন আগষ্টিন প্রতাপ গমেজ। তিনি বলেন, আমরা যারা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রয়েছি, আমরা দেখছি ধরেন্ডা সমিতি ভালভাবে চলছে, তাই আমরা খুশি। আমরা যদি সম্মিলিতভাবে ঋণ খেলাপি বন্ধে কাজ করছি তাহলে ঋণ লেখাপি সমস্যা সমাজ থেকে দূর হবে।
অরেন্ডা সমিতিটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে ফাদার লিউ জে. সালিভ্যান, সিএসসির মধ্য দিয়ে। বর্তমানে এই সমিতিতে রয়েছে ৩২৮২ জন ক্রেডিট সদস্য, ৫৫৪১ জন সঞ্চয়ী আমানতকারী সদস্য। সমিতিতে রয়েছে ৮৪ কোটি টাকার সম্পদ-পরিসম্পদ। সমিতিটি বিগত বছরে ষোল কোটি একচল্লিশ লক্ষ উনচল্লিশ হাজার ছয় শত একষট্টি টাকা সদস্যদের মধ্যে ঋণ প্রদান করেছে। ধরেন্ডা সমিতি সদস্যরা ব্যবসা, জমিক্রয়, ঘর তৈরি, বিদেশ যাত্রা, চিকিৎসা, শিক্ষা খরচ, আসবাবপত্র ক্রয় ও কৃষি কাজের জন্য ঋণ নিয়েছেন বিগত অর্থ বছরে।

ছবি: শমিত ক্রুজ