শিরোনাম :
বড়দিনে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ডিসিনিউজ:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, ‘বড়দিনে গির্জা ও খ্রিষ্টান অধ্যূষিত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।’ আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বড়দিন ও থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইন-শৃঙ্খলা শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করবো যেন আপনারা বড়দিনের আনন্দভালোভাবে করতে পারেন। সভায় বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানগণ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণসহ বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের ২০ জন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও বলেন, ‘বড়দিন আমাদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। বড়দিন যেন ভালোভাবে উদযাপন করা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে যেন নিরাপত্তা দেওয়া হয় এই অনুরোধ করি।’ তিনি জানান, ঢাকায় ৯০টি গির্জা আছে। এ ছাড়া সারা দেশে ৩৫০০ গির্জা আছে। বিগত সময়ে যখনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়, তখনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সহযোগিতা করেছেন।
নির্মল রোজারিও আরো বলেন, ‘বাউল শিল্পী সুবাস রোজারিও নিখোঁজ হওয়ার পর, মানেনীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা চাওয়া হয়, তিনি পুলিশের মধ্য দিয়ে সুবাসকে খোঁজে পেতে সহযোগিতা করেন, তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। এ ছাড়া যখনই কোন সমস্যা নিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সহযোগিতা করেছেন, তাই তাকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’
বিশপীয় ন্যায় ও শান্তি কমিশনের সেক্রেটারি ও নটর ডেম কলেজের শিক্ষক ফাদার লিটন গমেজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বড়দিনের পর খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। তখন যেন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।’
সভায় র্যাবের মহা পরিচালক বেনজির আহমেদ বড়দিন ও থার্টি ফাস্ট নাইটে ফেসবুক ব্যবহার সতর্কতার সাথে করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘কেউ যেন ফেসবুকের কোন সুযোগ নিতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বড়দিনের আগের দিন সন্ধ্যায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ভাইবোনেরা যে উপাসনা করেন, সেখানে আমরা গুরুত্বের সাথে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো।’ তিনি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান।
বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব দায়ুদ মিয়া বলেন, ‘বড়দিন উদযাপনের সুবির্ধার্থে গির্জাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে ২৬ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহ করা হবে।’
আলোচনায় বলা হয়, থার্টি ফাস্ট নাইট ও খ্রিষ্টীয় নববর্ষকে কেন্দ্র করে রাস্তা বা ও উন্মুক্তস্থানে ও ফ্লাইওভারে কনসার্ট, ডিজে পার্টি, নাচ-গানের আয়োজন করা যাবে না, উচ্চস্বরে গাড়ীর হর্ণ বাজানো ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি বা মোটর বাইক চালানো নিষিদ্ধ, এ ছাড়া ভুভুজেলা বাজানো, পটকা ফুটানো বা আতসবাজি করা যাবে না। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা যাতে ভালোভাবে বড়দিন পালন করতে পারে তার জন্য চার্চের নেতৃবৃন্দের সাথে বসে আলোচনা করা হবে। গির্জায় পুলিশের পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরা নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আলোচনা সভায় আরো বলা হয়, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধকল্পে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
[wp1s id=”10875″]
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদেও অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজ, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, বীর মুক্তিযোদ্ধা জোনাস গমেজ, সাংবাদিক নিখিল মানকিন প্রমুখ।
একইদিন শুভ বড়দিন উপলক্ষে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও ফুল দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। বক্তব্য পর্বের পর বড়দিনের কেক কাটা হয়। তাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন বিশপীয় ন্যায় ও শান্তি কমিশনের সেক্রেটারি ফাদার লিটন হিউবার্ট গমেজ, সিএসসি, এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজ, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, বীর মুক্তিযোদ্ধা জোনাস গমেজ, দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: এর সেক্রেটারি ইম্মানুয়েল বাপ্পী মন্ডল, ঢাকা খ্রীষ্টান বহুমুখী সমবায় সমিতি লি এর সভাপতি প্রদীপ সরকার, সাংবাদিক নিখিল মানকিন প্রমুখ।