শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিটের বিশেষ সাধারণ সভা ও নির্বাচন-২০১৯
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা ক্রেডিটের পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ নির্বাচন ও বিশেষ সাধারণ সভা।
১৩ ডিসেম্বর, সকাল ১০টায় ঢাকা ক্রেডিটের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজের সভাপতিত্বে বিশেষ সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের দিন। আজ নির্বাচন কমিশন ঢাকা ক্রেডিটের নতুন পরিচালনা পর্ষদের নাম ঘোষণা করেছে। নিয়মানুসারে আমরা প্রথম আলো পত্রিকা, সাপ্তাহিক প্রতিবেশীসহ সামাজিক মাধ্যমে আমরা তফশীলসহ প্রতিনিধি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। ১৯ হাজার সদস্য প্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়ার ফরম পূরণ করেছে। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় আজ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নতুন বোর্ড নির্বাচিত হয়েছে।’
‘আমরা বিশ্বাস করি নতুন বোর্ড ঢাকা ক্রেডিটকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আমরা চাই, আমাদের নিজস্ব সম্পদ, নিজেদের মধ্যে থাকুক। কারণ, আমরা যদি মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে চাই, তাহলে আমাদের একটি ভলো আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। যা ঢাকা ক্রেডিট করে যাচ্ছে। ফাদার চালর্স জে. ইয়াং অর্থনৈতিক মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা তা বাস্তবায়ন করছি’ যোগ করেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ।
[wp1s id=”10910″]
ঢাকা ক্রেডিটের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের মাস। খ্রিষ্টানদের জন্য এই মাসটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। একদিকে বড়দিন অন্যদিকে বিজয় দিবসের আনন্দ। এই মাসে আমরা ঢাকা ক্রেডিটের নতুন বোর্ড পেয়েছি। আশা করি আপনাদের দেওয়া দায়িত্ব আমরা সততা, নিষ্ঠা ও সফলতার সাথে পালন করবো। পূর্ববর্তী বোর্ড যে সততা ও দক্ষতা নিয়ে সমিতির কার্যক্রম এগিয়ে নিয়েছে, আমরা নতুন বোর্ডও সেই ধারা অব্যাহত রাখবো। সদস্যদের চাহিদা ও জীবনমান উন্নয়নকল্পে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।’
ঢাকা ক্রেডিটের নবনির্বাচিত সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই. কোড়াইয়া বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিট এখন অনেক বড় বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। এর আগে সমবায়ে দৃশ্যমান কোনো বড় প্রকল্প ছিল না। কিন্তু ঢাকা ক্রেডিট অসংখ্য প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প শুরু করেছে। আমাদের কাধে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, আশা করি তা পূরণ করতে আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন।’
ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিট বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ ক্রেডিট ইউনিয়ন। সদস্যদের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে ঢাকা ক্রেডিট নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বিগত বোর্ড সফলতার সাথে সমিতির কার্যক্রম চালিয়েছে। আজ নবনির্বাচিত বোর্ডের সকলেই বিচক্ষণ এবং দক্ষ। তারাও সমিতিকে নিয়ে আরো ভালো কাজ করবে বলে বিশ্বাস করি।’
দি মেট্রোপলিটন খ্রীস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:-এর সেক্রেটারি ইমানুয়েল বাপ্পী মন্ডল বলেন, ‘আমরা যদি দেখি গত বোর্ডের নেতৃত্বে কী কী বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তাহলে তা সমবায়ের অর্জনগুলোকেই বড় করে তুলবে। এই মাসটি বিজয়ের এবং বড়দিনের মাস। এই মাস আমাদের জন্য অনেক আনন্দের ও তাৎপর্যপূর্ণ। ঢাকা ক্রেডিটের নতুন পরিচালনা বোর্ড আসছে, আমাদের আনন্দ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। পূর্বের বোর্ডে মতোই এই বোর্ডও নতুন নতুন সাফল্য নিয়ে আসবে মানব কল্যাণে।’
ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী অফিসার লিটন টমাস রোজারিও বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মাঝে নতুন বোর্ড আসছে। নবোদ্যমে আমরা সমিতি’র জন্য কাজ করবো। আমরা সদস্যদের মূল্যায়ন করি এবং গুরুত্ব দেই। সেই ধারায় ঢাকা ক্রেডিটের কার্যক্রম পেশাদারিত্বের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। নবনির্বাচিত বোর্ডের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের কাজ করে সমিতিকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে।’
ঢাকা ক্রেডিটের উপদেষ্টা দিপ্তী ক্লারা ডি’কস্তা বলেন, ‘নতুন বোর্ডে অনেকগুলো নারী নেতৃত্ব এসেছে। এটা আমাদের জন্য ভালো উদ্যোগ। ঢাকা ক্রেডিট যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা এর সাথে আছি এবং থাকবো। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভাবতে হবে এবং পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। নতুন বোর্ড সেই বিষয়ে লক্ষ্য রাখবে।’
নির্বাচন কমিটির সভাপতি ঢাকা বিভাগীয় সমবায় উপ-নিবন্ধক (প্রশাসন) মোছা. নূর-ই-জান্নাত বলেন, ‘বিগত কয়েকদিন ধরে আমরা ঢাকা ক্রেডিটের নির্বাচন নিয়ে কাজ করছি। আজ আমরা নতুন পরিচালনা পর্ষদের নাম ঘোষণা করেছি। তবে, আমি একটি বিষয়ে পরিষ্কার করে বলতে চাই, ২১ বিধিটি এর আগে মানা হতো না। কিন্তু ঢাকা ক্রেডিটের ২০১৭ সালের নির্বাচনে কোনো এক সদস্যের মামলার কারণে এই বিধি সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে ঢাকা ক্রেডিটকে ২১ বিধি প্রতিপালন পূর্বক প্রতিনিধির মাধ্যমে ২০১৭’র নির্বাচন ও বার্ষিক সাধারণ সভাগুলো করতে হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তবে ২১ বিধিটি বাতিল করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে কোনো নির্দেশনা আসলে, আমরা তা পালন করবো।’
ঢাকা ক্রেডিটের নির্বাচন কমিটির সভাপতি ঢাকা বিভাগীয় সমবায় উপ-নিবন্ধক (প্রশাসন) মোছা. নূর-ই-জান্নাত, নির্বাচন কমিটির সদস্য ঢাকা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. শাকিলুজ্জামান, পরিদর্শক মো. আবু আশরাফ মিজি উপস্থিত থেকে ঢাকা ক্রেডিটের নবনির্বাচিত বোর্ডের নাম ঘোষণা করেন এবং তাদের হাতে নির্বাচিত পত্র তুলে দেন। এ সময় সমিতির সদস্যরা আনন্দ ও নতুন বোর্ডের জন্য শুভ কামনা করেন।
ঢাকা ক্রেডিটের পরিচালনা পর্ষদের নবনির্বাচিত ব্যক্তিরা হলেন:
অফিস বেয়ারার: প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস, সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, ট্রেজারার রতন পিটার কোড়াইয়া।
বোড অব ডিরেক্টর: সজল যোসেফ গমেজ, পল্লব লিনুস ডি’রোজারিও, সলোমন ইগ্নেসিয়াস রোজারিও, মনিকা গমেজ, প্রত্যেশ রাংসা, পাপড়ি প্যাট্রিশিয়া আরেং, আনন্দ ফিলিপ পালমা ও পাপিয়া রিবেরূ।
ক্রেডিট কমিটি: চেয়ারম্যান মানিক লরেন্স রোজারিও, সেক্রেটারি জনি এস. গমেজ, সদস্য ডা. রবার্ট ডি’ক্রুশ, অন্তর মানখিন ও উমা ম্যাগডেলিন গমেজ।
সুপারভাইজরি কমিটি: চেয়ারম্যান জন গমেজ, সেক্রেটারি প্রিয়ন্ত সি. কস্তা, সদস্য বার্নার্ড পংকজ ডি’রোজারিও, মাধবী অনিতা গমেজ ও ষ্টেলা হাজরা।