ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ফিচার ক্রেডিট ইউনিয়নে সুবিধাসমুহ

ক্রেডিট ইউনিয়নে সুবিধাসমুহ

0
876

|| সুবাস সেলেষ্টিন রোজারিও ||

– ক্রেডিট ইউনিয়ন হচ্ছে সদস্যদের দ্বারা, সদস্যদের জন্য এবং সদস্যদের সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান। এটির মালিক সদস্যরাই এবং কার্যক্রম সদস্যরাই চালনা করে থাকেন। এর লভাংশ সদস্যরাই উপভোগ করে থাকেন।
– সদস্যগণ একাধারে মালিক, পরিচালক এবং বেনিফিট ভোগকারী। সদস্যদের দ্বারা, সদস্যদের জন্য, সদস্যদের মধ্যে হতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তারা নির্বাচিত হন। ক্রেডিট ইউনিয়ন পরিচালনা করেন। জবাবদিহিতার অবকাশ রয়েছে।
– এখানে টাকা রাখা নিরাপদ, কারণ এটা আইন দ্বারা সৃষ্ট একটি বৈধ প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর হিসাব-নিকাশ অডিট হয়, বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়, সদস্যদের হিসাব-নিকাশ জানার অধিকার রয়েছে।
– ঋণ প্রদানে ঝঁকি খুবই কম। শুধুমাত্র সদস্যদের ঋণ দেওয়া হয়। পরিচিত সদস্যগণ সিউরিটি হন, ঘটনা ক্রমে ডিফল্ড করলে সামাজিক চাপ সৃষ্টি করা যায়।
– ক্রেডিট ইউনিয়ন মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস সৃষ্টি করে। যারা জীবনে কোনোদিন সঞ্চয় করেননি তারা সঞ্চয়ের সুযোগ পান।
– বছর শেষে সঞ্চয়ের ওপর (শেয়ার) ডিভিডেন্ট পাওয়া যায়, যা অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক সুদের চেয়ে বেশী।
– বছর শেষে Patronage Refund বা রিবেট দেয়া হয়। সারা বছর যারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেছেন, যত টাকা সুদ দিয়েছেন তার কিছু অংশ ফেরৎ দেয়া হয়। এটি একটি ইউনিক সিসটেম বা সচরাচর অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় না।
– এটি একটি Collective and group efforts একক প্রচেষ্টায় যাহা সম্ভব নয়, যৌথ প্রচেষ্টায় তা আদায় সম্ভব। যেমন জেলে সমবায়ে জলাভূমি, কৃষি সমবায়ে খাস জমি ইত্যাদি।
– উন্নয়নমূলক ও গঠনমূলক (Provident and productive) কাজের জন্য ঋণ নিতে উৎসাহিত করে।
– “Not for profit, not for charity but for service” “লাভের জন্য নয়, দানে জন্য নয় কিন্তু সেবার জন্য” এটাই ক্রেডিট ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় সুবিধা। ক্রেডিট ইউনিয়নের টাকা বিনিযোগ বা ইনভেস্ট করার সর্ব শ্রেষ্ঠ স্থান সদস্যগণ। তাদের ঋণ দেয়া, সেবার হস্ত সম্প্রসারিত করা। যদি প্রচুর টাকা উদ্বৃত থাকে লোন পলিসি পরিবর্তন করুন। সহজ সরল কিস্তি ও সুদে বিভিন্ন প্রকল্পে সদস্যদের দ্রুত ঋণ পেতে সহায়তা করুন। যেমন উচ্চ শিক্ষা ঋণ, গাড়ী ক্রয় ঋণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা ঋণ, গৃহ নির্মাণ ঋণ ইত্যাদি।
– ক্রেডিট ইউনিয়নে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ কেহই বেতনভুক্ত কর্মচারী নন-সকলেই ভলনটিয়ারী সার্ভিস (স্বেচ্ছা শ্রম) দিয়ে থাকেন। এমনও দেখেছি কোনো কোনো কর্মকর্তা যাতায়াত ভাতাও নিতেন না। এ প্রসংগে একটি ঘটনা উল্লেখ করতে চাই, সময়টি সম্ভবত ষাটের দশকের মাঝামাঝি। মি. ব্রায়েন কে. গুড ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট। বন্ধুবান্ধবগণ বিকালে প্রতিবেশী অফিসের সামনে সিড়িতে বসে আড্ডা দিতাম। পাশেই ক্রেডিট ইউনিয়ন অফিস, অনেক সময় মিটিং হত, বড় বড় জাদরেল কর্মকর্তা ডিরেক্টরগণ মিটিং করতে আসতেন, তাকিয়ে দেখতাম তাঁরা অফিস কক্ষে প্রবেশ করছেন। কিছুক্ষণ পর দেখতে পেতাম গুড সাহেবের বাবুর্চী (এক সুদর্শন যুবক) বড় একটি ফ্লাক্সে চা এবং কিছু বিস্কুট নিয়ে ক্রেডিট অফিসে প্রবেশ করছে। যুবকটির বাড়ী রাঙ্গামাটিয়া এলাকায়। ক্রেডিট ইউনিয়নের কর্মীগণ শুধু অবৈতনিকই ছিলেন না, ক্রেডিট ইউনিয়নের পয়সায় এক কাপ চাও খেতেন না। এদের অবদান অনস্বীকার্য। (লেখাটি সমবায় ঋণদান সমিতি বই থেকে সংগৃহীত)