শিরোনাম :
আজ ঈশ্বরের সেবক থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলীর জন্ম শতবার্ষিকী
ডিসিনিউজ, ঢাকা
আজ ঈশ্বরের সেবক থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলীর জন্ম শতবার্ষিকী। আজকের দিনে তিনি নবাবগঞ্জের হাসনাবাদ গ্রামের নিকোলাস কমল গমেজ ও রোমানা কমলা গমেজের ঘরে জন্ম নেন।
তিনি ছিলেন প্রথম বাঙ্গালী বিশপ ও আর্চবিশপ। তাঁর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও এক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেছেন, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের দায়িত্ব গ্রহণ করার মুহূর্ত থেকে আমার অন্তর-মনে, চিন্ত- চেতনায়, ধ্যান-ধারণায় ও আচার-আচরণে যে ধর্মপালকে আমি আদর্শ হিসেবে রেখেছি, তিনি হচ্ছেন: ঈশ্বর-সেবক আর্চবিশপ থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী সিএসসি। তাঁরই দিকে চেয়ে নিজেকে সর্বদা মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করে থাকি । তাঁর মতো যে হতে পেরেছি সেই গর্ব আমি কোনো দিনও করতে পারব না। কিন্তু তাঁকে নিয়ে গর্ব করার ত্রুটি আমার কোনো দিনই হয়নি বলে আমি গর্বিত।
কার্ডিনাল প্যাট্রিক আরো বলেন, ঈশ্বরের সেবক থিওটোনিয়াস অমল ছিলেন মহান একজন ভক্তিপ্রাণ ও নির্মল চরিত্রের মানুষ; তাঁর ছিল ভালবাসা ও ক্ষমা, সহনশীলতা ও আত্মত্যাগ; অন্তরে তিনি ছিলেন দীন ও পরিশুদ্ধ; তাঁর ছিল দয়ালু ও দরদী স্বভাব ও শিশু সুলভ সরলতা; দীন-দরিদ্র মানুষের প্রতি তাঁর প্রদীপ্ত ভালবাসা। কোনোদিন কেউ দেখেনি তাঁকে অন্যের সাথে রাগ করতে, কাউকে আঘাত দিতে, কঠোর বাক্য উচ্চারণ করতে বা নিষ্ঠুরভাবে কারো সঙ্গে আচরণ করতে। কষ্টভোগী সেবক হয়ে তিনি জীবনের সকল প্রতিকূল অবস্থাকে গ্রহণ করেছেন।
ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক খ্রিষ্টভক্তদের নিকট আবেদন করে বলেন, ‘সবার কাছে আকুল আবেদন করি যেন, সকলে ঈশ্বরের সেবক আর্চবিশপ থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলীর জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে তাঁরই মধ্যস্থতায় ঈশ্বরের কাছ থেকে এমন অনুগ্রহ যাচ্ঞা করেন যা ঈশ্বরের অলৌকিক বা আশ্চর্য কাজ বলে প্রমাণিত হতে পারে। এই আশ্চর্য কাজটি ঈশ্বরের সেবক আর্চবিশপ থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলকে “ধন্যশ্রেণীভুক্ত” করার জন্য একান্ত অপরিহার্য।’
ঈশ্বরের সেবক টি. এ. গাঙ্গুলীকে ধন্যশ্রেণীভুক্তকরণ প্রক্রিয়ায় গঠিত পালকীয় কমিটির আহ্বায়ক ফাদার প্যাট্রিক শিমন গমেজ অনুরোধ করেন আর্চবিশপ থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলীর মধ্যস্থতায় প্রার্থনা করে ব্যক্তিগতভাবে কেউ বিশেষ অনুগ্রহ লাভ ক’রে থাকলে তা লিখিতভাবে পালক পুরোহিতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে জমা দেয়ার জন্য।
প্রসঙ্গত, অনেকে ঈশ্বরের সেবক টি. এ. গাঙ্গুলীর মাধ্যমে প্রার্থনা করে অসুস্থতা, কষ্ট ও সংকটে আধ্যাত্মিক ও শারীরিক ফল লাভ করেছেন। আর্চবিশপ টি এ গাঙ্গুলী প্রথম বাঙ্গালি বিশপ (১৯৬০) ও আর্চবিশপ (১৯৬৭)। তিনি ২য় ভাতিকান মহাসভায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি যাজক ও সন্ন্যাস ব্রতধারী/ধারীণিদের নবায়ণ কোর্সের জন্য পদক্ষেপ নেন। তার উদ্যোগে বাংলাদেশ মণ্ডলীতে সংস্কৃতায়ন ও ২য় ভাতিকান মহাসভার আলোতে আত্মনির্ভরশীল স্থানীয় মন্ডলী গড়ে ওঠার প্রচেষ্টা শুরু হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টব্দে মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রশংসিত। বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে, যুদ্ধাহতদের এনে সান্ত¦না, ধর্মপল্লীগুলো পরিদর্শন ও সাহস যুগানো, দেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে পূর্ণ আশাবাদী এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।