শিরোনাম :
তপস্যাকাল উপলক্ষে পোপের বাণী: তোমরা ঈশ্বরের সঙ্গে পুনর্মিলিত হও
ডিসিনিউজ, ঢাকা:
তপস্যাকাল উপলক্ষে পুণ্য পিতা পোপ ফ্রান্সিস এক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে বলেছেন, “খ্রিষ্টের নামে আমরা এখন একান্ত আবেদন জানাচ্ছিঃ তোমরা ঈশ্বরের সঙ্গে পুনর্মিলিত হও।” (২ করি. ৫:২০)।
তিনি বাণীতে আরো বলেন, প্রভু এবছর আরও নবায়িত অন্তরে যিশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের রহস্য উদ্যাপনের প্রস্তুতির জন্য একটি মোক্ষম সময় আমাদের দিয়েছেন। এই খ্রিষ্টই হচ্ছেন আমাদের ব্যক্তিগত ও সমিষ্টগত খ্রিষ্টিয় জীবনের ভিত্তি। অন্তরে-মনে আমাদেরকে অবশ্যই বার বার এই রহস্যের কাছে ফিরে আসতে হবে; কেননা, এটি আমাদের সত্তার গভীরে সেই মাত্রায় বৃদ্ধি পেতে থাকবে, যে মাত্রায় আমরা এই রহস্যের আধ্যাত্মিক ক্ষমতার বিষয়ে উন্মুক্ত থাকবে এবং যে মাত্রায় আমরা মুক্ত মনে আর উদারতায় নিয়ে এই রহস্য সাড়া দান করব।
তিনি উল্লেখ করেন, যিশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের আনন্দ-বার্তা শ্রবণ ও গ্রহণের মধ্য দিয়েই প্রবাহিত হয় খ্রিষ্টীয় আনন্দ। এই ‘শিক্ষা’ সেই ভালবাসার রহস্যকে সংক্ষিপ্ত ভাবে প্রকাশ করে, যে ভালবাসা “এত বাস্তব, এত সত্য, এত খাঁটি যে, এটি আমাদেরকে মুক্ত মনের সম্পর্কে প্রবেশে এবং ফলশালী সংলাপে আমন্ত্রণ জানায়”। এই শুভ বার্তা যে বিশ্বাস করে, সে সেই মিথ্যাকে প্রত্যাখ্যান করে, যে মিথ্যা ব’লে বেড়ায় ‘জীবনটা যেহেতু আমাদেরই, তাই এই জীবন কে নিয়ে যা ইচ্ছা, তা-ই করতে পারি আমরা।’ কিন্তু আসলে আমাদের পিতা ঈশ্বরের ভালবাসা থেকে, আমাদেরকে অফুরন্ত ভাবে জীবন দানের (দ্রষ্টব্য, যোহন ১০:১০) তাঁর ইচ্ছা থেকেই আমাদের জীবন জন্ম নেয়। এর বিপরীতে আমরা যদি “মিথ্যার জনক” (যোহন, ৮:৪৪)-এর প্রলুব্ধকারী কণ্ঠস্বর শুনি, তবে অঅমরা অর্থহীনতার রসাতলে নিমজ্জিত হওয়ার ঝুঁকি মাথায় নেই এবং এই পৃথিবীতেই নরকের অভিজ্ঞতা করি; ব্যক্তিগত ও সমষ্টিক মানব জীবনের করুণ ঘটনাবলী দুঃখজনকভাবে সেটির সাক্ষ্যই তো বহন করে।
পুণ্য পিতা বলেন, পরিত্রাণ রহস্যকে আমাদের জীবনের কেন্দ্রে রাখার মানে হচ্ছে ক্রুশবিদ্ধ খ্রিষ্টের ক্ষতগুলোর প্রতি একটি মমতার অনুভূতি। এই ক্ষতগুলো বিদ্যমান রয়েছে যুদ্ধে নিরিহ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে, জন্ম না নেওয়া মানব শিশু থেকেে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত যাদের জীবন আক্রান্ত ও নানা সহিংসতার শিকার, তাদের মধ্যে। সেই ক্ষতগুলো একইভাবে বিদ্যমান পরিবেশগত দূর্যোগে, বিশ্বের সম্পদের অসামঞ্জস্যপূর্ণ বন্টণে, সবধরণের মানব পাচারে, লাগামহীন মুনাফা লাভের তৃষ্ণায়- যা কি-না এক ধরণের পৌত্তলিকতা।
তিনি আহ্বান করেন, পবিত্রতমা মারীয়ার কাছে আমি অনুরোধ রাখি, তিনি যেন প্রার্থনা করেন, যাতে তপস্যাকালের এই উদ্যাপন ঈশ্বরের ডাকশুনবার জন্য আমদের হৃদয় উন্মুক্ত ক’রে দেং- আমরা যেন তাঁর সাথে পুনর্মিলিত হ’তে পারি, যেন আমরা আমাদের দৃষ্টি আবদ্ধ রাখতে পারি পরিত্রাণ রহস্যের উপর, যেন তাঁর সাথে আমরা একটি উন্মুক্ত ও আন্তরিক সংলাপের উদ্দেশ্যে আমাদের মনের পারবর্তন ঘটাই। এভাবেই আমরা তেমনটি হয়ে ওঠতে পারবো, যেমনটি খ্রিষ্ট নিজেই শিষ্যদের হতে বলেছিলেন : পৃথিবীর লবন এবং জগতের আলো (দ্রষ্টব্য, মথি ৫:১৩-১৪)। (সুত্র: সাপ্তাহিক প্রতিবেশী থেকে সংক্ষিপ্তাংশ)