শিরোনাম :
মানুষের দেওয়া খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছে এক সময়ের অবস্থাশালী পরিবারটি
লরেন্স রানা || গাজীপুর:
খোঁজ নেননি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা! চার দিন আগেও যাদের কাছে ছিল নগদ এক লাখ আশি হাজার টাকা, ভরি ভরি সোনা, দামী সব আসবাবপত্র- কাপড়- বিছানা – সোফা- খাট তারাই আজ অন্যের দেওয়া খাবার খেয়ে দিন পার করছে।
রোদ-বৃষ্টিতে কোন রকম কাঁথা-বালিশ ছাড়াই রাত কাটছে ছোট্ট একটি বারান্দায়। সর্বনাশা আগুন লেগে গত ১৭ জুন ভোরে পরিবারটির সব কিছু পুড়ে যায়। দেখতে আসেনি স্থানীয় কোন জনপ্রতিনিধি। খোঁজ নেননি প্রশাসনের কেউ।
করোনার এই সংকটকালে পরিবারটি পড়েছে চরম বিপাকে- খাদ্য আর অর্থকষ্টে। জানা গেছে, গত ১৭ জুন ভোরে দিকে আগুন লাগে গাজীপুরের কালীগঞ্জের নাগরীর পানজোরা গ্রামের মানুয়েল এসেনসনের (৭৫) বসত বাড়িতে। মুহূর্তে ভয়াবহ আগুন ঘরের পাটাতনের উপর দিয়ে সব ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই আগুনের লেলিহান গ্রাস করতে থাকে একে একে সব। পরিবারটির ঘুমন্ত ৬ সদস্য কোন রকমে প্রাণ নিয়ে বাইরে বেরোতে পারলেও পুড়ে যায় ঘরে রাখা নগদ অর্থসহ সব। শোবার ঘর লাগোয়া নিজেদের বেকারি থেকে আগুনের সুত্রপাত বলে পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন।
মানুয়েল এসেনসনের এর বড় ছেলে অজ্জন এসেনসন (৪০) বলেন, “নিজেদের বেকারি থেকে আগুনের সুত্রপাত হতে পারে মনে করে আমরা থানায় কোন অভিযোগ করিনি। তবে আমাদের এমন অবস্থায় স্থানীয় কোন জনপ্রতিনিধি আমাদের খোঁজ নেননি। পুড়ে গেছে আমার শিশু সন্তানের সমস্ত কাপড়সহ বই খাতা। আমরা এখন এক কাপড়ে বেঁচে আছি, কিন্তু চোখের লজ্জায় কারো কাছে হাত পাততেও পারি না। নগদ অর্থ আর চরম খাবার সংকট পড়া পরিবারটিকে ১৭ জুন প্রতিবেশীরা রেঁধে খাবার দেন, ১৮ জুন খাবার দেন করান গ্রাম থেকে নাগরী খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ পরিচালক উজ্জ্বল রোজারিও। ১৯ জুন খাবার দেন সেন্ট নিকোলাস উচ্চ বিদ্যালশয়ের শিক্ষক মার্টিন পেরেরা। আগুন লাগার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নাগরী মিশনের পাল পুরোহিত জয়ন্ত এস গমেজ।
তিনি ডিসি নিউজকে বলেন, পরিবারটির সব কিছুই পুড়ে গেছে, কিছু আর অবশিষ্ট নেই। তিনি মিশনের তরফ থেকে ইতোমধ্যে কিছু নগদ অর্থ সহায়তা পরিবারটিকে দিয়েছেন। বিশপ হাউজ থেকে সাহায্য করার ব্যাপারে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে পরিবারটিকে জানান।
প্যারিশে পানজোরা গ্রামের প্রতিনিধি টুটুল পি রড্রিগজ বলেন, ইতোমধ্যে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং গ্রাম থেকে নগদ অর্থ সাহায্য দুয়েক দিনের মধ্যে আমরা পরিবারটিকে দিব। তিনি বলেন,” এক সময়ের অবস্থাশালী পরিবারটি আজ অসহায়, সমাজের বিত্তবানদের সাহায্য তাদের এই মূহুর্তে খুবই জরুরি।”
উল্লেখ্য আনুমানিক ৩৫ বছর আগে করাচি ফেরত মানুয়েল এসেনসন নাগরী অঞ্চলে প্রথম কাঠ ভাঙ্গানোর মেশিন বসিয়ে কাঠের এবং বেকারি ব্যবসা শুরু করে এলাকায় কর্মসংস্থানে ব্যাপক অবদান রাখেন। বহু মানুষের কর্মসংস্হানকারী মানুয়েল এসেনসনে চোখে আজ অন্ধকার, অন্যের সাহায্যের আশায় বসে আছেন যেন ডুবতে বসা এক জাহাজের নাবিক।
কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি যদি চান তাহলে তাদের সাহায্য করতে পারেন।
অজ্জন এসেনসন (বাড়ির বড় ছেলে), তার বিকাশ নম্বর: 01715-151189