ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা প্রবন্ধ বাংলাদেশে পোপের আগমন বিশ্বাসকে নবায়ন ও পুনর্জীবিত করবে: বাংলাদেশের নবঘোষিত কার্ডিনাল

বাংলাদেশে পোপের আগমন বিশ্বাসকে নবায়ন ও পুনর্জীবিত করবে: বাংলাদেশের নবঘোষিত কার্ডিনাল

0
924

ভাতিকান সিটি : প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে লাল টুপি পরিহিত কর্ডিনাল ঘোষনার পর কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও মনে করেন, বাংলাদেশে ২০১৭ সালে পোপ ফ্রান্সিসের আগমনে শুধু পুরো বাংলাদেশ ম-লীই পুনর্জীবিত হবে না, এতে বাংলাদেশের সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে বিশ্বাসও বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশের মাটিতে পোপ ফ্রান্সিসের অবতরণ হবে “দেশের সমগ্র ম-লীর জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ও বিশেষ মাইল ফলক; বিশেষভাবে আন্ত:ধর্মীয় ঐক্যগঠন, সরকারি কর্মীদের অধিকার ও জলবায়ুবিষয়ক ইতিবাচক ফল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে।” ভাতিকানের রোম নগরীতে ১৯ নভেম্বর কার্ডিনাল পদে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব প্রদানকালে সাংবাদিদের সাথে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নবঘোষিত কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও এসব কথা বলেন।

পোপ ফ্রন্সিস সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও বলেন, ‘তিনি একজন আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু’। এদেশে তাঁর আগমনে দেশের সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে এক আধ্যাত্মিক মিলনের ভিত্তি স্থাপিত হবে বলে মন্তব্য করেন।

পোপ বাংলাদেশে কোন সময় আসবেন – সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে কার্ডিনাল প্যাট্রিক রসিকতা করে বলেন, “আমি বাংলাদেশে ফেরার পথেই পোপকে নিয়ে যেতে চাই।” পরক্ষণেই বাস্তবাতার নিরিখে তিনি বলেন, গরম ও বর্ষার কারণে পোপ ২০১৭ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশ পরিদর্শ করবেন।

কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও যিনি ঢাকার আর্চবিশপ, ১৭ জন পুরোহিত ও বিশপের একজন হিসেবে গত শনিবার (১৯/১১/২০১৬) পোপ কর্তৃক কার্ডিনাল পদপ্রাপ্ত হন। ঘটনাক্রমে তিনি দয়ার জুবিলি বর্ষের (২০১৬) শেষ শনিবার এই পদে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্ডিনাল পদে ভূষিত হন।

কার্ডিনাল ঘোষণায় বর্তমান পোপের বিশেষ একটি দিক ছিল তিনি বেশ কিছু কার্ডিনাল পদের জন্য ঘোষণা দিয়েছেন ছোট ও অবহেলিত দেশ, দ্বীপসর্বস্ব রাষ্ট্র ও পালকীয় কাজে নানা চ্যালেঞ্জ-এর মুখোমুখি রয়েছে এমন সব দেশ থেকে।

কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিওর মতো দেশে প্রথমবারের মতো যেসব দেশের কার্ডিনাল ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, মৌরিতাস দ্বীপ, পাপুয়া নিউ গিনি, মালয়েশিয়া, লেসোথো ও আলবেনিয়া।

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় কার্ডিনাল প্যাট্রিক বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বাংলাদেশে পোপ ফ্রান্সিসের ভিজিট এসব বৈরিতা নিরসনের পথ খুলবে বলে অনুমানর্ভির মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের চলমান দুর্বল সম্পর্ক দৃঢ় সামাজিক সম্পর্কে রূপান্তরিত হবে। জুলাইয়ের ১ তারিখে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে একটি ইসলামিক গ্রুপের জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে, এতে ২০ জন দেশিবিদেশি নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়।এই অমানবিক নারকীয় ঘটনাটি ঘটেছিল মুসলিমদের রমজান মাসের মাঝামাঝিতে, সূর্যাস্তের পর, সন্ধ্যার দিকে।

কার্ডিনাল প্যাট্রিকের মতে, “এমন আক্রমন আমাদের দেশের মাটিতে, আমাদের সংস্কৃতিতে নিতান্তই ব্যতিক্রমী ঘটনা যা অন্য দেশে হতে শুনেছি।” প্রকৃত প্রস্তাবে বাংলাদেশে যুগযুগ ধরে আন্ত:ধর্মীয় সংলাপের সংস্কৃতির ধারা চলে আসছে। তাই এই নৃশংস ঘটনা এদেশের জন্য একটি ব্যতিক্রমী, বিদেশি ঘটনা।

তিনি বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলেন, কীভাবে তিনি সরকারের সাথে ও অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের সাথে গত নয় মাস যাবত ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন।

কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও তাঁর এই পদ ঘোষণার মুহূর্তের অনুভূতি সাংবাদিকদের কাছে ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “আমাকে কার্ডিনাল ঘোষনা দেওয়ার খবরটি আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। আমি বিষয়টি গ্রহণও করতে পারছিলাম না।” তিনি বলেন, তিনি পোপের চিঠি পাওয়ার পর গভীরভাবে বিমোহিত হয়েছিলেন। চিঠিতে পোপ নবঘোষিত কার্ডিনালকে উল্লেখ করেছিলেন: “যখন লোকেরা আপনাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসে এবং আপনাকে অভিনন্দন জানায়, মনে রাখবেন, ঈশ্বর তাঁর চারণভূমিতে আপনাকে চরাচ্ছেন। উর্ধ্ব থেকে স্বয়ং ঈশ্বর আপনাকে দেখছেন।”

ewtnnews থেকে সংগৃহীত ও অনুদিত

ভাষান্তর: রাফায়েল পালমা, সম্পাদক, ডিসিনিউজ

আরবি/ আরপি/ আরএস/ ১১ জানুয়ারি, ২০১৭