ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ লেয়ার ফার্মের মাধ্যমে লাখ টাকার বেশি আয় দীপু রেমার

লেয়ার ফার্মের মাধ্যমে লাখ টাকার বেশি আয় দীপু রেমার

0
1140

দীপু রেমা একজন আদিবাসী গারো । তাঁর বাড়ী  ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয় উপজেলায় একটি গ্রামে । মধুপুর মিশন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর রাজধানী নটরডেম কলেজ থেকে এইচসিসি পাস করেন । এরপর তেজঁগাও কলেজ থেকে ডিগ্রী অর্জন করেন । পড়াশুনা শেষ করে বিভিন্ন  দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত ছিলেন । উন্নয়ন সংঘ, কারিতাস, ওয়াল্ডভিশন, কেয়ার বাংলাদেশ , ইউএসএ আইডির সংস্থা  এসিডিআিই ভোকা এই সংস্থাগুলোতে ১৮/২০ বছর চুকরি করার পর শেষে মুরগী লেয়ার ফার্মে হাত দেন । 

সেই ২০১৫ সনের কথা এখন থেকে ৫ বছর আগের কথা । যখন সে লেয়ার ফার্ম শুরু করে তখন একেবারে এ মুরগী কীভাবে লালন পালন করবে, যত্ন করবে, ডিম উৎপাদন হলে কোথায় বিক্রি করবে, খাদ্য কোথা থেকে কিভাবে খাওয়াবে, মুরগীর রোগ বালাই হলে কোন পশু ডাক্তারের স্নরণাপন্ন হবে এসব কিছুই জানা ছিলনা । শুধুমাত্র কিছু মূলধন ও মনোবল নিয়েই তিনি একটি বড় ঝুকি নিয়ে এ লেয়ার ফার্ম শুরু করেন । 

প্রথম যখন শুরু করেন তখন তিনি ১২০০ পুলেট নিয়ে শুরু করেন যা সিপি নামক বিখ্যাত কোম্পানী থেকে তিনি তা নিয়ে আসেন । একেকটি পুলেট মুরগীর দাম ছিল তখন ৫৭৫/= টাকা । শুধু মুরগীতেই তার লেগেছিল ছয় লক্ষ নব্বই হাজার । এরপর মুরগীর খাঁচা, সেট তৈরী ও অন্যান্য খরচ বাবাদ ৫/৬ লাখের মত খরচ করতে হয়েছে । অর্থাৎ প্রায় ১২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি লেয়ার ফার্মটি শুরু করেন । পুলেট আনার পরে ১ সপ্তাহের মধ্যেই মুরগী ডিম দেয়া শুরু করে ২/৩ করে এক মাসের মধ্যেই প্রায় সবগুলো মুরগী ডিম দেয়া শুরু করে ।  প্রথমেই তিনি সিপি কোম্পনীর সাথে চুক্তি করে তারা মুরগীর ডিম নিবে ও খাবার সাপলাই কোম্পানী থেকেই দিবে ১৫ দিন পর পর এ জন্য এই কোম্পনী থেকেই মুরগীগুলোকে দেখাশুনা করার বা কেয়ার করার সুযোগ তিনি লাভ করেন । 

লেয়ার মুরগী একটানা ১৮ মাস ডিম দিয়ে থাকে যদি ভালোভাবে যত্ন নেওয়া হয়। এখন তার পাঁচ বছরের মাথায় মোট মুরগী হয়েছে ৪০০০ (চার হাজার) এবং সেট বানিয়েছেন ৬৫০০ মুরগীর জন্য । তার প্রত্যাশা তিনি ধীরে ধীরে ১০,০০০/= দশ হাজার পর্যন্ত মুরগী বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে । তার এ ফার্মে এখন সে নিজে ছাড়াও তিনজন কর্মী কাজ করে এটাও একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হয়েছে ।

তবে বলে রাখি, তিনি সার্বক্ষনিক নিজে ফার্মে সময় ব্যায় করেন না । খাদ্য দোকান, মুরগীর ডিম বিক্রি, কখন কী মেডিসিন প্রয়োজন হতে পারে, কোনো পশু ডাক্তরের সাথে যোগাযোগ করতে হবে সব তিনি নিজে দায়িত্ব পাল করেন । কখনো কখনো বলতে গেলে ২৪ ঘন্টায় মুরগীর পিছনে সময় কাটাতে হয় তার । তার কথা হলো সবকিছুতেই নিজে যদি আন্তরিকতার সাথে সময় দিয়ে কাজ করা যায় তাহলে সেখানে সফলতা আসবেই । 

 অনেকেই প্রথম যখন শুরু করেন তখন নেতিবাচক মন্তব্য করেছিল। বলেছিলো, গারোরা ব্যবসা করতে পারে না, পারবে না, তাঁদের মনোভাব ব মানসিকতা ব্যবসায়ী মনোভাবের না এসব নানা ধরনের নেতিবাচক কথা । তারপরও তিনি নিজের আত্নবিশ্বাস নিয়ে শুরু করেছিলেন বলে আজকে তিনি একজন সফল ব্যবসারী বলা যেতে পারে । যখন ডিমের দাম বাজারে থাকে তখন মাসে কোনো কোনো সময় সব খরচ, লেবার,মেুরগীর খাবার, মেডিসিন, বিদ্যুৎ সব বাদ দিয়েও লাখ টাকার উপরে লাভ থাকে বলে জানান । পরিশ্রম ও আত্বপ্রত্যয়ী হলে সফল হতে যে বাধ্য ও অবশ্যম্ভাবী দীপু রেমা তার একটি উদাহরণ । তার আর চাকুরীর পিছনে ছুটতে হলো না আর তাছাড়া তিনি একবার পুরস্কাও পেয়েছেন একটি কোম্পানী থেকে যার সার্টিফিকেট বর্তমান সরকারের স্পীকার উনার হাত থেকে গ্রহন করেন ।  বর্তমানে তার দেখাদেখি অনেকেই  গারো সমাজ থেকে সেই এলাকাতে এই কাজে হাত দিয়েছে এবং সফলও হচ্ছে । 

সূত্র: আইনিউজ