শিরোনাম :
সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতাল মানুষের আস্থা অর্জন করেছে: কার্ডিনাল প্যাট্রিক (ভিডিয়ো)
সুমন কোড়াইয়া ॥ ঢাকা
‘সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতাল মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে। নিদ্বির্ধায় ও স্বাধীনভাবে রোগীরা এ হাসপাতালে আসছেন। আর এটা হলো এই হাসপাতালের বড় প্রাপ্তি’ বলেন ঢাকা ক্যাথলিক মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি।
৭ আগস্ট ভাবগাম্বীর্য পরিবেশে উদযাপন করা হলো ঢাকা ক্যাথলিক মহাধর্মপ্রদেশের সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের প্রতিপালকের পার্বণ দিবস। তেজগাঁওস্থ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি। এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমাদের পরিকল্পনা ও স্বপ্ন বড় কথা নয়। ঈশ্বরের কাজ ঈশ্বর করেন। আর ঈশ্বরের কাজ করার জন্য তিনি অনেককে ব্যবহার করেন। সেই উপলব্ধী আমাকে ও গোটা ধর্মপ্রদেশকে আনন্দ দিয়েছে।’
তিনি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী-ডাক্তার-নার্সদের ধন্যবাদ দেন। ধন্যবাদ দেন হাসপাতালের গর্ভনিং বডি, ম্যানেজিং বোর্ডের সদস্যদের।
হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ফাদার কমল কোড়াইয়া জানান, তাঁদের হাসপাতাল চব্বিশ ঘন্টা রোগিদের সেবায় নিয়োজিত। এ মাস থেকে হাসপাতালে ওটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
ফাদার কমল অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এ বিশ্বমহামারীর সময়ে আপনাদের সহযোগিতা, পরামর্শ ও প্রার্থনা আমাদের চলার পথের পাথেয়। স্বাস্থ্যসেবা আজ সত্যিই কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। এ সেবাকাজের জন্য অনেক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, ধৈর্য, সাহস এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস প্রয়োজন। মানুষ হিসেবে আমাদের অপারগতা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তা সত্ত্বেও, সৃষ্টিকর্তার উপর পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা রেখে আমরা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তিনি নিজেইতো বলেছেন, ‘তোমরা ভয় পেয়ো না; আমি তোমাদের সঙ্গে আছি।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকার সহকারী বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ ও অবসরপ্রাপ্ত বিশপ থিয়োটনিয়াস গমেজ সিএসসি, পুণ্য পিতা পোপের প্রতিনিধির সেক্রেটারি মুন্সিনিয়র আলবারো। সাথে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা, সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, ট্রেজারার রতন পিটার কোড়াইয়া, হাউজিং সোসাইটির সেক্রেটারি ইমানুয়েল বাপ্পী মন্ডল, কারিতাসের সহকারী নির্বাহী পরিচালক সেবাষ্টিয়ান রোজারিওসহ হাসপতালের গর্ভনিং বডি, ম্যানেজিং বোর্ডের সদস্যগণ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ফাদার-সিস্টার-ব্রাদার ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকার সহকারী বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ, পুণ্য পিতা পোপের প্রতিনিধির সেক্রেটারি মুন্সিনিয়র আলবারো, প্রাক্তন শিক্ষক জেরাল্ড রড্রিক্স ও স্কয়ার হাসপাতালের নার্সদের প্রধান সুপ্রিয়া বিশ্বাস, সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতাল চিকিৎসক শুভ্র বনিক ও হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালকের সেক্রেটারি উদয় পিটার গ্রেগরী।
প্রসঙ্গত, ২০ শয্যার সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতাল যাত্রা শুরু করে ১১ নভেম্বর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে। হাসপাতালটিতে মোট কর্মকর্তা-কর্মচারী-ডাক্তার ৭৭ জন। হাসপাতালটিতে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক আছে আট জন, পুরুষ নার্স দুই জন এবং নারী নার্স ৫ জন। কনসাল্টেন্ট চিকিৎসক আছেন ১৮ জন। এই হাসপাতালে রয়েছে জরুরী বিভাগ, বর্হিবিভাগ, অন্তবিভাগ, স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিভাগ, শিশু বিভাগ, মেডিসিন বিভাগ, ফ্যামিলি মেডিসিন, হৃদরোগ বিভাগ, ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগ, চর্ম ও যৌন বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, নিউরো সার্জারি বিভাগ, অর্থপেডিক্স বিভাগ, ফিজিও থেরাপী বিভাগ, রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগ, প্যাথলজি বিভাগ, আলট্রাসনোগ্রাফী বিভাগ ও ইকো, মা ও শিশু কর্ণার, ঔষধালয়, নার্সিং সেবা, ইসিজি, ফিভার ক্লিনিক, কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ, অপারেশন থিয়েটার, ডায়েট্রি ও অ্যাম্বুলেন্স।
এই হাসপাতালে রয়েছে ২০টি বেড ও তিনটি ভিআইপি কেবিন। পুরুষ ও নারী রোগিদের জন্য দুইটি সেমি কেবিন ও ৩টি ওয়ার্ড রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে কেন্টিন ও ওয়েটিং রুম।