শিরোনাম :
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতার মৃত্যুবার্ষিকী পালন
ডিসিনিউজ ।। ঢাকা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। জাতির পিতার এই মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও যথাযথ মর্যাদায় পালন করে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার স্মরণে নির্মিত জাদুঘরের (পূর্বতন বাসভবন) সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে স্বাধীনতার এই মহান স্থপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন ও খ্রীস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে এদিন রাজধানীর তেজগাঁও গির্জায় বিশেষ প্রার্থনানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় তেজগাঁওয়ের ফাদার সুব্রত বি গমেজ খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন।
এ সময় খ্রিষ্টযাগে জাতির পিতার আত্মার কল্যাণ কামনা ও তাঁর স্বপ্নের শান্তিময় সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রার্থনা করা হয়। খ্রিষ্টযাগের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান নেতৃবৃন্দ।
এই মুজিব বর্ষে জাতির পিতার মৃত্যুবার্ষিকীতে এসোসিয়েশন ও কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও বৃক্ষরোপন অভিযানও পরিচালনা করা হয়। আলোচনা সভায় ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে আরো অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও ও সেক্রেটারি হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ট্রেজারার রতন পিটার কোড়াইয়া, বোর্ড অব ডিরেক্টর পল্লব লিনুস ডি’রোজারিও, সলোমন আই. রোজারিও, পাপিয়া রিবেরু, পাপড়ী আরেং, মনিকা গমেজ, ক্রেডিট কমিটির সদস্য উমা ম্যাগডেলিন গমেজ, সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য স্টেলা হাজরা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের যুগ্ম-মহাসচিব জেমস সুব্রত হাজরা, এসোসিয়েশন মঠবাড়ী শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক থিওফিল রোজারিও, কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’রোজারিও, এসোসিয়েশনের সদস্য মলয় দেবনাথ, ভিক্টর রেসহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান এই মহানায়কের অবদানের কথা স্বীকার করে শ্রদ্ধা জানায়। তাঁরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারণে এই বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। একটি পক্ষ বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, তাই তাঁরা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেললে বাংলাদেশের স্বাধীনতা শেষ হয়ে যাবে। তাই কুচক্রীমহল ১৯৭৫ সালের এই দিনে মহান এই নেতাকে সপরিবারে হত্যা করে। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পিতার আদর্শে সোনার বাংলা বিনিমার্ণের কাজ করে যাচ্ছেন।
‘এই বছর বঙ্গবন্ধু ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। সেই সাথে মুজিববর্ষ চলছে। এই মুজিববর্ষকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে বিভিন্ন শাখা সংগঠন বৃক্ষরোপণ করেছে। পোপ ফ্রান্সিস কর্তৃক ঘোষিত ‘লাউদাতো সি’/ প্রকৃতি বর্ষ ( ২৪ মে, ২০২০-২৪ মে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ); জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ( ১৭ মার্চ ২০২০ -১৭ মার্চ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ) এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী (২৬ মার্চ ২০২১-২৬ মার্চ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ) অর্থপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষে বাংলাদেশের ক্যাথলিক খ্রিষ্টান সমাজ এ মহতী কাজের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে জাতির পিতার এই মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
মহান এই পিতার মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ বৃক্ষরোপণের অংশ হিসেবে বটমলী হোম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করে এই অভিযানে উদ্বোধন করেন।এরপর যথাক্রমে কালীগঞ্জের মঠবাড়ী মিশনে কোরিয়া ভিত্তিক সিস্টার সম্প্রদায় কতংনে হাউজে এবং মিশন প্রাঙ্গণে নেতৃবৃন্দরা বৃক্ষরোপণ করেন। এ সময় মঠবাড়ীর ফাদার উজ্জল লিনুস রোজারিও সিএসসি, সিস্টার থাদিউস ও সিস্টার আন্দ্রেয়া উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন ভাসানিয়া শাখার উদ্যোগে নেতৃবৃন্দ ভাসানিয়াতেও বৃক্ষরোপণ করেন। বৃক্ষরোপণকালে ভাসানিয়া শাখার সভাপতি বিনয় রোজারিও, সেক্রেটারি উইলসন রিবেরু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সোহেল রোজারিও, ভাসানিয়া ক্রেডিটের চেয়ারম্যান তপন বেঞ্জামিন রোজারিও, ভাইস-চেয়ারম্যান নিরঞ্জন পিউরীফিকেশন, প্রধান নির্বাহী জ্যোতি বার্ণার্ড রোজারিও, ম্যানেজার লিংকার্স রোজারিওসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।