শিরোনাম :
বর্ণালীর জয় : বর্ণালী ক্রেডিট নির্বাচন- ২০১৭
টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বর্ণালী ক্রেডিটের নির্বাচন-২০১৭। ৫২ শতাংশ সদস্যদের সরাসরি ভোটে তাপস সরকার এবং উত্তম হালদার বর্ণালী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি: এর কার্যকরি পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
২০ জানুয়ারি, শুক্রবার তেজগাঁও বটমলী স্কুল প্রাঙ্গণে বর্ণালী ক্রেডিটের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতীহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে। নির্বাচনে কার্যকরি পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাধারন সম্পাদক পদ নিয়ে শুধুমাত্র প্রতিদ্বন্দিতা হয়। পরিষদের অন্যান্য সদস্যারা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়। চেয়ার প্রতীক নিয়ে তাপস সরকার এবং কাঁঠাল প্রতীক নিয়ে জেমস্ বাবুল হালদার চেয়ারম্যান প্রার্থীতার ও কলম প্রতীক নিয়ে এড. উত্তম হালদার এবং মাছ প্রতীক নিয়ে আলফ্রেড রায় সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থীতার লড়াই করেন।
সারাদিন নিরবিচ্ছিন্ন ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনের ভোট গণনার পর বেসরকারী ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ৭৬০ ভোটে তাপস সরকার ৬৫৬ ভোট পাওয়া বাবুল হালদারকে হারিয়ে এবং ৭৭১ ভোটে উত্তম হালদার ৬৩৯ পাওয়া আলফ্রেড রায়কে হারিয়ে তিন বছরের জন্য বর্ণালী ক্রেডিটের কার্যকরি বোর্ডে দায়িত্ব নিয়ে নেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, সকাল থেকেই নিরবিচ্ছিন্নভাবে তেমন কোনো সমস্যা ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট প্রদানকারী সদস্যরা উৎসাহর সাথেই ভোট কেন্দ্রে নিজেদের প্রার্থীর প্রতীকে ভোট প্রয়োগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য জানান, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে বর্ণালী ক্রেডিটের কর্মচারীর যোগসাজে সরকারী দল কিছুটা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। ভোট গ্রহণকালে ক্ষমতাসীন দল নতুন পরিচয় পত্র তৈরী করে ভোট প্রয়োগের চেষ্টা চালায় যার সাথে অফিসের কর্মচারী জড়িত। তবে নির্বাচন কমিশনের সতর্ক দৃষ্টির কারণে তা ধরা পড়ে যায় এবং জড়িতদের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী আটক করে রাখেন।
চেয়ার্যান প্রার্থী তাপস সরকার ডিসি নিউজকে বলেন, সকলেই উৎসাহ নিয়ে ভোট প্রদান করছে। সঠিকভাবে ভোট প্রয়োগ হলে ফলাফল ইতিবাচক হবে বলে তিনি আশা করেন।
ভোটে কারচুপি বা দুর্নিতীর কোনো অভিযোগ রয়েছে কিনা এই বিষয়ে তিনি বলেন, তেমন কোনো অভিযোগ নেই। তবে বর্ণালী অফিস থেকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছুটা মিস গাইড করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, অফিস কর্তৃক যে দুর্নিতী ধরা পড়েছে, তা ক্ষমতাসীন দ্বারা করা হয়েছে। এভাবে কোনো নির্বাচনে অফিসারবৃন্দ সরাসরি মিস গাইড করলে কখনো তা ক্রেডিটের জন্য ভাল হবে না।
নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী জেমস্ বাবুল হালদার কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
এদিন বর্ণালী ক্রেডিটের নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের বর্ণালী ক্রেডিটের সদস্যরা অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, অনেক দিন বাদে বর্ণালী ক্রেডিটের উন্নয়নমুখী প্রতিনিধি আসছে, আশা করি বর্ণালী ক্রেডিট এখন থেকে নতুন উদ্যোমে জনকল্যানমুখী কাজ করবে।
নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা
প্রথম থেকেই বিরোধী দলের অভিযোগ ছিলো, ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনকে ঘিরে ষড়যন্ত্র করছে। যেসব প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের পূববর্তী কার্যক্রম হওয়ার নিয়ম ছিলো, সে রকমভাবে হয়নি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ক্ষমতাসীন দল নোটিশ বোর্ড বা সদস্যদের অবগত না করিয়ে শুধু নিজেদের প্রার্থীর জন্য নমিনেশন ফরম সংগ্রহের ব্যবস্থা নেন। বিরোধী প্রার্থীর চেয়ারম্যান এবং সেক্রেটারি অনেক দৌঁড়ঝাপ করে নমিনেশন ফরম সংগ্রহ করতে পারেন সংশ্লিষ্ট কাছে জানা যায়। যে কারণে ক্ষমতাসীন দলের অন্যান্যরা বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হয়।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিছিন্ন কয়েকটি অভিযোগও উঠে আসে ক্ষমতাসীন দল এবং অফিস কর্মচারীদের বিষয়ে। নির্বাচনের পূর্বের দিন (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় বিরোধী দলের কয়েক জনের উপর ক্ষমতাসীন দল চড়াও হয় এবং তাদের মারধোর করে, মোবাইল ফোন ভেঙ্গে ফেলে এবং সিম কার্ড জব্দ করে রাখেন। প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, নির্বাচনের পূর্বে ক্ষমতাসীন দলের এরকম কার্যকলাপের উদ্দেশ্য হলো, অন্য কেউ যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে সাহস না দেখায়। এ ধরণের কার্যক্রম কখনোই কাম্য নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন এবং বলেন, এসব লোকদের কখনোই ক্রেডিটসহ যেকোনো জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে রাখা উচিত নয়। তারা কখনোই সমাজের ভাল করতে পারে না।
আরবি/আরপি/আরএস/এসএন/ ২০ জানুয়ারি, ২০১৭