শিরোনাম :
পাকিস্তানে হিন্দুদের মন্দির ভাঙ্গার প্রতিবাদে ঐক্য পরিষদের নিন্দা ও প্রতিবাদ
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
পাকিস্তানে হিন্দুদের একটি ঐতিহাসিক মন্দির ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়ায় দেশের সংখ্যালঘুদের সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে।
৯ জানুয়ারি শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই প্রতিবাদ সভায় প্রায় ১০০ জন উপস্থিত হন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক।
প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের করক জেলায় ঐতিহাসিক কৃষ্ণদার হিন্দু মন্দির ভাংচুর ও হামলা করে পাকিস্তানের মুসলিম মৌলবাদীরা। হামলায় অংশ নেয় হাজারো উগ্র মৌলবাদী। মানববন্ধনে একই সাথে দেশপ্রিয় যতীন্দর মোহন সেনের চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জে অবস্থিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ভবন ভাংচুর ও হামলার প্রতিবাদ করা হয়।
প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদের মুখপত্র পরিষদ বার্তার সম্পাদক বাসুদেব ধর, ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাস, সাংগঠনিক সম্পাদক হেমন্ত আই কোড়াইয়া, জয়ন্ত কুমার দেব, অ্যাডভোকেট তাপক কুমার পাল, নির্মল কুমার চ্যাটার্জী প্রমুখ।
ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, পাকিস্তান একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। এদেশের অনেক মানুষ প্রত্যাশা করে ভারত, আমেরিকা ও ইউরোপ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হবে কিন্তু তারা চায় পাকিস্তান, বাংলাদেশ একটি ইসলামিক রাষ্ট্র হবে। এই মৌলবাদ মনোভাব পরিত্যাগ করতে হবে। বাংলাদেশকে ধর্মান্ধদের রাষ্ট্র করতে দেওয়া হবে না।
তিনি পাকিস্তানের খাইবারের হিন্দুদের মন্দির যারা ভেঙ্গেছেন ও হামলা করেছেন, তাদের শাস্তি দাবি করেন।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের উচ্চ আদালত সেদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে রায় দিয়েছিলো কিন্তু রাজনীতিবিদরা সেটা বাস্তবায়ন করেননি। পাকিস্তান ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর যে নিপিড়নমূলক কাজ করছে, তা বন্ধ করার আহ্বান জানান ঐক্য পরিষদের এই নেতা।
পাকিস্তানের খাইবারের হিন্দুদের মন্দির যারা ভেঙ্গেছেন ও হামলা করেছেন তাঁদের ধিক্কার জানিয়েছেন ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া বলেন, ‘পাকিস্তানের সরকার ইমরান খানকে আহ্বান করি সেদেশের সকল হিন্দু খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। সকল ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম চর্চা করার অধিকার রয়েছে।’ তিনি যারা মন্দির ভাংচুর ও হামলার সাথে জড়িত তাদের সকলকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি করেন।
ঐক্য পরিষদের মুখপত্র পরিষদ বার্তার সম্পাদক বাসুদেব ধর বলেন, দেশপ্রিয় যতীন্দর মোহন সেনের চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জে অবস্থিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ভবন ভাংচুর ও হামলার করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করি। সরকারের নিকট দাবি করি, যারা এর সাথে জড়িত তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে।
এ ছাড়া সমাবেশে স্মৃতিবিজড়িত জে এম সে ভবন ধ্বংসের অপপ্রয়াসের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে এই ভবনকে ঘিরে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্যে সরকার ও প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে। একই সাথে পাকিস্তানে হিন্দু মন্দির ভাংচুর ও ধ্বংসের ঘটনায় শত প্রণোদিত মামলা দায়ের করায় পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ কে আন্তরিক আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানানো হয় । এর পাশাপাশি ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরটি পুনঃ নির্মাণের জন্য পাকিস্তানের সরকার প্রধান ইমরান খানের কাছে কাছে জোর দাবি জানানো হয়।
প্রতিবাদ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন রাখেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রকাশনা সম্পাদক জন অরুনেশ বাড়ৈ, এসোসিয়েশনের রমনা থানার নির্বাহী সদস্য টমাস অধিকারী, ঐক্য পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার রায়, এড. কিশোর রঞ্জন মন্ডল, রবীন্দ্র নাথ বসু, রমেন মন্ডল, প্রাণতোষ আচার্য শিবু, নারায়ণ সাহা মণি, এড, কিশোর কুমার বসু রায় চৌধুরী পিন্টু, ধ্রুবলস্কর, এড. বিনয় ঘোষ বিটু, পরিমল কুমার ভৌমিক, জন অরুনেশ বাড়ৈ, চন্দন ভৌমিক, সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য, দিপালী চক্রবর্তী, ব্যারিষ্টার তাপস বল, সজীব সরকার, অশীম কুমার রায় শিশির, মতি লাল রায়, শ্যামল কুমার নাথ, বিশ^জিৎ দাশ লাবু প্রমূখ।