শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিটের ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনা কর্মশালা সম্পন্ন
সুমন কোড়াইয়া ॥ ঢাকা
দিনব্যাপী ঢাকা ক্রেডিটের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও মানব উন্নয়নের লক্ষে ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনা সম্পন্ন হয়।
৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মোহম্মদপুর সিবিসিবি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়ার সঞ্চালনায় কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ, ঢাকা ক্রেডিটের ভাই-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা ক্রেডিটের পরামর্শক উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার পিটার রতন কোড়াইয়া, ন্যাশনাল ওয়াইএমসিএসএ-এর সেক্রেটারি নিপুন সাংমা, ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টমাস রোজারিও, সমিতির উপদেষ্টা, সদস্য, কর্মী, বিভিন্ন সমিতির নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ১৪০ জন।
কর্মশালায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। উল্লেখযোগ্য কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে গুণগত মানের সদস্য বৃদ্ধি, সঞ্চয় আমানত সংগ্রহ, বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ যেমন: স্বাস্থ্য, আইসিটি, আবাসন, গুণগত ঋণ, কনজিউমার প্রডাক্ট ঋণ, ক্রেডিট কার্ড ঋণ, শিক্ষা ঋণ, এগ্রোবেইজড ঋণ, সম্পদ বৃদ্ধি, নেতৃত্বের বিকাশের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান, ঋণখেলাপি হ্রাস, মানবসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি।
স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ঢাকা ক্রেডিটের সম্পদ পরিসম্পদ হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ শত কোটি টাকা এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ঢাকা ক্রেডিটের সম্পদ পরিসম্পদ হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকা।
কর্মশালায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা। তিনি বলেন, ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য এবং ঢাকা ক্রেডিটের কিছু লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে, এগুলো মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান রেখে আমরা আগামী তিন বছরের জন্য পরিকল্পনায় হাতে নিয়েছি। পাশাপাশি আগামী ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার হাতে নিয়েছি।’ তিনি আলোচনায় সকলের অংশ গ্রহণ কামনা করেন। প্রসঙ্গত, ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ক্রেডিট ৭৫ বছর পূর্তি জুবিলি উদযাপন করবে।
দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও কর্মশালায় বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে কৌশলগত পরিকল্পনা করতে হয়। প্রতিষ্ঠান পরিকল্পনা ও লক্ষ্য ছাড়া সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। ঢাকা ক্রেডিট আজ এত দূর এসেছে এর পেছনে রয়েছে একটি রহস্য। আর সেটা হচ্ছে কৌশলগত পরিকল্পনা।’
ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া বলেন, ঢাকা ক্রেডিট আজ ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই সমতি বিগত বেশ কয়েক বছরও এই কৌশলগত পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করেছে। ঢাকা ক্রেডিটের বর্তমান বোর্ড, বিগত বোর্ড, উপদেষ্ঠা, সদস্য ও বিভিন্ন সমিতির নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে এই কৌশলগত পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে সদস্য সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি হবে, বাড়বে সমিতির সম্পদের পরিমাণ।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ করোনভাইরাস মাহামারিতে ঢাকা ক্রেডিটের কৌশলগত পরিকল্পনায় অংশ নেওয়ার জন্য উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘যুবারা যেন স্বেচ্ছাশ্রমে নিজের ইচ্ছায় নেতৃত্বে আসে তার একটি ক্ষেত্র আমাদের তৈরি করতে হবে। ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করার জন্য আমি ঢাকা ক্রেডিটের বর্তমান বোর্ড, কর্মীবাহিনী ও সংশ্লীষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানাই।’
ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টমাস রোজারিও তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনা তাঁদের জন্য বিরাট কর্মযজ্ঞ ছিল। তিনি বলেন, ‘কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করতে আমাদের সাহায্য করেছে পবিত্র বাইবেল, এই প্রতিষ্ঠানের পঁচাত্তর বছর পূর্তি উদযাপন এবং এই প্রতিষ্ঠানের ভিশন।’
তিনি আরো বলেন, আমরা খ্রিষ্টান সম্প্রদায় বাংলাদেশে একটি অতি ক্ষুদ্র সম্প্রদায়। আমরা বাইবেলের লবণ হয়ে উঠতে চাই। আমরা এমন কিছু করতে চাই যার মাধ্যমে আমাদের ছোট সম্প্রদায়কে তুলে ধরতে পারি সবার সামনে। সেগুলোকে লক্ষ্য রেখে আমাদের কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছি।
কর্মশালায় ৫ম ত্রি-বার্ষিক পরিকল্পনায় কী ছিল তা উপস্থাপন করেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাই-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস। এরপর ঢাকা ক্রেডিটের বর্তমান আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরেন সমিতির ফাইন্যান্স বিভাগের এ্যাস্টিসটেন্ট ম্যানেজার ইনচার্জ শ্যামলী কস্তা।
অংশগ্রহণকারীদের আলোচনার পর ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনার কি নোট পেপার উপস্থাপন করেন সমিতির সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া। দুপুরের আহারের পর ছিল ঢাকা ক্রেডিটের আইসিটি বিভাগের উপস্থাপনা। এটি উপস্থাপন করেন সমিতির আইসিটি বিভাগের নির্বাহী পরামর্শক অলড্রিন টমাস গেইন। ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করেন পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
মোবাইল ফিলাইন্সিয়াল সার্ভিসের উদ্বোধন করেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
শুরুতে প্রার্থনা করেন ঢাকা ক্রেডিটের ডিরেক্টর পাপড়ি প্যাট্রিশিয়া আরেং। মঞ্জু মারিয়া পালমার শেষ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ৬ষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক কৌশলগত পরিকল্পনা কর্মশালা সমাপ্ত হয়।
কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন নাগরী ক্রেডিটের চেয়ারম্যান সুমন লরেন্স রোজারিও, মাউসাইদ ক্রেডিটের চেয়ারম্যান ডেভিড প্রবীন রোজারিও, ঢাকা বহুমুখী সমিতির সভাপতি প্রদীপ সরকার, হাউজিং সোসাইটির ডিরেক্টর কল্পনা ফলিয়া, কারিতাস কর্মচারী সমিতির চেয়ারম্যান চয়ন এস রিবেরু, ঢাকাস্থ কুষ্টিয়া ক্রেডিটের চেয়ারম্যান ইব্রিয় সরকার প্রমুখ।
শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাই-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস ।