শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিটে স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা ও কর্মীরা স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেন।
২৫ মার্চ ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টমাস রোজারিও। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা। আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ ও রঞ্জন ডমিনিক পিউরীফিকেশনসহ সিওগণ ও কর্মীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা বলেন, ‘আজকে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছি। জুবিলির সময় পিছনে ফিরে দেখার সময় যে আমরা কতখানি এগিয়েছি। বাঙালি যুদ্ধ করে টিকে থাকার জাতি। ১৯৭১-এ সাড়ে সাত কোটি মানুষ, আমাদের সকলে খেতে পারতাম না। আজকে ১৮ কোটি মানুষ কিন্তু আমরা স্বাবলম্বী। সকলে খেতে পড়তে পারি। উন্নয়নের সূচকে আমরা অনেকগুলোতে সংঘাতিকভাবে এগিয়ে গিয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখের সাথে বলতে হয়, বঙ্গবন্ধু যে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়ার জন্য যুদ্ধ করেছেন কিন্তু আমরা কী ধর্মনিরপেক্ষ আছি, মোটেই নাই। ১৯৭০ বা ১৯৮০ দশকে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছিল, সেই সম্প্রীতি এখন আর নাই। সেই অসাম্প্রদায়িক দেশ যদি থাকতো, তাহলে আজ সুনামগঞ্জের শাল্লায় বা ব্রহ্মণবাড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক হামলা হয় না। আমাদের আবারো ১৯৭২ সনের সংবিধানে ফিরে যাওয়া উচিত।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ করেন যেন আবোরো অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে উঠে।
তিনি উল্লেখ করেন যে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু মালিকানার দ্বিতীয় খাত হিসেবে সমবায়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ১ কোটি ৯ লাখ সমবায়ী আছে। ১ লক্ষ ৭৭ হাজার সমবায় সমিতি আছে। কিন্তু আমাদের অবস্থান কোথায়? জাতীয় পর্যায়ে আমাদের প্রতিনিধিত্ব নাই। সেই জায়গায়টায় আমাদের সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। আমরা যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি, তাহলে সমবায় আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টমাস রোজারিও বলেন, ‘স্বাধীনতা আমাদের যেমন একদিকে গৌরবান্বিত করে, ওনারশীপ দেয়, দায়িত্ব দেয়। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখিনি। আমাদের দেশ স্বাধীন করার জন্য অনেক মানুষ আত্ম-ত্যাগ করেছে। আমরা যদি বাইবেলকে ধারণ করে ওনারশীপ নিতে পারি, সবাই যদি দায়িত্ব নিতে পারি এবং সবাই যদি সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা ধারণ করতে পারি, তাহলে আমরা ব্যক্তিগত জীবনে ও প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো।’
যদিও মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ কিন্তু ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীরা তা একদিন আগে উদযাপন করেছেন। এদিন মহান মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা যুদ্ধ করেছেন, শহীদ হয়েছেন তাঁদের আত্ম-ত্যাগের জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
সকালে ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীরা যখন অফিসে প্রবেশ করেন তখন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টমাস রোজারিও কর্মীদের পতাকা দিয়ে বরণ করেন এবং স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান ও চকলেট প্রদান করেন। তাঁর সাথে ছিলেন অতিরিক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ ও রঞ্জন ডমিনিক পিউরীফিকেশন। এরপর বোর্ড রুমে সকালের প্রার্থনায় অংশ নেন সকলে। সেখানে ছিল স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্জ¦ল ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ‘বাতাসে লাশের গন্ধ…’ কবিতা আবৃত্তি করেন ঢাকা ক্রেডিটের কর্মী রিচার্ড ফ্রান্সিস রোজারিও ও রোজলিমা গমেজ। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব) বিজয় ম্যানুয়েল ডি প্যারেস।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ, রঞ্জন ডমিনিক পিউরীফিকেশন, সিও জোনাস গমেজ, খোকন মার্ক কস্তা ও প্রোগ্রাম ও প্রেটোকল ম্যানেজার স্বপন রোজারিও।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা ক্রেডিটের কর্মী রুপনা রিবেরু ও খোকন মাংসাং।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান কার্যালয়ের মতো মনিপুড়িপাড়া, পাগাড়, সাধনপাড়া, মিরপুর, হাসনাবাদসহ অন্যান্য সেবাকেন্দ্রগুলোতেও স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু এদেশকে পশ্চিম পাকিস্তানের নিকট হতে স্বাধীন দেশ ঘোষণা করেন। এরপর বাঙালি ঝপিয়ে পড়ে লড়াইয়ে। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। এই বছর উদযাপন করা হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী।