শিরোনাম :
২০ বছরেও বিচার হয়নি বানিয়ারচর গির্জার বোমা হামলার
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
খুলনা ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের বানিয়ারচর ক্যাথলিক গির্জায় বোমা হামলার ২০ বিছর পূর্তি আজ।
বিশ বছরেও বিচার হয়নি ২০০১ সনের ৩ জুনের রবিবাসরীয় গির্জায় বোমা হামলার ঘটনার। যেখানে প্রার্থনারত ১০ জন নিহত ও অর্ধশত আহত হন।
জানা গেছে, এই কুড়ি বছরেও এই ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ। ফলে বিচারকাজই শুরু হয়নি। হতাশা ও ক্ষোভ নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন হতাহত ব্যক্তিদের পরিবার ও স্বজনেরা। প্রশ্ন উঠেছে, দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিচার কী হবে না?
বরিশাল ধর্মপল্লীর ফাদার জেরম রিংকু গোমেজ ডিসিনিউজকে জানান, দিনটি উপলক্ষে বানিয়ারচর গির্জায় সকালে নিহতদের স্মরণে প্রার্থনা করা হয়েছে। স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে বিকালে। তিনি নৃশংস এই হামলার বিচার দাবি করেন।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন বানিয়ারচর ক্যাথলিক গির্জায় বোমা হামলা ও বড়াইগ্রামের বনপাড়ার সুনীল গমেজ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে আগামী ৫ জুন অনলাইনে স্মরণ ও প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে। খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেডিডেন্ট নির্মল রোজারিও ও মহাসচিব বানিয়ারচর গির্জায় বোমা হামলার এতদিনেও এই হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ, অসস্তোষ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে এই নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
দেশের খ্রিষ্টমন্ডলীর ইতিহাসে ভয়াবহ ওই বোমা হামলার ঘটনায় গির্জার পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়। একটি হত্যা মামলা। অপরটি বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা। গত ২০ বছরে ২৩ বার তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগপত্র জমা হয়নি।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সুভাষ চন্দ্র জয়ধর প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি এখন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা বারবার পরিবর্তন হওয়ার কারণে হয়তো তদন্ত ব্যাহত হচ্ছে। আদালতে অভিযোগপত্র জমা হলে বিচারকাজ শুরু হবে।
নিহত সুমন হালদারের বাবা সুখ রঞ্জন হালদার স্তৃতিচারণ করে বলেন, ‘সেদিন ছিল রোববার। আমার ছেলে সুমন হালদার প্রার্থনা করতে গিয়েছিল গির্জায়। হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনি। দৌঁড়ে এসে দেখি আমারা ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এরপর থেকে ছেলে হত্যার বিচারের আশায় দিন গুনছি আমরা। কিন্তু দীর্ঘ ২০ বছর অপেক্ষার পরও এখন পর্যন্ত বিচার পেলাম না। ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে পারব কিনা তাও জানি না।’
নিহত সতীশ বিশ্বাসের স্ত্রী ললিতা বিশ্বাস বলেন, ‘ছেলে ছোট থাকতেই বোমা হামলায় আমার স্বামী মারা যান। অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে ছেলেকে মানুষ করেছি। দীর্ঘ দিন পার হলেও আমার স্বামী হত্যার বিচার পেলাম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি আমি যেন দ্রত স্বামী হত্যার বিচার পাই।’
নিহত সতীশ বিশ্বাসের ছেলে অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘খুব ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছি। আদর-স্নেহ পাওয়া তো দূরের কথা বাবার চেহারাটা মনেও নেই। আর যেন কেউ তার বাবাকে না হারায়। প্রধানমন্ত্রী কাছে আবেদন আমি যেন আমার বাবার হত্যার বিচার পাই।’