শিরোনাম :
পরবর্তী নির্বাচন কমিশনে যারা থাকছেন
বাংলাদেশে পরবর্তী প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদার নাম অনুমোদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ।
সোমবার রাতে মন্ত্রীপরিষদ সচিব মো: শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সার্চ কমিটি দুজনের নাম প্রস্তাব করেছিল- একজন হলেন কে এম নুরুল হুদা এবং আরেকজন সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কে এম নুরুল হুদাকে বেছে নিয়েছেন।
এছাড়াও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যে চারজনের নাম অনুমোদন করেছেন রাষ্ট্রপতি তারা হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম কবিতা খানম, সাবেক সচিব মো: রফিকুল ইসলাম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদা
১৯৭৩ ব্যাচের সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন কে এম নূরুল হুদা। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীতে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয় যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। কে এম নুরুল হুদা চাকরিজীবনে ফরিদপুর ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছাড়াও কিছু মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু সচিব হিসেবে কোনও মন্ত্রণালয় তিনি পরিচালনা করেননি – নাম ঘোষণার পর এমনটা জানিয়েছেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব মো: শফিউল আলম । দীর্ঘদিন ওএসডি থাকার পর ২০০৬ সালে সচিব হিসেবে অবসরে যান নুরুল হুদা।
নির্বাচন কমিশনারদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
মাহবুব তালুকদার, সাবেক অতিরিক্ত সচিব
টাঙ্গাইলে নানাবাড়িতে জন্ম হলেও মাহবুব তালুকদারের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়। ছোটবেলায় কিছু সময় কলকাতায় কাটিয়েছেন। ১৯৪৮ সালে ঢাকায় আসেন তিনি। নবাবপুর হাই স্কুলে পড়েছেন, এরপর ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের ১৯৬৩ সালে। এরপর তিনি জগন্নাথ কলেজ ও বুয়েটেও শিক্ষকতা করেন। সেইসময় বুয়েটের আকির্টেকচারে তৃতীয় বর্ষে বাংলা পড়ানো হতো। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তিনি। এরপর ১৯৭২ সালের ২৪শে জানুয়ারি থেকে ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে বঙ্গভবনে কাজ শুরু করেন মাহবুব তালুকদার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমির ডিরেক্টর জেনারেল হিসেবেও কাজ করেছেন মি: তালুকদার। পার্লামেন্টের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ১৯৯৯ সালে অবসরে যান তিনি।
এছাড়াও লেখক হিসেবে পরিচিতি রয়েছে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদারের। তাঁর লেখা বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের বেশি। শিশুসাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান মাহবুব তালুকদার।
শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
১৯৫৯ সালে নোয়াখালিতে জন্মগ্রহণ করেন শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে সেনাবাহিনীতে তিনি যোগদান করেন ১৯৮০ সালে। বাংলাদেশ সরকারের ‘জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার রেজিস্ট্রেশন’ প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ২০১০ সালের জুন মাসে স্বেচ্ছায় অবসরগ্রহণ করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম কবিতা খানম
বাংলাদেশে প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেতে যাওয়া বেগম কবিতা খানমের বাড়ি নওগাঁ জেলায়, তাঁর জন্ম ১৯৫৭ সালে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রি অর্জনের পর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। বিসিএস জুডিশিয়াল ক্যাডার হিসেবে ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজশাহী মুন্সেফ কোর্টে যোগদান করেন কবিতা খানম। পদোন্নতি পেয়ে ১৯৯৪ সালে যুগ্ম জেলা জজ ও ২০০০ সালে অতিরিক্ত জেলা জজ হন তিনি। ২০০৬ সালে জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান কবিতা। জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীতে কর্মরত ছিলেন তিনি। তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর অবসরে ছিলেন।
রফিকুল ইসলাম, সাবেক সচিব
আরেকজন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অনুমোদিত রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে কাজ করেছেন।
আরবি/ এসএন/ আরএস/ ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭