শিরোনাম :
ঢাকার শাহবাগে দুর্গাপূজায় সাম্প্রদায়িক হামলা, প্রতিমা ভাংচুর ও পূজা অর্চনা ভন্ডুলের প্রতিবাদে সমাবেশ ও মিছিল (ভিডিও)
ডিসিনিউজ ।। ঢাকা
কুমিল্লা, চাঁদপুর, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শারদীয় দুর্গাপূজার মন্ডপে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা, প্রতিমা ভাংচুর ও পূজা অর্চনা ভন্ডুলের প্রতিবাদে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে।
পূজার শেষ দিনই ১৬ অক্টোবর, রাজধানী শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মিছিলে অংশ নেয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মৃণাল কান্তি দত্ত বলেন, ‘পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের প্রাণের উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, প্রতিমা ভাংচুর ও পূজা অর্চনা ভন্ডুল করা হয়েছে। পূর্বেও এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার সব সময়ই বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমরাও তা ধারণ করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অসাম্প্রদায়িকতার ফসল। কিন্তু যদি তাই হয়, তবে স্বাধীনতার এত বছর পরও কেন এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা! সরকার কেন বরাবর চুপ রয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এই নাশকতার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা দ্রুত এর বাস্তবায়ন চাই।’
বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও বলেন, ‘দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা, নোয়াখালী, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে নাশকতা ও মিথ্যাচার করে অস্থিরতার সৃষ্টি করা হয়েছে, তা সত্যিই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। সরকারের উচিত দ্রæত এর সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদান করা। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, তারপরও এই ধরণের ঘটনা দুঃখজনক। আমরা এর প্রতিকার চাই।’
সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ডিসিনিউজকে বলেন, ‘রাষ্ট্র যার যার, উৎসব সবার।’ কিন্তু এরপরও ধর্মীয় উৎসবের সময় নাশকতাসহ নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে হলে যারা এই সব নাশকতার সাথে জড়িত এবং ইন্ধনদাতা তাদের কঠোরভাবে শাস্তি দিতে হবে। জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে কখনোই দেশ উন্নতি করতে পারে না। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যে সকল নাশকতা চালানো হয়েছে, তা নিন্দনীয় ও জঘণ্য।’
এ ছাড়াও এদিন আরো বক্তব্য রাখেন, অ্যাভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মনিন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত সেন দীপু, তাপস পাল, অ্যাডভোকেট কিশোর কুমারসহ আরো অনেকে।
উক্ত সমাবেশ ও মিছিলে খ্রিষ্টান সমাজের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের মহাসচিব ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, যুগ্মমহাসচিব জেমস সুব্রত হাজরা, লক্ষ্মীবাজার শাখার সেক্রেটারি ভিক্টর রে, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জন অরুনেশ, তেজগাঁও শাখার সদস্য মাইকেল বাড়ৈ একাত্মতা জানিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা, প্রতিমা ভাংচুর ও পূজা অর্চনা ভন্ডুলের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে শাহবাগ থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রেসক্লাবে শেষ হয়।