ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা!!

বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা!!

0
132

ডিসিনিউজ ডেস্ক
বায়ুদূষণের কারণে দূষিত শহরের তালিকায় আজ রোববার প্রথম স্থানে আছে রাজধানী ঢাকা। সকাল সাড়ে আটটায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই-বায়ুর মান সূচক) স্কোর ২৩৫। বায়ুর মান বিচারে এ পরিস্থিতি খুবই অস্বাস্থ্যকর। আজ একই সময়ে এ তালিকায় ঢাকার পরই আছে চীনের শহর চেংডু (২০০)।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।
একিউআই স্কোরে আজ সকাল সাড়ে আটটায় বায়ুর মানের নিরিখে দূষিত তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল ভারতের মুম্বাই (১৯৯)। ১৮৫ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে পাকিস্তানের করাচি। তাইওয়ানের কাওশিয়াং আছে পঞ্চম স্থানে, স্কোর ১৮৩। এরপরই আছে চীনের উহান (১৮৩) ও মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোর (১৬৯)।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। আর ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীন এবং অন্ত:স্বত্বা মায়েদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
ঢাকায় চলতি জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দিন দুর্যোগপূর্ণ বায়ুর মধ্যে কাটিয়েছেন নগরবাসী। এ মাসে মোট ৯ দিন রাজধানীর বায়ুর মান দুর্যোগপূর্ণ ছিল, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি বছরের এই চার মাস ঢাকার বায়ু বেশি দূষিত থাকে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে বায়ুর মান থাকে সবচেয়ে বেশি খারাপ। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয় গত বৃহস্পতিবার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রন সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির প্রথম সভায়। সচিবালয়ের ওই সভায় বলা হয়, সারা দেশের অবৈধ ইটভাটাগুলো দ্রুত ভেঙে দেওয়া হবে। গাড়ির কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে অভিযান চলবে। বড় বড় নির্মাণ কার্যক্রমের দূষণের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান জোরদার করা হবে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘ঢাকার বাতাসে ভয়াবহ বিপদ!’ আমরা ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত বিষ গ্রহণ করছি! খাবারে বিষ, বাতাসে বিষ, পানিতে বিষ, মাছ-ফল-সব্জিতে বিষ, চলাফেরায় ঝুঁকি। এরকম কত কিছুর ঝুঁকি নিয়েই আমরা চলছি! এটি সত্যিই দুঃখজনক। হতাশার যেন শেষ নেই। সব যায়গায় সমস্যা! এসব দেখারও যেন কেউ নেই! অনুধাবন বা অনুভাবন করারও যেন কেউ নেই!

বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। রাস্তাঘাট বাড়ীঘর নির্মাণে যার দ্বারা ধুলির উৎপত্তি, তাকে দিয়েই সাথে সাথে সেটা অপসারণ করাতে হবে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বালির ব্যবহার সিমেন্টের মত বস্তায় ভরে নির্মানস্থলে আনা-নেওয়া ছাড়াও রাস্তার পাশে ঢেলে রাখা যাবেনা। বাতাসে অতিমাত্রায় ধুলার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শহরের গাছগাছালিও। গাছের পাতায় জমছে ধুলার আস্তরণ। এর ফলে গাছের খাদ্য ও অক্ষিজেন তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
এক গবেষণায় দেখা যায়, এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় ময়লা-আবর্জনা পোড়ানোর ফলে ধোঁয়া তৈরি হয়। তাতেই বাতাসে বাড়তি দূষিত পদার্থ যোগ হয়।
এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, কাঁটাবন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ আবাসিক এলাকা ঘুরলে দেখা যাবে অন্তত সাতটি জায়গায় ময়লা পোড়ানোর পর রাস্তায় পড়ে থাকা ছাই দেখা যায়। এর মধ্যে একটি জায়গা এলিফ্যান্ট রোডে বাটার সিগন্যাল মোড় থেকে গাউছিয়া মার্কেটের দিকে যাওয়ার রাস্তার মুখে। সেখানে ফুটপাতের কোনায় স্ত‚প আকারে পড়ে থাকে প্লাস্টিকপণ্য, ককশিটসহ নানা আবর্জনা। তাতে পিট পিট করে আগুন জ্বলে। কালো ধোঁয়া উড়ে।
ঢাকার বায়ুদূষণের বড় কারণ যুক্ত হচ্ছে ময়লা পোড়ানো। পাড়া মহল্লায় বায়ুদূষণের এটি অন্যতম কারণ দুই সিটি করপোরেশনের হিসাবে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর একটি অংশ সড়কে জমা হওয়া। বড় সড়কগুলোতে ঝাড়ু দিয়ে ময়লা বিভিন্ন জায়গায় জমা করে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। কাজটি চলে রাত ৯টা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত। সড়কে ঝাড়ু দিয়ে জমা করা ময়লার একটা অংশ গভীর রাতে ফুটপাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।