ঢাকা ,
বার : বৃহস্পতিবার
তারিখ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ১২ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ঢাকা ক্রেডিট দেশসেরা সমবায় প্রতিষ্ঠান ঢাকা ক্রেডিটের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

দেশসেরা সমবায় প্রতিষ্ঠান ঢাকা ক্রেডিটের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

0
213

মারিয়া মৌসুমী রোজারিও ।। ডিসিনিউজ ।। ঢাকা

পবিত্র খ্রিষ্টযাগ, প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভার মাধ্যমে উদযাপন করা হলো ঢাকা ক্রেডিটের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

৩ জুলাই, সকাল ৮ টায় তেজগাঁও চার্চে পবিত্র খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রতিষ্ঠাতা ফাদার চার্লস জে. ইয়াং সিএসসি ও প্রাক্তন কর্মকর্তাদের সমাধীতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে তাদের আত্মার মঙ্গলে প্রার্থনা করা হয়।

এদিন সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা ক্রেডিটের বিকে গুড কনফারেন্স হলে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়ার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জন মাইকেল গমেজের সঞ্চালনায় ৬৮তম প্রতিষ্ঠা বাষির্কী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ, বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট পাপড়ী দেবী আরেং, ট্রেজারার সুকুমার লিনুস ক্রুশ, প্রধান নির্বাহী অফিসার লিটন টমাস রোজারিও, দি মেট্রোপলিটান খ্রিষ্টান হাউজিং সোসাইটি লি:’র ভাইস চেয়ারম্যান অপূর্ব যাকোব রোজারিও, দি মেট্রোপলিটান খ্রিষ্টান হাউজিং সোসাইটি লি:’র সেক্রেটারী ইমানুয়েল বাপ্পী মন্ডল, ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল লি:’র সিইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জন গমেজ, মেডিকেল ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার ব্রাইন বঙ্কিম হালদার, হাসনাবাদ ক্রেডিটের চেয়ারম্যান নিকোলাস কোড়াইয়াসহ ঢাকা ক্রেডিটের কর্মকর্তা, উপদেষ্টা, নারী কমিটির সদস্য এবং সমিতির কর্মীবৃন্দরা।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে ক্রেডিট ইউনিয়ন গঠন করার জন্য ঢাকা ক্রেডিটের প্রতিষ্ঠাতা ফাদার চার্লস জে. ইয়াংকে বিন¤্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। ৬৮ বছরের পথ চলায় ঢাকা ক্রেডিটে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে গেছেন এবং যাচ্ছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ঢাকা ক্রেডিটের স্বপ্নের ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল লি: আমরা এই বছরের শেষে উদ্বোধন করতে পারবো। ঢাকা ক্রেডিট এখন ডিজিটালাইজেশন থেকে স্মার্ট ক্রেডিটে রূপান্তর হচ্ছে। আপনাদের সহযোগিতায় আমরা ঢাকা ক্রেডিটকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’

এ সময় অন্যান্য বক্তারা ঢাকা ক্রেডিটের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তারা বলেন, ঢাকা ক্রেডিট যে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে চলে, এটাই মূলত ঢাকা ক্রেডিটের উন্নয়নের মূলমন্ত্র। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ঢাকা ক্রেডিট সদস্যদের উন্নয়নে অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করছে। আজ সমবায় অঙ্গনে ঢাকা ক্রেডিট একটি গর্বিত নাম। এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সম্ভব হয়েছে ঢাকা ক্রেডিটের সততা, নিষ্ঠা এবং দক্ষ পরিচালনার গুনে।
এ দিন সমিতির জন্মদিন উপলক্ষে অতিথিবৃন্দদের সাথে নিয়ে প্রেসিডেন্ট কেক কেটে সকলের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

উল্লেখ্য, এইদিন সকালে ফার্মগেটের পবিত্র জপমালা রাণীর গির্জায় চার্চের সহকারী পাল-পুরোহিত সনি রোজারিও এই খ্রিষ্টযাগ অর্পন করেন। খ্রিষ্টযাগ শেষে সমিতির প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়ার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জন মাইকেল গমেজের সঞ্চালনায় প্রার্থনানুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, বর্তমান ভাই-প্রেসিডেন্ট পাপড়ী দেবী আরেং, ট্রেজারার সুকুমার লিনুস ক্রুশ, প্রধান নির্বাহী অফিসার লিটন টমাস রোজারিও, বোর্ড অব ডিরেক্টর, ক্রেডিট কমিটি ও সুপারভাইজরি কমিটির সদস্যসহ কর্মীবৃন্দরা।

ঢাকা ক্রেডিট প্রতিষ্ঠার পটভূমি
ব্রিটিশ শাসনামলের পরেই এই ভূ-খন্ডে প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তানি শাসন। আঞ্চলিক বৈষম্যের শিকার পূর্ব বাংলার জনগণের আর্থিক দুর্দশা ছিল অপরিমীত। জরুরি আর্থিক প্রয়োজনে তৎকালীন বণিক ও কাবুলিওয়ালারা হতদরিদ্রদের বাধ্য করতো তাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে। ঋণের ওপর অসহায় মানুষদের গুণতে হতো চড়া সুদ।
অত্যাচারি ও কাবুলিওয়াদের উৎপীড়নের থাবা থেকে ঢাকা শহরের দরিদ্র খ্রিষ্টানদের মুক্তি দিতে এগিয়ে এসেছিলেন তৎকালীন কাথলিক চার্চের নিবেদিত প্রাণ ফাদার চার্লস জে ইয়াং সিএসসি। তৎকালীন ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স এল গ্রেনার সিএসসি তাঁকে কানাডায় পাঠিয়ে সমবায়ের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেন। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ঢাকায় একটি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন গঠন করে খ্রিষ্টানদের সকল প্রকার উৎপীড়ন ও আর্থিক অসহায়ত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া।

প্রতিষ্ঠাকাল
১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ৩ জুলাই ফাদার চার্লস জে ইয়াংয়ের নেতৃত্বে পুরনো ঢাকার ল²ীবাজার চার্চে একটি সভা আহবান করা হয়। সভায় পঞ্চাশ জন খ্রিষ্টভক্তের অংশগ্রহণে মি. বার্নার্ড ম্যাকার্থীকে প্রেসিডেন্ট ও মি. জোনাস রোজারিওকে সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ক্রেডিট ইউনিয়ন আন্দোলন গঠনের ক্ষেত্রে এটাই ছিল এ দেশে স্মরণকালের প্রথম ক্রেডিট ইউনিয়ন গঠনের সভা। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুলাইয়ের এই ঘটনাটি তৎকালীন খবরের কাগজে ছাপা হয়। দরিদ্র খ্রিষ্টভক্তদের আর্থিক সংকট দূরীকরণের স্বপ্ন দানা বাঁধতে থাকে।
তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মার্চ ১৯৪০-এর বেঙ্গল সোসাইটি এ্যাক্টের অধীন ‘দি খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড, ঢাকা’ নামে নিবন্ধন লাভ করে।

বিকাশ/প্রসার
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মে চার্চের হলরুম থেকে ক্রেডিট ইউনিয়ন অফিসটি স্থানান্তর করে ৬১/১ সুবাস বোস এভিনিউ ঠিকানায় সাপ্তাহিক প্রতিবেশী অফিসে আনা হয়। একই বছরের ৪ ফেব্রæয়ারি ওই ঠিকানাতেই আর্চবিশপ টি এ গাঙ্গুলী মেমোরিয়াল হল কমিউনিটি সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।

১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে অফিসটি তেজগাঁও চার্চ কমিুনিটি সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। বৃদ্ধি পেতে থাকে এর সদস্য সংখ্যা। পরে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুন ১৭৩/১/এ পূর্ব তেজতুরীবাজার ঠিকানায় পাঁচতলা এই প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন করে পূর্ণ উদ্যোমে এর কার্যক্রম শুরু করা হয়। মহান প্রতিষ্ঠাতার নামানুসারে এই ভবনের নামকরণ করা হয় ফাদার চার্লস জে. ইয়াং ভবন।

ক্রেডিট ইউনিয়নের কলেবর ও সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে সাধারণ খ্রিষ্টভক্ত ও চার্চের নেতৃত্ব সমৃদ্ধ হতে থাকে। দি খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড, ঢাকা-এর পরিবর্তে ‘ঢাকা ক্রেডিট’ নামেই সমিতিটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।

এই প্রতিষ্ঠানকে বর্তমান অবস্থানে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে যেসব নিবেদিত প্রাণ সেবা দিয়েছেন তারা আজ সমাজের স্থাপতি হয়ে চির অ¤øান। তাঁরা খ্রিষ্টীয় সেবার মূর্ত প্রতীক। তাঁরাই আজ আমাদের সবার প্রেরণার উৎস। কালেকালান্তরে এমন নিবেদিত প্রাণ বারবার ফিরে এসে ঢাকা ক্রেডিটকে নিয়ে যাবে আরো এক মহান উচ্চতায়।

আজকের ঢাকা ক্রেডিট
২২ জনের ব্যবস্থাপনা পরিষদের নেতেৃত্বের ফলস্বরূপ বিভিন্ন সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের নতুন নতুন প্রডাক্টস, সেবা ও প্রকল্পের উদ্ভাবন ঘটে। প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে রয়েছে প্রায় ১২শ কোটির টাকার সম্পদ-পরিসম্পদ, ১০টি নিজস্ব ভবন, ১২টি সেবাকেন্দ্র, ২২টি কালেকশন বুথ, ৮৭টি প্রডাক্ট ও প্রকল্প, প্রায় ৫৫০ জন কর্মী এবং ৪৫ হাজার গর্বিত সদস্য।

যুগোপযোগী সদস্যসেবা ও কর্মসম্পাদনের লক্ষে ঢাকা ক্রেডিটের রয়েছে ১৮টি বিভাগ।
ঢাকা ক্রেডিটের নানামুখি সেবা প্রদানের জন্য প্রায় ৫৩টি উপ-কমিটি রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে উপদেষ্টা কমিটি, নারী কমিটি, যুব কমিটি, শিক্ষা কমিটি ইত্যাদি। ঢাকা ক্রেডিটের কার্যক্রম ঢাকা শহরকেন্দ্রিক শুরু হলেও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আর্থিক ও সেবা নিশ্চিতের লক্ষে বর্তমানে এর কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ঘটেছে ৪টি জেলায়: ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়গঞ্জে।

ঢাকা ক্রেডিট কার্যক্রমের সফলতার চ‚ড়ান্ত সীমায় বিচরণ করে শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সমবায়ের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ৩০০ শয্যার ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল। এ ছাড়াও রয়েছে ডিসি রিসোর্ট এন্ড ট্রেনিং সেন্টার, ক্রেডিট ইউনিয়ন স্কুল, আন্তর্জাতিকমানের চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টার, ডিসি বিউটি পার্লার এন্ড ট্রেনিং সেন্টার, বান্দুরা বহুমুখী প্রকল্পের অধিনে গেস্ট হাউস, ট্রেনিং সেন্টার, কনফারেন্স হল, কমিউনিটি সেন্টার, ডিসি জিম, কালচারাল একাডেমি, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে মূলস্রোতে তধারায় ফিরিয়ে আনতে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তার নিমিত্তে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও লোন, কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী নারীদের জন্য সাধনপাড়া, মণিপুরীপাড়া ও নদ্দায় ৩টি আবাসিক হোস্টেল, ডিসি সিকিউরিটি সার্ভিস, স্পেশাল ইংলিশ কোর্স, ILTES, ম্যাকার্থী লাইব্রেরি, জব লিংকিং সেল, কলসেন্টার, সেলাই ও চাইনিজ রান্না প্রশিক্ষণ, স্বল্পমূল্যে মেডিকেল সেবা ও এম্বুলেন্স সার্ভিসসহ জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সেবা প্রদানের লক্ষে আরো অনেক প্রকল্প।

ঢাকা ক্রেডিট ডিজিটালাইজেশনের পথে অগ্রসর হয়ে ইতিমধ্যে শুরু করেছে নিজস্ব সফট্ওয়ার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, যা ঢাকা ক্রেডিটসহ বিভিন্ন সমবায় সমিতির নিরাপত্তায় স্বল্পমূল্যে ব্যবহার করতে পারবে। রয়েছে নিজস্ব অ্যাপ সেবা, যেখানে এমএফএস, সংবাদ, নোটিশ, প্রকল্প সেবাগ্রহণ, প্রয়োজনীয় যোগাযোগের ব্যবস্থাসমূহ সন্নিবেশিত রয়েছে। এমএফএস-এর মাধ্যমে সদস্যরা এখন অফিসে না এসেও বিভিন্ন ধরণের সেবা- ব্যক্তিগত তথ্য, মানি ট্রান্সফার, ঋণ পরিশোধ, জামিনদারের তথ্য, এটিএম সার্ভিসে কিউআর কোড ব্যবহার করে টাকা উত্তোলনের মতো আধুনিক ও স্মার্ট সুবিধা। উল্লেখযোগ্য একটি সুবিধা হলো নিয়মিত সদস্যরা এই সার্ভিসের মাধ্যমে অফিসে না এসে যেকোনো সময় ইনস্ট্যান্ট লোন গ্রহণ করতে পারবেন। ঢাকা ক্রেডিটের উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোতে রয়েছে ২৪ ঘন্টার এটিএম সার্ভিসের সুব্যবস্থা।

সদস্যদের সঞ্চয়ী হিসেবে গড়ে তোলার নিমিত্তে রয়েছে সাধারণ সেভিংস, দীর্ঘমেয়াদি আমানত সুবিধা, মাসভিত্তিক সঞ্চয়, মিলিনিয়ার স্কীম, শিশু-কিশোরদের জন্য বী-সেভার্স ও স্মার্ট-সেভার্স, বিবাহ সঞ্চয় স্কীম, ডাবল ডিপোজিট স্কীম, অবসর জীবনের নিরাপত্তার জন্য বয়ষ্ক সঞ্চয় প্রকল্প (পিবিএস) ইত্যাদি।

সদস্যদের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক বুনিয়াদ মজবুদ করণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান বর্তমানে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে থাকে। প্রতিষ্ঠানের রয়েছে সাধারণ ঋণ, বাড়ি নির্মান ঋণ, ব্যবসায়িক ঋণ, উচ্চশিক্ষা ঋণ, ক্রেডিট সিলিং ঋণ, টপ-আপ ঋণ, বিভিন্ন সঞ্চয়ের বিপরীতে ঋণ, গাড়ি ক্রয় ঋণ, ভোক্তা ঋণ, উচ্চশিক্ষা ঋণ, সলভেন্সি ঋণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা ঋণ, কৃষি ঋণ, ব্যবসায়িক ঋণ, বিবাহ ঋণ ইত্যাদি।

এসবের পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে ঢাকা ক্রেডিট। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, জাতীয় শোক দিবস পালনসহ বৃক্ষরোপন কর্মসূচী, জাতীয় সমবায় ও সামাজিক উন্নয়ন এবং সচেতনতামূল র‌্যালি ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ঢাকা ক্রেডিট ভ‚মিকা রাখছে। সেই সাথে মান্ডলিক কাজে সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ করেও সমাজ উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছে।

বিভিন্ন অর্জন ঢাকা ক্রেডিটকে এনে দিয়ে গৌরবের মুকুট। ১৯৯০ ও ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ক্রেডিট শ্রেষ্ঠ ক্রেডিট ইউনিয়ন হিসেবে জাতীয় স্বর্ণপদক লাভ করে; এবং শ্রেষ্ঠ সমবায়ী হিসেবে সমিতির চারজন প্রেসিডেন্ট পর্যায়ক্রমে মি. হিউবার্ট গমেজ, প্রয়াত ডানিয়েল কোড়াইয়া, প্রয়াত অরুন বার্নার্ড ডি’কস্তা, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা ১৯৯৪, ১৯৯৫ ও ১৯৯৭, ২০১৮ এবং ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ক্রেডিটের শিক্ষা তহবিলের অর্থ ব্যবহার করে ঢাকা ক্রেডিট দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ লিমিটেড (কাল্ব) প্রতিষ্ঠা করা হয়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সেবা প্রদানের লক্ষে ফাদার চার্লস জে. ইয়াং ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ছাড়াও অভিভাবক প্রতিষ্ঠান দি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভস ক্রেডিট ইউনিয়ন লি: (কাককো) প্রতিষ্ঠায়ও ঢাকা ক্রেডিট অগ্রণী ভ‚মিকা রেখেছে। আর সমবায়ের ইতিহাসে ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে যুগযুগান্তরে।