শিরোনাম :
মাউসাইদ ধর্মপল্লীতে সাধু আগষ্টিনের গীর্জা উদ্বোধন
ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের অধীনস্থ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাউসাইদ ধর্মপল্লীতে ক্যান্টারবারীর সাধু আগষ্টিনের গীর্জা উদ্বোধন করা হয়েছে।
১৪ জুন, ক্যান্টারবারীর সাধু আগষ্টিনের নতুন গীর্জা উদ্বোধন অনুষ্ঠানের খ্রীষ্টযাগে পৌরহিত্য করেন কার্ডিনাল প্যাট্টিক ডি’ রোজারিও সিএসসি। খ্রীষ্টযাগে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ভাতিকানের রাষ্ট্রদূত আচবিশপ কেভিন রান্ডাল ও ঢাকার আর্চ বিশপ বিজয় এন ডি’ ক্রুজসহ অন্যান্য পুরোহিতবৃন্দ।
সকালে মহাখ্রীষ্টযাগে বেদি আশির্বাদের মধ্যে দিয়ে নতুন গীর্জা উদ্বোধন করা হয়। পরে উপস্থিত কার্ডিনাল ও আর্চবিশপদ্বয়কে মাউসাইদ ধর্মপল্লীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া করা হয়।
কার্ডিনাল রাজারিও তার অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, “গির্জা শুধু একটা বিল্ডিং নয়, এটা হলো যীশুখ্রীষ্টের আবাসস্থল।”
তিনি বলেন, সময় এসেছে যখন খ্রীষ্টভক্তরা গির্জা, হাসপাতালসহ বড় বড় মান্ডলীক কাজ সম্পন্ন করবে এবং ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল ও এই গির্জাই এর বড় প্রমাণ। কারণ, আমার জানা মতে গির্জা নির্মানের সবচাইতে বেশি সাধারণ খ্রিষ্টভক্তের অনুদান এই গির্জার ক্ষেত্রেই।”
এই গির্জাটি নির্মাানে যাদের উদার দান, শ্রম, পরামর্শের মধ্যদিয়ে এ বৃহৎ গির্জাঘর গড়ে উঠেছে তাদের সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে আর্চবিশপ বিজয় বলেন, “গির্জাঘর আমাদের খ্রীষ্টবিশ্বাস প্রকাশের একটা উত্তম মাধ্যম, মান্ডলীক একতা ও একাত্মতা প্রকাশের মিলন স্থান ও ভক্তজনগনের আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতা লাভের সহায়কস্বরুপ।”
১৮৯৩ সালে ক্যান্টারবারির সাধু আগষ্টিনের মাউসাইদ ধর্মপল্লী প্রতিষ্ঠিত হয় যখন পুরো ভাওয়াল অঞ্চলে নাগরী, তুমিলিয়া ও মাউসাইদ ধর্মপল্লী ছিল। বর্তমানের মাউসাইদ ধর্মপল্লী থেকেই ভাদুন, পাগার ও মৌশায়ের (চালাবন) ধর্মপল্লীর সৃষ্টি হয়।
গির্জাঘর উদ্বোধনের পরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাউসাইদ ধর্মপল্লীর সন্তান দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) এর প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া ও দি মেট্টোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:, এর চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরিফিকেশন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপরেটিভস (কাককো) লি:, এর চেয়ারম্যান পংকজ গিলবার্ট কস্তা’সহ ঢাকা ক্রেডিট ও অন্যান্য সমবায়ের নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট তার অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “আজ আমি সত্যিই আনন্দিত ও উৎফুল্ল কারণ, আমরা নতুন একটা গির্জা পেয়েছি।”
একই সাথে তিনি রবিবার দিনে খ্রিষ্টভক্তদের গির্জায় যাবার অনুরোধ করে বলেন, “রবিবার দিন প্রভুর দিন, এই দিনটি আমাদের প্রভুর জন্য দেয়া উচিত।”
আগষ্টিন পিউরিফিকেশন তার বক্তৃতায়, এই গির্জা নির্মানে যারা যুক্ত ছিলেন বিশেষ করে বিশপ, ফাদার সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান। “আমরা নতুন নতুন ধর্মপল্লীতে ভাগ হয়েছি সত্যি কিন্তু আমাদের মধ্যে যেন একতা থাকে, আমরা যেন একে অপরের সহযোগীতায় এগিয়ে আসি।”
কাককোর চেয়ারম্যান পংকজ গিলবার্ট কস্তা বাইবেলের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা যেন আমাদের আয়ের দশমাংশ মন্ডলীতে দান করি।”
গীর্জা উদ্বোধনের বিশেষ খ্রিষ্টযাগের পরে ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ডমিনিক সেন্টূ রোজারিও গীর্জা নির্মান এবং এই অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত প্রত্যেককেই ধন্যবাদ জানান।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “গির্জা নির্মানে যেমন আপনারা এগিয়ে এসেছিলেন, আমার নিশ্চিৎ বিশ্বাস এ বৃহৎ গির্জা রক্ষণাবেক্ষণেও আপনাদের দায়িত্ব উদারভাবে বহন করে যাবেন।”
বাংলাদেশ কাথলিক ডিরেক্টরী-২০২৩ এর তথ্যানুযায়ি মাউসাইদ ধর্মপল্লীর খ্রীষ্টভক্তের সংখ্যা ৬২৫ জন।