শিরোনাম :
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের শোক দিবস পালন
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শোক দিবস পালন ও বিশেষ প্রার্থনা করেছে খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীরা।
সরকারি চাকুরীতের প্রবেশে চলমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য আন্দোলনের সময় নিহতদের স্মরণে ৩০ জুলাই, রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। এর অংশ হিসেবে আজ ঢাকার তেজগাঁও গির্জাসহ দেশে বিভিন্ন গির্জায় খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত হয়ে শোক পালন ও নিহতদের আত্মার কল্যাণে প্রার্থনা করে।
সকালে তেজগাঁও গির্জার প্রধান যাজক ফাদার জয়ন্ত এস. গমেজ এর পৌরহিত্যে খ্রীষ্টযাগে প্রথমেই স্মরণ করা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের। ফাদার গমেজ নিহতদের আত্মার চিরশান্তি, পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও আহতদের দ্রæত আরোগ্যলাভের জন্য প্রার্থনা করে বলেন, “চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমরা এখনোও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছি, যদিও পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে কিন্তু এখনো স্বাভাবিক হয়নি।”
তিনি বলেন,“আমাদের যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে তা আমরা এক সময় কাটিয় উঠতে পারবো কিন্তু যে মানুষগুলো প্রাণ হারিয়েছে তাদের কখনো ফিরে পাব না।”
৮ জুলাই থেকে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যমতে মারা গিয়েছে ১৫০ জন। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে গণমাধ্যমে ২৭ জুলাই পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হচ্ছে এই সংখ্যা ২৬৬ জন। গতকাল পর্যন্ত দৈনিক প্রথমআলো’তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় মৃতের সংখ্যা অন্তত ২১১ জন।
মৃতদের স্মরণে ২৯ জুলাই, মন্ত্রীসভায় জাতীয় শোক পালন, কালো ব্যাজ ধারণ ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিহতদের স্মরণে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজনের কথা বলা হয়।
তেজগাঁও গির্জায় বিশেষ প্রার্থনায় জাতীয় সংসদের সাংসদ অনিমা মুক্তি গমেজ, এমপি যোগ দিয়ে ডিসিনিউজবিডিকে বলেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের যে প্রাণগুলো ঝরে গেলো তাদের আত্মার চিরশান্তি কামনা করি এবং প্রার্থনা করি দেশে যেন আর একটা প্রাণও না ঝরে।”
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশের প্রেসিডেন্ট, খ্রীষ্টান কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও সচিব নির্মল রোজারিও দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা কামনা করে বলেন ডিসিনিউজকে বলেন, “দেশ যে উন্নয়নের গতিতে ছিল, আশা করি আমাদের সবার প্রচেষ্টায় আবার দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে।” এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি সকলের অংশগ্রহণ কামনা করেন।
শোক দিবস পালন ও নিহতদের স্মরণে বিশেষ প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কারিতাস এশিয়া’র প্রেসিডেন্ট বেনেডিক্ট আলো ডি’ রোজারিও, খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা জোনাস গমেজ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক থিওফিল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের পরিচালনা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সিস্টারগণ এবং সাধারণ খ্রীষ্টভক্তবৃন্দ।
আন্দোলনের পরে দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য ৫%, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য ১%, প্রতিবন্ধি ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের জন্য ১% কোটা ধার্য করে রায় দেয়। এর আগে সরকারি চাকুরীতে মোট ৫৬% কোটা বহাল ছিল।