শিরোনাম :
‘অপরাজেয় বাংলা’র রুপকার আব্দুল্লাহ খালিদের চিরবিদায়
চলে গেলেন ‘অপরাজেয় বাংলা’র ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ।
রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত পৌনে ১২টায় তিনি প্রাণত্যাগ করেন। তাঁর ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ জহির এ খবর নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে এই খ্যাতিমান ব্যক্তির বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
আব্দুল্লাহ খালিদ দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।
জহির গণমাধ্যমকে বলেন, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে নিজের শহর সিলেটে একটি সম্মাননা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে অবস্থার অবনতি হলে ২ মে তাকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে বারডেমে আনা হয়েছিল ১০ মে। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম প্রতীকে পরিণত হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনের ‘অপরাজেয় বাংলা’ ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনের ম্যুরাল ‘আবহমান বাংলা’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের টেরাকোটার ভাস্কর্যও তার তৈরি। তার কাজের মধ্যে রয়েছে ‘অঙ্কুর’, ‘অঙ্গীকার’, ‘ডলফিন’ এবং ‘মা ও শিশু’।
শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আব্দুল্লাহ খালিদ ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
সিলেট জেলা শহরে জন্ম নেওয়া আব্দুল্লাহ খালিদ ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্টস (এখনকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা) থেকে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে স্নাতক এবং পরে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্যে স্নাতকোত্তর করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে আব্দুল্লাহ খালিদের কর্মজীবনের শুরু। ১৯৭২ সালে সেখানকার প্রভাষক থাকাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর উদ্যোগে কলাভবনের সামনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ‘অপরাজেয় বাংলা’ নির্মাণের দায়িত্ব পান তিনি।
১৯৭৩ সাল থেকে ‘অপরাজেয় বাংলা’র নকশার কাজ শুরু করেন আব্দুল্লাহ খালিদ। ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৭৯ সালে ১৬ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয় ‘অপরাজেয় বাংলা’র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব স্তরের মানুষের অংশগ্রহণের ইতিহাস উঠে এসেছে এই ভাস্কর্যে।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
আরবি/আরপি/ ২১ মে, ২০১৭