শিরোনাম :
বনসাই চাষে, বনসাই প্রেমিকের সাফল্য
পড়ালেখায় বেশিদূর এগোতে না পারলেও জীবনে চলার পথে পিছন ফিরে কখনোও তাকাতে হয়নি পুলক জেংছামকে। দেখিয়েছেন পরিশ্রম কীভবে সাফল্যের চাবিকাঠি হয়।
সখের বসে বাড়ির আঙিনায় বনসাই চাষ করে এই উদ্যোমী মানুষটি এখন নামী একজন বনসাই চাষি। বনসাই প্রেমিকদের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করে বনসাই। আয়ও হচ্ছে খুব ভাল।
স্বপ্ন মানুষকে বাঁচতে শেখায়। পুলকও তেমনি স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে গেছেন। সংসারে ছিল দরিদ্রতার অভিশাপ, সেই অভিশাপ ঘুচলো বনসাই চাষের মাধ্যমে।
মধুপুর উপজেলার ইদিলপুর গ্রামের দুই সন্তানের জনক পুলক জেংছাম। ২০০৫ সালে ৫০ শতাংশ জমিতে ৭০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে বনসাই চাষের শুরু।
পুলক নিজের এবং বনসাইয়ের কথা বিস্তারিত জানান। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন সময়ে বনসাই চারা সংগ্রহ করতে চার-পাঁচ মাস সময় লেগে যায় বলে জানান পুলক। পরিত্যক্ত বিল্ডিং, ভাঙা ব্রিজ, খেজুর গাছ, তাল গাছ থেকে পঁচ শ চারা সংগ্রহ করে মাঝারি থেকে বড় সাইজের টপ ক্রয় করে তাতেই শুরু করেন বনসাই চাষ। এভাবেই শুরু হয়েছে বনসাইয়ের ভূবনে বিচরণ। হয়েছেন বনসাই প্রেমিক এবং বনসাই চাষি।
বনসাই প্রেমিক পুলক জানান, অনেক প্রজাতির বনসাই হতে পারে যেমন- কাঁঠালী বট, পাকুর বট, ডুমুর বট, অষদ বট, জারুল বট, হিজল বট, তেতুল বট, কামিনী ফুল বট, চায়না বট, জাম বট, শেওড়া বট, সিধুইরা বট (আঞ্চলিক শব্দ)সহ আরো অনেক ধরনে বনসাই।
এসব বটের মধ্যে পাকুর বটের চাহিদা বেশি। এই বনসাইগুলোর পরিপক্ক হতে ১০ থেকে ১৫ বছর সময় লেগে যায় বলে জানান পুলক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বনসাই পরিচর্যার পাশাপাশি সাথী ফসল হিসাবে লিচু, আম, লেবু গাছগুলো গভীর মিতালি করে বেড়ে উঠছে। এখান থেকেও আসে তার মুনাফা।
পুলক জানান, পাবনার রুহুল আমিন নামের এক বনসাই প্রেমিক পৌনে ছয় লাখ টাকার বনসাই চারা ক্রয় করেন। নিজের তৈরি এই বনসাই চারা বিক্রি করে নগদ মূল্য হাতে পেয়ে চাষি পুলকের চোখের সাফল্যের ঝিলিক। এছাড়াও খুচরা বিক্রি করেও প্রায় ৯ লাখ টাকা উপার্জন করেছেন।
পুলক বলেন, বনসাই পরিপক্ক চারা পাঁচ শর মতো রয়ে গেছে। এই চারাগুলো ১৫ থেকে ৪০ হাজার মূল্যে বিক্রি করা হবে।
তার সহযোগী বারেক বলেন, ‘আমি চার বছর ধরে কাজ করছি। দাদা তার নিজের চাইতে বনসাইকেই বেশি ভালবাসেন। প্রতিদিন সকাল-বিকাল কাচি হাতে নিয়ে ঘোরাফেরা করে থাকেন।
বনসাই প্রেমিক পুলক জানান, সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো সহযোগিতা এখনো পাননি। ভবিষ্যতে যদি অল্প সুদে ঋণ পাওয়া যায়, তাহলে আরো বড় করে বাণিজ্যিকভাবে বনসাই চাষ করার কথা বলেন।
আবহাওয়া বুঝে দিনে দুইবার পানি দিতে হবে। বছরে একবার মাটি পরিবর্তন করতে হবে (জুন মাস উপযুক্ত সময়)।
প্রস্তুত প্রণালী : (১) টপ সাইজমত (২) সাধারণ মাটি (৩) কম্পোজ সার।
আরবি/আরপি/২৯ মে, ২০১৭