শিরোনাম :
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের দুই দিনের মাদকবিরোধী অভিযান: সাইকেল র্যালি
শেষ হলো বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের দুই দিনের মাদকবিরোধী অভিযান।
“জীবনকে ভালবাসুন, মাদককে না বলুন” স্লোগানে ২৮-২৯ জুলাই, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের আয়জনে অনুষ্ঠিত হয় মাদকবিরোধী সাইক্লিং রেলি-২০১৭।
সাভার ধরেন্ডা থেকে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে মাউসাইদ-ভাদুন-মঠবাড়ী-ভাসানিয়া-নাগরী-চড়াখোলা-তুমিলিয়া-কালিগঞ্জ উপজেলা-রাঙ্গামাটিয়া-দড়িপাড়া গিয়ে শেষ হয় এই সাইকেল র্যালি।
র্যালি চলাকালীন সময়ে অংশগ্রহণকারীরা মাদকবিরোধী স্লোগান, লিফলেট বিতরণসহ মাদকবিরোধী গণসচেতনতামূলক বক্তব্য দেন এবং একটি করে জলপাই চারা রোপণ করেন।
আয়োজনের দ্বিতীয় দিন মঠবাড়িতে ঢাকা ক্রেডিট রিসোর্ট এন্ড ট্রেনিং সেন্টার থেকে মঠবাড়ি-ভাসানিয়া-নাগরী-চড়খোলা-তুমিলিয়া-কালিগঞ্জ উপজেলা-রাঙ্গামাটিয়া অঞ্চলগুলোতে সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয় ।
র্যালি শেষে দড়িপাড়ায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচী আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও বলেন, “বর্তমানে দেশে প্রায় ৭০ লক্ষ লোক মাদকাসক্ত এবং এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০২০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটিতে। আর প্রতি বছরই প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা মানুষ এই নেশার পেছনে খরচ করছে। একবার নেশার জগতে ঢুকলে, ফেরানো কষ্টকর, তাই সময় থাকতেই আমাদের সচেতন হওয়া চাই ”
এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই. কোড়াইয়া বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের অসুখ হলে চিকিৎসা করাই, কিন্তু মাদকে আসক্ত হলে আমরা তাদের দূরে সরিয়ে দেই। কিন্তু আমাদের উচিত তাদের ভালোবেসে গ্রহণ করা, আর সেই পথ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”
এ সময় গাজীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মো. গোলাম সবুর সময়পোযোগী এই মহৎ উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘৭০ লক্ষ মাদকাসক্ত ব্যক্তির সাথে জড়িয়ে আছে ৭০ লক্ষ পরিবার। তাই যারা মাদক বিক্রেতা তারা হুশিয়ার হয়ে যান।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেরা মাদক নিব না, আর অন্যকেও নিতে দিব না।’
র্যালিতে অংশগ্রহণকারী সাইক্লিস্ট জ্যারী আন্তনী গমেজ বলেন, “সত্যি আমরা আনন্দিত এই র্যালিতে অংশগ্রহণ করতে পেরে। আমরা নিজেরা অনেক কিছু শিখতে পারছি আর অন্যদেরও জানাতে পারছি। আমরা নিজেরাও বিরত থাকব, আর অন্যদেরও বিরত রাখবো এই মাদকের প্রভাব থেকে।”
ফাদার ভিনসেন্ট বিমল রোজারিও বলেন, “সত্যি এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। আর আপনাদের লাগানো এই জলপাই চারাটি একসময় বড় হবে। এটি হবে একটি জীবন বৃক্ষ, যা আপনাদের এই আন্দোলনের প্রতীক হয়ে থাকবে।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন দরিপাড়া ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত অমল ডি ক্রুশ, ফাদার ডেভিড গমেজ, কালীগঞ্জ থানার ওসি আলেক চাঁদ, ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড কর্মকর্তা রতন পিটার কোড়াইয়া, আনন্দ ফিলিপ পালমা, উইলসন রিবেরু, ক্রেডিট কমিটির সেক্রেটারি সজল যোসেফ গমেজসহ বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের কালীগঞ্জ শাখার সদস্যরা।
উল্লেখ্য মাদকবিরোধী এই অভিয়ান ২৮ জুলাই, সাভার ধরেন্ডা থেকে শুরু করা হয়।মাদকবিরোধী কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা ক্রেডিটসহ বিভিন্ন সমবায় সমিতি এবং সংগঠন। এদের মধ্যে সাভার ওয়াইএমসিএ, সাভার যুব সংঘ, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন সাভার ইউনিট, ধরেন্ডা তরুন সংঘ, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন উত্তরখান ইউনিট, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদসহ আরো অনেক সংগঠন।
আরবি/আরপি/৩০ জুলাই, ২০১৭