শিরোনাম :
মাদকের অভয়াশ্রম ‘ভোমরা’
সাতক্ষীরা শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ভোমরা বর্ডার। বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার পৃথক সীমান্ত।
এই সীমান্ত দিয়েও ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে আমদানী-রপ্তানী হয়ে আসছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা সদস্যের কথানুসারে, যেখানে দুই দেশের সীমান্ত মিশে, সেখানে চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে মাদকের অবৈধ্য প্রবেশ।
চোরাচালান এবং মাদক প্রবেশের অভয়াশ্রম এখন সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্ত। স্থানীয়রা দাবি করেন, বিভিন্ন অভিযানের কারণে আগের তুনলায় মাদক ও চোরাচালান কমলেও, এখনো অনেক ব্যবসায়ী মাদক পাচারের এসব সিন্ডিকেট চালিয়ে যাচ্ছে।
ডিসিনিউজের কথা হয় স্থানীয় দুইজন মাদক ব্যবসায়ীর সাথে (নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক)। মাদক পাচারের বিষয়ে তারা বিস্তারিত জানান ।
তাদের ভাষ্য মতে, “আগে যে পরিমান মাদক ব্যবসা ছিল এই সীমান্তে, বিভিন্ন অভিযানের কারণে এখন আর আগের মতো নেই, বেশ কমে গেছে। কিন্তু বিভিন্ন কায়দা-কৌশলে এই ব্যবসা এখনো চলছে।
তাদের কাছে মাদক কীভাবে পৌঁছায় বা কারা দেয়, এই সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘ইন্ডিয়াতে আমাদের লোক আছে, তাদের মাধ্যমে বংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত মাল আসে এবং সেখান থেকে আমাদের লোক ওগুলো নিয়ে আসে। তাছাড়া বর্ডারের আশপাশের বসবাসকারী অনেক লোক এই কাজের সাথে জড়িত থাকে। তাদের সাহায্য ছাড়া এই কাজ সম্ভব হয় না।’
এই কাজটা গভীর রাতে হয় বলে জনান দুই মাদক ব্যবসায়ী। তারা জানান, ‘এক সময় সাতক্ষীরা আলিপুরে এ ব্যবসা ব্যাপক হারে হত এবং বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকাসক্তরা এসে মাদক সেবন করতো, তবে সেখানে এখন এই ব্যবসা কম হচ্ছে।’ তারা আরো জানান, এই মাদক চক্র শুধু আলিপুর ব্যবসা করছে না, তারা বিভিন্ন শহরে মাদক পৌঁছে দিচ্ছে।
তারা বলেন, ‘শুধু আমরা না, আমাদের মতো অনেক এবং আমাদের থেকে আরো বড় ব্যবসায়ী ও ক্ষমতাধররা এই সিন্ডিকেট চালিয়ে থাকে। বড় কারা এবং কোন ক্ষমতাধররা এর সাথে জড়িত জানতে চাইলে তারা এড়িয়ে যান।
কী কী মাদক ইন্ডিয়া থেকে আনে, জানতে চাইলে তারা জানান, “আমরা ফেন্সিডিল, মদ এবং ইয়াবা বেশি এনে থাকি। এই কাজ করতে গিয়ে আমরা আগে কয়েকবার জেল খেটেছি। তারপরও এই ব্যবসা ছাড়তে পরছি না।’
মাদকের ব্যবসায় যেমন ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি অনেক লাভ আছে বলে জানান এই মাদক ব্যবসায়ীরা।
এই বিষয়ে ডিসিনিউজ সাতক্ষীরা থানার ওসি আবদুল হাসেমের (তদন্ত) সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “মাদক নিয়ে চলতি মাসে ৫০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। আর মাদক পুরোপুরি সাতক্ষীরা থেকে একেবারে নির্মূল করা সম্ভব নয়। কারণ, বংলাদেশে মাদক উৎপাদন হয় না, যা মাদক আসে, তা সব বাইরে থেকেই বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ জন্য সীমান্তরক্ষীদের আরো সতর্ক ও কঠোর হতে হবে। কারণ, সীমান্ত দিয়েই মাদক বংলাদেশে প্রবেশ করছে ।
ওসি আবদুল হাসেম জানান, ‘আমাদের তো সীমান্ত রক্ষা করার কাজ না, আমাদের কাজ মাদক কারা সেবন করছে তাদের ধরা এবং কারা এই মাদক নিয়ে ব্যবসা করছে তাদের ধরা।’
ডিসিনিউজ/আরবি/আরপি/৩ আগস্ট, ২০১৭