শিরোনাম :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান
নতুন করে ঢাবির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেলেন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসা অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
কোনো রকম নির্বাচন ছাড়াই উপাচার্য প্যানেল চূড়ান্ত করা নিয়ে সমালোচনা এবং কয়েকজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটের করা মামলায় ওই প্যানেলের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ার এক মাসের মাথায় সরকারের তরফ থেকে এ সিদ্ধান্ত এল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিধি অনুযায়ী তিনি পদসংশ্লিষ্ট সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। রাষ্ট্রপতি মনে করলে যেকোনো সময় তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারবেন।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও কলা অনুষদে ডিনের দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে ২০১৬ সালের ২২ জুন উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার।
১৯৬৪ সালের ১ জুলাই জন্ম নেওয়া আখতারুজ্জামান বরগুনার কালমেঘা মুসলিম হাই স্কুল ও বরগুনা সরকারি কলেজে লেখাপড়ার পর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ১৯৯০ সালে তিনি প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে।
এই ফুলব্রাইট স্কলার পিএইচডি করেন ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০৪ সালে তিনি অধ্যাপক হন।
আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের প্যানেল থেকে ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ মেয়াদে তিন দফা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আখতারুজ্জামান।
সে সময় সমিতির সভাপতি ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, যাকে ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি উপাচার্য হিসেবে সাময়িক নিয়োগ দেওয়া হয়।
নির্বাচন ছাড়াই সাড়ে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালের ২৪ অগাস্ট সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের মাধ্যমে আরও চার বছরের জন্য নিয়োগ পান অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক। তার সেই মেয়াদ শেষ হয় গত ২৪ অাগস্ট।
তার মেয়াদ পূর্তির আগে আগে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্ধারণ বা নির্বাচন না করেই ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সভা ডাকা হলে তাতে আপত্তি জানিয়ে আদালতে রিট আবেদন করেন ১৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট।
ওই আবেদনে হাই কোর্ট সিনেট সভা স্থগিত করে রুল দিলেও চেম্বার আদালতে হাই কোর্টের আদেশ আটকে যায়।
এরপর গত ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ভবনে সিনেটের সভা বসে।বিএনপি পন্থি সমর্থকদের বর্জন, সরকার সমর্থকদের একাংশের আপত্তি এবং শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে ওই সভায় ভোট ছাড়াই উপাচার্য প্যানেল চূড়ান্ত করা হয়।
বিকল্প কোনো প্রস্তাব সভায় না আসায় অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও নীল দলের আহ্বায়ক আবদুল আজিজকে নিয়ে তিন সদস্যের প্যানেলই সিনেটের অনুমোদন পায়।
নিয়ম অনুযায়ী ওই তিনজনের মধ্য থেকেই একজনকে পরবর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রপতির। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত ৩ অগাস্ট সিনেটে মনোনীত ওই প্যানেলের পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়।
রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্ধারণ না করেই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য সিনেটের বিশেষ সভা ডাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্ট যে রুল দিয়েছিল, তা চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলে আপিল বিভাগ।
সেই আদেশে বলা হয়, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকই উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
এ বিষয়ে আগামী ৩ অক্টোবর হাই কোর্টে শুনানির দিন নির্ধারিত রয়েছে। তার আগেই ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশের ১১ (২) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্যানেলের বাইরে থেকে অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে উপাচার্যের দায়িত্ব দিলেন।
আরবি/আরপি/৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭