শিরোনাম :
‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, জুলহাস কেন পিছিয়ে থাকবে’
ভাই কেমন আছেন, জিজ্ঞেস করতেই সরল হাসি দিয়ে বললেন, ভালো। চোখে চশমা, ইন করা পরিপাটি পোশাক। স্মার্ট ব্যবহারের সাথে গলায় ঝুলছে ম্যাচ করা টাই। অনেক মানুষের ভিরে ব্যস্ত হাতে একের পর এক ঝলক দিয়ে বানিয়ে যাচ্ছে মজাদার ঝালমুড়ি।
কথা হচ্ছিলো জুলহাস হাওলাদারের (৩৪) বিষয়ে, যিনি পেশায় একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতা।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে তিনিও পিছিয়ে নেই কোনো অংশে। নিজের ব্যবসাটাকেও তাই পরিচালনা করছেন অন্যভাবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সমাজকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন কোনো কাজকেই ছোট মনে করা উচিত নয়।
পরনে আয়রন করা ফুল হাতা শার্ট ও ফুল প্যান্ট। পরিপাটিভাবে ইন করে, পায়ে কালো জুতা, হাতে ঘড়ি আর গলায় টাই পরে ঠিক কর্পোরেট অফিসারের মতো নিজেকে উপস্থাপন করেন নিজেকে। আর এভাবেই তিনি তার ঝালমুড়ি বিক্রি করে থাকেন। শার্ট প্যান্টের পরিবর্তনও থাকে প্রতিনিয়ত।
তার এমন অভিনব কায়দায় ঝালমুড়ি বিক্রির কারণ জানতে চাইলে জোর গলায় জানিয়ে দিলেন ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে জুলহাস কেন পিছিয়ে থাকবে।’
তবে পরের প্রশ্নটা করেছিলাম একটু ঘুরিয়ে, ঝালমুড়ি কেন অন্য কিছুও তো বিক্রি করতে পারতেন? সহজ করে বুঝিয়ে বললেন ‘অসলে মুড়িটা গরিব ধনী সবাই পছন্দ করে।’
ঢাকার শাহাবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনেই তাকে দেখা যায়। দীর্ঘ ৫ বছর তিনি এখানেই তার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রায় ১৪০০-১৫০০ টাকার ঝালমুড়ি বিক্রি করেন তিনি। সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকেই মিলবে তার এই ঝালমুড়ি। তবে সর্বোচ্চটা ছেড়ে দিয়েছেন ক্রেতার চাহিদার অনুযায়ী।
স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ জুলহাসের ছোট পরিবার। নিজে পড়াশুনার সুযোগ না পেলেও সন্তানদের ভর্তি করিয়েছেন স্কুলে। স্বপ্ন দেখেন ছেলেমেয়ে শিক্ষিত হয়ে সমাজের এক জন সম্মানী মানুষ হবে। তবে কোনো কাজকে কেউ যেন ছোট করে না দেখে, সেই দাবি জুলহাস জানিয়েছেন সকলের কাছে॥
আরবি/আরপি/২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭