শিরোনাম :
বাংলাদেশে পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফরকে সকলেই বিশেষ আশির্বাদ হিসেবে দেখছে। তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে সকল মানুষের মধ্যে রয়েছে অনেক কৌতুহল এবং প্রতিক্রিয়া। ডিসিনিউজ ধারাবাহিকভাবে পোপ ফ্রান্সিসের সফরকে নিয়ে প্রতিবেদন করে চলেছে। এবারের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন ‘কারিতাস টেকনিক্যাল স্কুল প্রজেক্টের’ প্রজেক্ট ম্যানেজার ডমিনিক দিলু পিরিছ। প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন ডিসিনিউজের সিনিয়র রিপোর্টার রবীন ভাবুক।
প্রজেক্ট ম্যানেজর পিরিছের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফর নিয়ে বাংলাদেশের খ্রিষ্টান এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে কেমন ধরনের প্রতিক্রিয়া’। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কাথলিক ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরুর আগমন বার্তা নিয়ে খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সর্বোত্রই পোপ ফ্রান্সিসকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তাঁকে বরণ করার জন্য চলছে নানা ধরণের আয়োজন। সাড়া দেশেই পোপের জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া পোপকে কীভাবে সামনা সামনি দেখা যাবে তার প্রচেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে পোপ মহোদয় খিষ্টযাগ উৎসর্গ করবেন সেখানে অংশগ্রহণ করার জন্য দেশের সকল প্যারিশ হতে খ্রিষ্টভক্তগণ কূপন সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। পোপ বাংলাদেশে আসবেন আলোচনা উঠলেই পোপ দ্বিতীয় জন পল ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন সেই স্মৃতি রোমন্থন করেন।
তবে তিনি একটি বিষয়ে মত দিয়ে বলেন, এখনও পোপের আগমন নিয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা হয়নি বিধায় অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তেমন ধরণের প্রতিক্রিয়া অনুভূত হয়নি। তবে যারা শুনছেন বা ইতোমধ্যে শুনেছেন তারাও পোপের আগমনকে ইতিবাচক ভাবেই দেখছেন।
পোপ ফ্রান্সিসের সফরকে তিনি কীভাবে নিচ্ছেন এ বিষয়ে তিনি জানান, পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশে আসবেন এটা আমাদের জন্য একটা বড় পাওয়া। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে পোপ দ্বিতীয় জন পল এসেছিলেন এবং আর্মি স্টেডিয়ামে খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেছিলেন সে স্মৃতি এখনও স্পষ্ট মনে আছে। এখন ভাবছি আমার জীবৎদ্দশায় হয়তো পোপ বাংলাদেশে আসবেন কিনা। পোপের আগমন উপলক্ষে বিভিন্ন প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয়েছে। আমিও একটি কমিটিতে কাজ করছি এবং গর্ব অনুভব করছি। তাঁর সফরে আমার প্রধান অনুভূতি হলো এতে খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের বিশ্বাস আরও শক্তিশালী ও দৃঢ় হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, সারা বিশ্বের দৃষ্টি থাকবে বাংলাদেশের দিকে। এতে করে সবার মধ্যে খ্রিষ্টানদের এবং খ্রিষ্টের প্রচার প্রসারিত হবে।
‘পোপের আগমনে বাংলাদেশে শান্তির/ খ্রিষ্টের বাণী প্রচারের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে। এছাড়া আন্তঃধর্মীয় সংলাপের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। কারণ আমরা শুধু রাজনৈতিকভাবে বলছি এ দেশ সামজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। পোপের আগমন এবং আলোচনা সত্যি সত্যি ধর্মীয় ও আন্তঃধর্মীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে’ বলেন প্রজেক্ট ম্যানেজার পিরিছ।
শুধু তাই নয়, ‘পোপ মহোদয় যে সকল কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করবেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিক হলো যুবক-যুবতীদের সাথে মতবিনিময়। দেশের যুবশক্তিই পারে একটা পরিবর্তন আনতে। এই সমস্যা সংকুল দেশে তাঁর বাণী সহভাগিতা যুবাদের সঠিক পথ চালনায় সহায়ক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যুবাদের ধর্মবিমূখতা হতে আধ্যাত্মিক উপলদ্ধি বাড়বে। এক কথায় বললে, পোপ মহোদয় যুবক যবতীদের সাথে মিলিত হতে চান এই খবরটিই যুবাদের খ্রিষ্টবিশ্বাস বিস্তারে সহায়ক হবে’ বলে মনে করেন প্রজেক্ট ম্যানেজার পিরিছ।
ব্যক্তিগতভাবে তিনি জানান, ‘আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা পোপ মহোদয়কে আমাদের মাঝে পাচ্ছি। এজন্য আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশে তাঁর যে সফরসূচী তাতে তিনি প্রায় সকল পর্যায়ের মানুষের সাথে সভাতে মিলিত হবেন। সফরের সময় কম বিধায় আমাদের কিছু করণীয় নেই। সভাগুলোর জন্য খুবই কম সময় রাখা হয়েছে। তবে তিনি আরো বেশি সময় নিয়ে আসলে বিভিন্ন ডায়োসিস ঘুরে দেখতে পারতেন। এতে সমগ্র জাতির মধ্যে তাঁকে নিয়ে আলোচনা হত। বিশ্বাস বিস্তারের কাজেও ব্যাপক প্রভাব প্রভাব পড়তো।
আরবি/আরপি/২২ অক্টোবর, ২০১৭