শিরোনাম :
শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আসছেন পোপ ফ্রান্সিস
খ্রিষ্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ। এবার নিয়ে তৃতীয় বারের মতো কোনো পোপ বাংলাদেশ সফর করছেন। তা নিয়ে দেশের সকল মানুষের মাঝেই তৈরী হয়েছে নতুন এক উদ্দীপনা, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই অপেক্ষায় তার আগমনের।
মিয়ানমার সফরের পরই ৩০ নভেম্বর বিকেল ৩টায় তিনি ঢাকার বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তিন দিনের সফর শেষে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
পোপের সফর নিয়ে ডিসিনিউজের কথা হয় বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক বড়–য়ার সাথে। তিনি বলেন, পোপ ফ্রন্সিস একজন শান্তির দূত, মানবতার ধারক ও বাহক। তার বাংলাদেশে আগমন সত্যিই এক আনন্দের সংবাদ।
পোপের আগমনের মধ্য দিয়ে এদেশে নতুন শান্তি ও সম্প্রীতি সৃষ্টি হবে বলেও তিনি মনে করেন। এছাড়াও বাংলাদেশে চলমান রোহিঙ্গা সমস্যা তার আগমনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের নজর কাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।
এদিকে পোপের সফরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার কমতি নেই কোন অংশে।
বাইতুল মুকারম জামে মসজিদের ঈমাম ও খতীব মুফতী আইনুল ইসলাম কান্দলবী বলেন, “শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রেখে আমরা যেন যার যার ধর্মস্বাধীন ভাবে পালন করতে পারি, পোপের আগমনের মাধ্যমে সে পথ আরো সুপ্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমি আশা করি”। এছাড়াও পোপ সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের আন্তর্জাতিক আহবান জানাবেন বলেও তিনি প্রত্যাশা করেন।
তবে পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশে আগমনকে এদেশের খ্রীষ্টমন্ডলির আশির্বাদ বলে মনে করেন ঢাকার সহকারী বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ খ্রিষ্টমন্ডলী অতি ক্ষুদ্র হওয়া সত্তেও পোপের বাংলাদেশ সফর এ দেশের খ্রিষ্টমন্ডলীর বিশ্বাসের ভিত্তি আরো শক্ত করবে। এছাড়াও তার আগমন এ দেশের আন্তধর্মীয় সম্পর্ককে আরো জোড়ালো করবে বলে তিনি মনে করেন।
পোপ ফ্রান্সিস ৩০ নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩টায় মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিমানবন্দরে পোপকে স্বাগত জানাবেন। বিমানবন্দরে তাঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন তিনি। এরপর ধানমন্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন পোপ। সেখান থেকে যাবেন বঙ্গভবনে।
পোপ ফ্রান্সিসের সফরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব হলো সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের প্রার্থনা সভা। শুক্রবার সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্রিস্টধর্মীয় উপাসনা ও যাজকদের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পোপ ফ্রান্সিস। সেখানে ৮০ হাজার পুণ্যার্থী যোগ দেবেন। বাঁশ, কাঠ আর ছনের তৈরি ৮০ ফুট বাই ৫০ ফুটের কুঁড়েঘরের আদলে নির্মিত মঞ্চে বসে পোপ ভক্তদের নিয়ে প্রার্থনা করবেন। তিনি প্রার্থনায় শান্তি ও সম্প্রীতির ওপর জোর দেবেন। বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে ঢাকায় ভ্যাটিকান দূতাবাসে যাবেন তিনি। সেখানে পোপের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাত্ করবেন। বিকাল ৪টায় কাকরাইলে রমনা ক্যাথেড্রাল পরিদর্শন করবেন তিনি। এরপর প্রবীণ যাজক ভবনে বাংলাদেশের বিশপদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করবেন এবং বক্তব্য রাখবেন। বিকাল ৫টায় কাকরাইলের আর্চ বিপশ হাউজের মাঠে শান্তির জন্য আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমাণ্ডলিক সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন পোপ।
শনিবার সকাল ১০টায় তেজগাঁও মাদার তেরেজা ভবন পরিদর্শন করবেন পোপ ফ্রান্সিস। সেখানে তেজগাঁও গির্জার যাজক, ব্রাদার-সিস্টার, সেমিনারিয়ান ও নবিশদের সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এরপর তেজগাঁও সমাধিস্থল ও পুরনো গির্জা পরিদর্শন করবেন। বিকাল তিনটায় রাজধানীর নটর ডেম কলেজে যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। এদিনই বিকাল ৫টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থেকে রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন পোপ ফ্রান্সিস।
আরবি/আরপি/৩০ নভেম্বর, ২০১৭